1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আফগানিস্তানে সূর্যের আলো কাজে লাগিয়ে রান্নার উদ্যোগ

১৮ মার্চ ২০২১

দরিদ্র মানুষের পক্ষে কি পরিবেশবান্ধব উপায়ে জীবনধারণ করা সম্ভব? আফগানিস্তানে এক সহজ পদ্ধতিতে তৈরি সস্তার এক চুলা সাধারণ মানুষের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আনছে৷ শুধু সূর্যের আলোর সাহায্যে রান্না করা যাচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3qnUk
Symbolbild Solarstromanlage Sonnenfinsternis
ছবি: picture-alliance/dpa/R. Hirschberger

একটি সোলার ওভেনের সাহায্যে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় পানি ফোটানো যায়৷ আফগানিস্তানে অনেক মানুষের মতো গজনির একটি পরিবারও রান্নার জন্য এই চুলা ব্যবহার করে৷ তবে সেটি সব ঋতুর জন্য উপযুক্ত নয়৷ পরিবারের এক সদস্য নিজেদের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেন, ‘‘এই চুলাগুলি সব অর্থেই আমাদের জন্য ভালো, কারণ কাঠ, গ্যাস বা তেল ছাড়াই রান্নাবান্না ও পানি গরম করা যায়৷ তবে শীতকালে রোদ কম থাকায় কিছুটা সমস্যা হয়৷’’ 
 
আফগানিস্তানের বেশিরভাগ বড় শহরে এখনো অনেক মানুষ বিদ্যুৎ সংযোগ ও গ্যাস পান না৷ পরিবারের কর্ত্রী বলেন, ‘‘প্রায় নয় বছর ধরে আমরা এই স্টোভ কিনে আসছি৷ আমরা কাঠ, গ্যাস বা অন্য কোনো জ্বালানি কিনি না৷ আমি এতেই রান্না করি, পানি ফোটাই৷ শুধু পরিস্কার রাখতে হয়, প্রতিদিন সকালে ধুতে হয়৷’’
বিদ্যুৎ ও গ্যাসের নাগাল না পাওয়ায় মানুষের কাছে এই স্টোভ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে৷ খুবই সাধারণ উপকরণ দিয়ে স্থানীয় ওয়ার্কশপে সেগুলি তৈরি করা যায়৷ দুই কমবয়সি শ্রমিক চুলার ধাতব কাঠামো তৈরির দায়িত্বে রয়েছে৷ খুব সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হয়৷ ওয়ার্কশপের প্রধান মিস্ত্রী লিয়াকত আলি বলেন, ‘‘আমার তিন শিক্ষানবিস রয়েছে এবং আমরা দিনে দুটি করে স্টোভ তৈরি করি৷ এর বেশি সম্ভব হয় না৷ শুধু গজনি নয়, হেরাট, কান্দাহার ও ওয়ারদাক জেলা থেকেও মানুষ কিনতে আসে৷’’ 


  
কাঠামোর উপর পাতলা ধাতুর স্তর লাগিয়ে ডিশ বা চাকতির আকার দিতে হয়৷ হাতেই সেই কাজ করতে হয়৷ উৎপাদনের খরচ যতটা সম্ভব কম রাখার চেষ্টা করা হয়, যাতে দরিদ্র মানুষ সেগুলি কিনতে পারেন৷ চুলা প্রস্তুতকারক হিসেবে মোরতেজা মনে করেন, ‘‘মানুষ এখন এই স্টোভ ব্যবহার করতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে৷ অতি সহজে ব্যবার করা যায় বলে তাদের আগ্রহও বাড়ছে৷ তার উপর গ্যাসের দাম অত্যন্ত বেশি৷ এই স্টোভে জ্বালানি লাগে না, তাই দাম নিজে থেকেই উঠে আসে৷’’ 
 
ডিশের পুরো সারফেসই আয়না হতে হবে৷ ধৈর্য্য ধরে নিখুঁতভাবে যত্ন নিয়ে সেই কাজ করতে হয়৷ আঠা লাগিয়ে আয়নাগুলিকে যতটা সম্ভব নিবিড় রাখতে হবে৷ সামান্য ব্যবধান রাখলেও চলবে না৷ 
তারপর প্রত্যেকটি আয়না পরীক্ষা করতে হয়৷ প্রত্যেকটি টুকরোতে নির্দিষ্ট প্রতিফলন হতে হবে৷ তা না হলে সূর্যের আলো ঠিকমতো একত্র করা যাবে না এবং স্টোভে যথেষ্ট উত্তাপও সৃষ্টি করা যাবে না৷ 
 
সবশেষে হাতেনাতে পরীক্ষার পালা৷ এই চুলায় পিচবোর্ডের একটি টুকরো পোড়ানো এবং এক ব্যারেল পানি ফোটানো সম্ভব হওয়া উচিত৷ তাছাড়া আয়নার মাধ্যমে সূর্যের আলো সরাসরি ডিশের একেবারে মাঝে রিংয়ের উপর ফেলতে হবে৷ সস্তা, বর্জ্যবিহীন ও পরিবেশবান্ধব এই চুলা সত্যি মানুষের উপকারে আসছে৷ 

সূর্যের আলোয় জ্বলবে চুলা

এব্রাহিম মাহদাভি/এসবি