‘আধ্যাত্মিকতা’: কোন দেশের কী অবস্থান
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংস্থা ওয়েফেয়ারার ট্র্যাভেল সবচেয়ে ‘আধ্যাত্মিক’ দেশগুলোর একটি তালিকা করেছে৷ ধর্মীয় বিশ্বাস, বৈচিত্র্য, স্বাধীনতা, জনকল্যাণ ও জীবনমান নিয়ে করা এই তালিকায় কোন দেশের কী অবস্থান তা জানতে দেখুন এই ছবিঘর...
ক্যানাডা
গ্লোবাল স্পিরিচুয়ালিটি ইনডেক্স-এ ধর্মীয় আচার মেনে চলা মানুষের সংখ্যার দিক দিয়ে খুব কম নম্বর (৭-এ ২) পেয়েছে ক্যানাডা৷ তবে ধর্মে বৈচিত্র্য ও জীবনযাপনের মানের বিচারে সর্বোচ্চ ৭ নম্বর এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা, সহনশীলতা, স্থাপনা ও জনকল্যাণে ৬ নম্বর করে নিয়ে ৪৯ এর মধ্যে ৪০ নম্বর পেয়ে তালিকায় প্রথম স্থানে এসেছে দেশটি৷
ইটালি
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থান ভ্যাটিকানের অবস্থান ইটালির রাজধানী রোমে৷ দেশটির অন্যান্য শহরজুড়েও রয়েছে নানা ধর্মীয় স্থাপনা৷ বিভিন্ন ধর্ম-মতের মানুষের সংখ্যা (৭ এ ৭ নম্বর), ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জীবনমানসহ (৬ নম্বর) অন্যান্য বিচারে পাওয়া নম্বরের সুবাদে তালিকায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে ইউরোপের এই দেশটি৷
ভারত
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র ভারতই এই তালিকার সেরা পাঁচে স্থান পেয়েছে৷ প্রচলিত ধর্মমত ছাড়াও বিভিন্ন গুরুর ভক্তকুল রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশে৷ ধর্মমতের বৈচিত্র্য এবং উপাসনাস্থলের সংখ্যা বিচারে এগিয়ে ৩৪ নম্বর নিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আধ্যাত্মিক দেশগুলোর মধ্যে তিন নম্বরে এসেছে তারা৷
জাপান
বৌদ্ধপ্রধান জাপানে অন্যান্য ধর্মমতের মানুষও রয়েছে৷ এশিয়ার অন্যতম সমৃদ্ধ দেশটিতে মানুষের জীবনমানও উন্নত৷ ধর্ম বিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা (১ নম্বর) ও ধর্মীয় স্থাপনার (২) দিকে খুব খারাপ হলেও জীবনমানে সর্বোচ্চ ৭ নম্বর নিয়ে তাদের মোট নম্বরও হয়েছে ভারতের সমান ৩৪৷ তালিকায় চার নম্বরে রয়েছে দেশটি৷
যুক্তরাজ্য
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পতন ঘটলেও বিশ্বের বহু ধর্ম-বর্ণের মানুষের সহাবস্থান রয়েছে যুক্তরাজ্যে৷ ধর্মীয় সহনশীলতার দিক থেকেও অনেক এগিয়ে দেশটি৷ সেখানে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মুসলিম-হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মের মানুষও তাঁদের আচার-অনুষ্ঠান পালন করছে৷ ধর্ম-বিশ্বাসীর সংখ্যার দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ পেলেও উন্নত জীবনের কল্যাণে তালিকায় পাঁচ নম্বরে রয়েছে যুক্তরাজ্য৷
যুক্তরাষ্ট্র
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে ওঠা যুক্তরাষ্ট্রেও বহু দেশের নানা ধর্মমতের মানুষের সম্মিলন ঘটেছে৷ শিল্প, অর্থনীতি, গবেষণা ও প্রযুক্তিসহ নানা দিক দিয়ে এগিয়ে থাকা দেশটিতে ব্যক্তি স্বাধীনতা উপভোগের সুযোগও রয়েছে প্রশংসনীয় মাত্রায়৷ ধর্ম বিশ্বাসীর সংখ্যার বিচারে পিছিয়ে থাকলেও ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও কল্যাণের ওপর ভর করে তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে তারা৷
জার্মানি
এই তালিকায় যৌথভাবে দশম অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দুই দেশ জার্মানি ও সুইজারল্যান্ড, তাদের নম্বর ৩১৷ সংখ্যাগুরু খ্রিস্টান ধর্মালম্বীদের পাশাপাশি অন্যান্য ধর্মমতের মানুষও এখানে তাদের ধর্ম পালন করতে পারছে৷ দুই দেশেই ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যা কম হলেও জীবনমানের দিক দিয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে তারা৷ তালিকায় সপ্তম, অষ্টম ও নবম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে মেক্সিকো, অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইন্স৷
সৌদি আরব
মুসলমানদের সবচেয়ে পবিত্র ভূমি মক্কা ও মদিনায় প্রতি বছর হজ করতে যান লাখ লাখ মানুষ৷ তারপরেও সৌদি আরবের নম্বর ২৭ এবং তালিকায় অবস্থান হয়েছে ২৩তম৷ ধর্মীয় স্বাধীনতা ও জনকল্যাণের দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ নম্বর পেয়েছে দেশটি৷
পাকিস্তান
দক্ষিণ এশিয়ার আরেক বড় দেশ পাকিস্তানের অবস্থান তালিকায় ৯১তম৷ মুসলিম প্রধান দেশটির মোট নম্বর হয়েছে ১৮৷ ধর্ম বিশ্বাসীদের দিক দিয়ে ৭ এর মধ্যে ৫ নম্বর পেয়েছে দেশটি, তবে ধর্মীয় স্বাধীনতার দিক দিয়ে জুটেছে সর্বনিম্ন ১ নম্বর৷ ধর্মীয় সহনশীলতায় মাত্র ২ পয়েন্ট পেয়েছে তারা৷ আর আধ্যাত্মিক স্থাপনা ও জনকল্যাণে সর্বনিম্ন ১ করে এবং জীবনমানের দিক দিয়ে ২ পেয়েছে তারা৷
বাংলাদেশ
বিভিন্ন ধর্মমত ও ধর্মবিশ্বাসীর সংখ্যার দিক দিয়ে ভালো অবস্থানে থাকলেও (৬ নম্বর করে) ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সহশীলতার দিক দিয়ে অবস্থা খুব একটা ভালো নয় (৭ এর মধ্যে ২)৷ আর জীবনমান, জনকল্যাণ ও ধর্মীয় স্থাপনার দিক দিয়ে সর্বনিম্ন ১ নম্বর করে নিয়ে ১৯ নম্বর পেয়েছে বাংলাদেশ৷ তাই তালিকায় অবস্থান ৮৩তম৷
সিরিয়া
তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে রয়েছে কয়েক বছর ধরে যুদ্ধকবলিত মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়া৷ তাদের সবচেয়ে বেশি নম্বর এসেছে ধর্মবিশ্বাসীর দিক দিয়ে ৭-এ ৫৷ এছাড়া ধর্মীয় বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে পেয়েছে ২৷ জীবনমানসহ বাকি দিকগুলোতে সর্বনিম্ন ১ করে নিয়ে তাদের মোট নম্বর হয়েছে ১২৷