1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আপাতত রেহাই পেলেন জার্মানির গোয়েন্দা প্রধান

১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

প্রবল চাপ সত্ত্বেও জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আপাতত নিজের পদেই থেকে গেলেন৷ কিন্তু সরাসরি চ্যান্সেলর ম্যার্কেলকে চ্যালেঞ্জ করায় জার্মানির রাজনীতি জগত এখনো শান্ত হতে পারছে না৷

https://p.dw.com/p/34mzj
জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হান্স গেয়র্গ মাসেনছবি: picture-alliance/AP/M. Sohn

যে কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থা সাধারণত লোকচক্ষুর আড়ালে কাজ করে৷ প্রকাশ্যে তাদের কার্যকলাপ তেমন চোখে পড়ে না৷ সংস্থার প্রধানরাও সরকারের নির্দিষ্ট কিছু শীর্ষ ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেন৷ জনসাধারণকে কিছু জানানোর থাকলে তাঁরাই সেই কাজ করেন৷ জার্মানির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার কার্যকলাপের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তুলনামূলকভাবে অনেকটা স্বচ্ছ৷ সরকার ছাড়াও সংসদ সদস্যরা তাদের কার্যকলাপের উপর নজর রাখেন৷ অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার রাজ্য শাখার সঙ্গে রাজ্য সরকারও যোগাযোগ রেখে চলে৷

সম্প্রতি পূর্বাঞ্চলের কেমনিৎস শহরে চরম দক্ষিণপন্থি একাধিক শক্তির তাণ্ডবের পর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল কড়া ভাষায় সেই ঘটনার নিন্দা করেছিলেন৷ বিশেষ করে দুটি ভিডিওতে বিদেশিদের তাড়া করার দৃশ্য দেখে তিনি বলেছিলেন, এমন আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়৷ কিন্তু সংবাদপত্রের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান হান্স গেয়র্গ মাসেন সেই ভিডিও নিয়ে গভীর সংশয় প্রকাশ করে কার্যত চ্যান্সেলরের বক্তব্যের বিরোধিতা করেন৷ প্রবল চাপ ও সমালোচনার মুখে তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দেন এবং বুধবার সংসদে দুটি কমিটির সামনে বক্তব্য রাখেন৷ তিনি বলেন, কেমনিৎসের ঘটনার যে দুটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, সেগুলির সত্যতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেননি৷ তিনি শুধু টুইট বার্তার ভাষা নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন৷ ‘বিদেশিদের শিকার’ শব্দচয়নের মাধ্যমে উত্তেজনা বাড়ানোর প্রচেষ্টা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি৷

নিজের আচরণের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না করেও মাসেন এ যাত্রায় রক্ষা পেলেন৷ প্রবল রাজনৈতিক চাপ সত্ত্বেও তাঁকে তাঁর পদ খোয়াতে হলো না৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট সেহোফার প্রকাশ্যে তাঁর প্রতি আস্থা প্রকাশ করলেন৷ সরকারের প্রধান শরিক ইউনিয়ন শিবির ও বিরোধী উদারপন্থি দল তাঁর প্রতি সমর্থন জানিয়ে আপাতত বিষয়টির নিষ্পত্তি করলেন৷ কিন্তু সরকার ও বিরোধী পক্ষের অনেক রাজনীতিক তাঁর বর্তমান ও অতীতের কিছু মন্তব্যের কারণে এখনো ক্ষুব্ধ৷ এমনকি তিনি চরম দক্ষিণপন্থিদের প্রতি সহানুভূতিশীল, এমন অভিযোগও উঠছে৷ অনেকের মতে, তাঁর নেতৃত্বে সংস্থার ভাবমূর্তির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে৷ বুধবার প্রকাশিত এক জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী প্রায় ৫৮ শতাংশ মানুষ অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি আস্থা রাখতে পারছেন না৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকারি জোটের মধ্যেও চিড় ধরেছে৷ তাছাড়া খোদ চ্যান্সেলর ম্যার্কেলের কর্তৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন উঠছে৷ বুধবার ম্যার্কেল সংসদে আবার স্পষ্ট ভাষায় কেমনিৎস শহরের ঘটনাবলির কড়া নিন্দা করেন৷ তবে বাভেরিয়া ও হেসে রাজ্যে আসন্ন নির্বাচনের আগে তিনি কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ বিশেষ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেহোফারের সঙ্গে তাঁর বেড়ে চলা সংঘাতের প্রেক্ষিতে বাভেরিয়ার নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চান তিনি৷ জনমত সমীক্ষা অনুযায়ী, সেহোফারের সিএসইউ দল বিশাল মাত্রায় সমর্থন হারাতে চলেছে৷ এমন ফলাফলের পর তাঁর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে৷ তাছাড়া মাসেনকে বরাখাস্ত করলে চরম দক্ষিণপন্থি এএফডি দল তাঁকে ‘শহিদ' করে তুলে নির্বাচনি ফায়দা তুলতে পারে৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)