1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার ভুল সিদ্ধান্ত: বুশ

১৫ জুলাই ২০২১

অ্যামেরিকান ও ন্যাটো সেনা প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানের নারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত জর্জ ডাব্লিউ বুশ৷ ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে ভুল হিসেবে অভিহিত করেছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷

https://p.dw.com/p/3wVl0
জর্জ ডাব্লিউ বুশ
ডয়চে ভেলেকে দেয়া সাক্ষাৎকারে জর্জ ডাব্লিউ বুশ আফগানিস্তানে নারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেনছবি: DW

টুইন টাওয়ারে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে সৈন্য পাঠায় জর্জ ডাব্লিউ বুশ প্রশাসন৷ দুই দশক পর সেখান থেকে সব সৈন্য প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন জো বাইডেন৷ একে ভুল হিসেবে অভিহিত করে ডয়চে ভেলেকে বুশ বলেন, ‘‘আফগান নারী ও মেয়েরা যে অবর্ণনীয় ক্ষতির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে তা নিয়ে আমি ভীত৷’’ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশি সেনাদের সঙ্গে কাজ করা আফগান অনুবাদকদের নিয়ে৷ ‘‘তাদেরকে এইসব নিষ্ঠুর মানুষের (তালেবান) হাতে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়া হচ্ছে যা আমার হৃদয়কে ভেঙে দিচ্ছে,’’ বলেন তিনি৷

সাক্ষাৎকারে বুশ জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন সৈন্য প্রত্যাহার নিয়ে তিনিও একই মনোভাব পোষন করেন বলে তার ধারণা৷

আফগানিস্তান নিয়ে বুশের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কাবুল ভিত্তিক সাংবাদিক আলী লতিফি ডয়চে ভেলেকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘‘এটা খুবই কৌতুহলোদ্দীপক ব্যাপার যে তিনি হঠাৎ আফগান নারী ও শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন৷ যেখানে তার যুদ্ধ (বুশ প্রশাসনের) অনেককে বিধবা ও অনেক শিশুকে এতিমে পরিণত করেছে৷’’

চলতি বছরের মে মাস থেকেই আফগানিস্তান থেকে সেনা সরিয়ে নিতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো৷ মার্কিন সামরিক বাহিনীর সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী এরই মধ্যে দেশটি থেকে ৯০ ভাগ সেনা তারা প্রত্যাহার করেছে৷ ৩১ আগস্টের মধ্যেই অবশিষ্ট সেনাদের ফিরয়ে আনা হবে বলে উল্লেখ করেছেন বাইডেন৷

জুনেই আফগানিস্তান থেকে নিজেদের সমস্ত সেনা প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জার্মানি৷ উত্তর আফগানিস্তানের মাজার-ই-শরিফে জার্মানির কনস্যুলেট জেনারেলও এরই মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷ আফগানিস্তান অভিযান সমাপ্তি ঘোষণা করেছে ইটালি৷ পোল্যান্ডও সম্প্রতি তাদের সব সৈন্য ফিরিয়ে এনেছে৷

দেশটিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সদর দপ্তর হিসেবে পরিচিত কাবুলের বাগরাম বিমান ঘাঁটি থেকে ২ জুলাই সব সৈন্য প্রত্যাহারের মাধ্যমে সেখানকার কার্যক্রম গুটিয়ে ফেলে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো৷ এরই মধ্যে দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব আফগান সরকারের হাতে ন্যাস্ত করেছে তারা৷ অন্যদিকে আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে দেশটির উল্লেখযোগ্য একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে তালেবানের হাতে৷ এমন প্রেক্ষিতে আফগানিস্তানে পুনরায় হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন বাইডেন৷ ‘নাইন-ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলায় জড়িতদের ও ওসামা বিন লাদেনের বিচারের মধ্য দিয়ে’ যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে বলে গত সপ্তাহে মত প্রকাশ করেন তিনি৷ বাইডেন বলেন, ‘আফগানিস্তানকে গড়ার জন্য’ যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে যায়নি৷ নিজেদের ভবিষ্যৎ ও দেশ কিভাবে চলবে তা নির্ধারণের দায়িত্ব আফগান জনগণের৷

Afghanistan troop withdrawal a mistake, says George W. Bush

কিন্তু ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে আফগানিস্তানকে কেমন রেখে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো, এমন প্রশ্নের উত্তরে সাংবাদিক আলী লতিফি বলেন, ‘‘বাস্তবতা হচ্ছে তালেবান এখনও সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য হুমকি, এখনও আমরা যুদ্ধের মধ্যে আছি এবং এখনও আমরা জিজ্ঞাসা করছি নারী, শিশু, অনুবাদকদের কী হবে, ২০ বছর পরে এসেও এমনটাই পরিস্থিতি৷’’

কেট মার্টায়ার/এফএস