1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগান পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুললেন নারীরা

১৭ আগস্ট ২০২১

আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়ানোর আর্জি মালালার। তালেবান মেরে ফেলবে, বলছেন পার্লামেন্টের সদস্য। দেশ ছাড়তে চাই না, লিখলেন বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক।

https://p.dw.com/p/3z4IC
মালালা
ছবি: Miguel Schincariol/AFP/Getty Images

আফগান শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের কাছে খোলা চিঠি দিলেন নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই। সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মালালা বলেছেন, গোটা বিশ্বের কাছে তার একটিই আবেদন-- সাধারণ আফগান মানুষের পাশে দাঁড়ান। অন্যদিকে আফগানের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজের ভয়ের কথা জানিয়েছেন দেশের নারী সাংসদ ফারজানা কোচাই। জুম ইন্টারভিউতে সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, প্রাণের ভয় পাচ্ছেন। তার স্পষ্ট বক্তব্য, প্রাথমিকভাবে তিনি প্রাণের ভয় পাচ্ছেন। নারী স্বাধীনতার বিষয়টি তার পরে আসে। বিশ্বের দরবারে খোলা বার্তা দিয়েছেন আফগান নারী চিত্র পরিচালক সাহরা করিমি। ইনস্টাগ্রামের সেই ভিডিও-তে তাকে কাঁদতে দেখা গেছে। ভিডিও-তে তিনি কাবুলে কীভাবে বন্দুক হাতে তালেবান ঢুকছে তার ক্লিপ শেয়ার করে বলেছেন, 'কোনো ভয়ের ছবি নয়, এটাই এখন কাবুলের বাস্তব চিত্র।' ফারহানা অবশ্য জানিয়েছেন, যতক্ষণ প্রাণ আছে, তিনি দেশ ছেড়ে কোথাও যাবেন না। দেশকে 'পরিত্যাগ' করতে চান না তিনি।

মালালা অবশ্য আফগানিস্তানের নাগরিক নন। পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে এক গ্রামে থাকতেন তিনি। সেখানে মেয়েদের পড়াশোনার অধিকার নিয়ে বিবিসি-তে সরব হয়েছিলেন মালালা। এরপরেই তালেবান তার উপর আক্রমণ চালায়। গুলিবিদ্ধ মালালার চিকিৎসা চলেছে বহুদিন। এখন তিনি যুক্তরাজ্যে থাকেন। সেখানে বসেই ভিডিও আপলোড করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, ইমরান খানের কাছে খোলা চিঠি লেখার কথা।

মালালা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আরো সাহসী হতে পারেন। আফগানিস্তানের সাধারণ মানুষের কথা ভেবে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আফগানিস্তানের অসহায় মানুষ বিশ্বের দিকে তাকিয়ে আছে। মালালার মূলত চিন্তা প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানের নারী এবং শিশুদের নিয়ে। বলেছেন, ''নারী এবং ছোট ছোট মেয়েদের নিয়ে চিন্তা আছি। সে দেশের কিছু সমাজকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারাও চিন্তায় আছেন।'' ইমরান খানকে তিনি লিখেছেন, আফগান শরণার্থীদের যেন পাকিস্তানে জায়গা দেওয়া হয়। শিশুরা যেন শিক্ষার সুযোগ পায়।

সাংসদ ফারজানা কোচাই জানিয়েছেন, এতদিন ধরে আফগানিস্তানের মেয়েদের শিক্ষার জন্য তিনি লড়াই করেছেন। মানবাধিকারের জন্য লড়াই করেছেন। তালেবান তার কাজ যে ভালো চোখে দেখবে না, তা তিনি জানেন। এবং সে কারণেই প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা করছেন তিনি। উত্তর আফগানিস্তানের বাসিন্দা ২৯ বছরের কোচাই দীর্ঘদিন সেখানকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে ঢুকে নারী অধিকার এবং নারী শিক্ষার কাজ করেছেন। কোচাইয়ের ভয়, সেই সমস্ত কাজ এবার জলে চলে যাবে। আফগানিস্তানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত যে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়েছিল, তা ফিরে আসবে। নারীদের বাড়িতে আটকে থাকতে হবে। পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে যাওয়ার অনুমতি মিলবে না। পড়াশোনা তো অনেক পরের কথা। আর তাদের মতো মানবাধিকার কর্মীদের উপর চরম শাস্তি নেমে আসবে।

কোচাইয়ের ভয়ই গ্রাস করেছে পরিচালক সাহরা করিমিকেও। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেছেন, দেশ জুড়ে যা চলছে তা তিনি বিশ্বাস করতে পারছেন না।

গোটা বিশ্বের চিত্র পরিচালকদের কাছে করিমি সাহায্যের আবেদন করেছেন। তিনি বলেছেন, 'সকলে সরব হোন। আর চুপ করে বসে থাকবেন না। ওরা আমাদের মারতে আসছে।' করিমি জানিয়েছেন, তালেবান বহু শিশুকে অপহরণ করছে। বোর্খা না পরার অভিযোগে নারীদের উপর জুলুম করছে। মেয়েদের বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। তালেবান যোদ্ধআদের সঙ্গে জোর করে দেওয়া হচ্ছে ছোট ছোট ছোট মেয়েদের।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)