1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আবর্জনার চাপে আলবেনিয়া

ইওহান ফন মিরবাখ/আরবি২০ আগস্ট ২০১৩

পাহাড় সমান বর্জ্য সত্ত্বেও ভ্রক্ষেপ নেই আলবেনিয়ার কর্তৃপক্ষের৷ এমনকি পরিত্যক্ত জিনিস অন্য দেশ থেকেও আমদানি করে থাকেন তাঁরা৷ বলা হয় ‘রিসাইক্লিং' করার জন্য৷ এ ব্যাপারে পরিবেশবাদীরা সোচ্চার হয়ে উঠেছেন এখন৷

https://p.dw.com/p/19SFl
ছবি: DW/J. von Mirbach

রাজধানী টিরানার এক প্রান্তে, বন্দরনগরী ডুরেস কিংবা দেশের উত্তরে, স্কোদ্রায় – সবখানেই দেখা যায় আবর্জনার স্তূপ৷ শুধু গৃহস্থালীর বর্জ্যই নয়, পৌর প্রতিষ্ঠানগুলি থেকেও ময়লা ফেলা হয় যত্রতত্র৷ বন্দরনগরী ডুরেসে আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট কোনো জায়গা নেই৷ দুই লক্ষ বাসিন্দার বর্জ্য মাঠেঘাটে এসে পড়ে৷ শুয়োর ও গরু, ছাগল ঘাঁটাঘাঁটি করে এসব৷ বৃষ্টি হলে নদী নালা বেয়ে বিষাক্ত পানি সাগরে এসে পড়ে৷ রোমা পরিবারের লোকজন আবর্জনার স্তূপে প্লাস্টিক, কাগজপত্র, ধাতবসামগ্রী ইত্যাদি সংগ্রহ করতে চেষ্টা করেন৷ ধাতুর খোঁজে তারা আবর্জনায় আগুন জ্বালিয়ে দেন৷ ক্ষতিকর পদার্থ বাতাস ও পানিতে ভেসে আসে৷ দূষিত হয় পরিবেশ৷

Müllkippe bei Shkodra im Norden Albanien Müll Umwelt Umweltverschmutzung
‘‘আমরা বর্জ্য দূর করার চেয়ে তৈরি করি বেশি'', বলেন পরিবেশকর্মী ফেরুনিছবি: DW/J. von Mirbach

পরিবেশবাদীদের অভিযোগ অরণ্যে রোদন

লাভডোশ ফেরুনি আলবেনিয়ার এক পরিবেশকর্মী৷ অনেক দিন ধরেই আলবেনিয়ার বেআইনিভাবে গজিয়ে ওঠা আঁস্তাকুড়ের ব্যাপারে অভিযোগ করে আসছেন তিনি৷ কিন্তু এর সুরাহা হয়েছে খুব কমই৷ বিগত ২৩ বছরে আলবেনিয়ার জনগণের মধ্যে ভোগের পরিমাণ বেড়েছে অনেক৷ কিন্তু পরিকাঠামো তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি৷ ‘‘আমরা বর্জ্য দূর করার চেয়ে তৈরি করি বেশি'', বলেন আলবেনিয়ার এই পরিবেশকর্মী৷

ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিমালা অনুযায়ী মাত্র দুটি আবর্জনা ফেলার জায়গা রয়েছে আলবেনিয়ায়৷ একটি রাজধানী টিরানায় আরেকটি উত্তরের বুশাট শহরে৷

তবে আলবেনিয়াকে শুধু তার নিজের জঞ্জাল নিয়েই হিমশিম খেতে হয় না৷ আমদানি করা বর্জ্যের ঠেলাও সামলাতে হয়৷ ২০১১ সালে ৩ লক্ষ টন ধাতব এবং ২০০০০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য বিশেষ করে ইটালি থেকে রিসাইক্লিং-এর জন্য আমদানি করা হয়৷ রাজধানী টিরানার সারা বছরেরআবর্জনার সমান এই পরিমাণ৷

পরিবেশ সংক্ষণকারীদের আশঙ্কা, সাধারণ বর্জ্যের সঙ্গে বিষাক্ত পদার্থও পাচার হয়ে চলে আসতে পারে৷ সেরকম প্রমাণ না থাকলেও আলবেনিয়ার পরিবেশ মন্ত্রণালয় কিংবা শুল্কবিভাগ এ ব্যাপারে কোনো গ্যারান্টি দিতে পারছে না৷

জঞ্জাল ফেলার গাড়িগুলো কার্যত একেকটি প্রযুক্তিশালা

আবর্জনা দূরীকরণ সহজ নয়

আবর্জনা বিনাশ করা যে চাট্টিখানি কথা নয়, তা ভালোভাবেই টের পেয়েছেন জার্মান ভল্ভগাং ক্রাউসে৷ বছর দুয়েক আগে পর্যন্ত উত্তর আলবেনিয়ার একটি ডিসপোসাল সাইটে এক জার্মান বর্জ্য দূরীকরণ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ম্যানেজার হিসাবে কাজ করেছেন তিনি৷ নির্মাণ করেছেন একটি রিসাইক্লিং প্ল্যান্ট৷

বিনিয়োগ করা হয়েছিল পাঁচ লক্ষ ইউরো৷ করা হয়েছিল সংলগ্ন পৌর এলাকাগুলির সঙ্গে চুক্তিও৷ যাতে বলা হয়েছিল তারা তাদের বর্জ্য এই প্ল্যান্টে পাঠাবে এবং টন প্রতি জন্য সাত ইউরো দাম দেবে৷ ক্রাউসে আবর্জনা থেকে প্লাস্টিক আলাদা করে আবার টন প্রতি ৬০ ইউরো দিয়ে বিক্রি করার পরিকল্পনা করেন৷ কিন্তু এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি৷ কেননা এখানে আসল জিনিস অর্থাৎ আবর্জনারই অভাব দেখা দেয়৷ মোট বর্জ্যের মাত্র ৮ শতাংশ আসে এই রিসাইক্লিং প্ল্যান্টে৷ ফলে চাকরিটি হারান ক্রাউসে৷ অথচ পাশের স্কোদ্রা শহরেই প্রতি মাসে প্রায় ২০০০ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়৷ কিন্তু আশেপাশের সব শহরই তাদের আবর্জনা নদীর ধারে ও এখানে সেখানে নানা আঁস্তাকুড়ে ফেলতে থাকে৷ শরৎকালে সাগরের পানিতে ভেসে গেলে ঝামেলা চুকে যাবে, এটাই মনে করেন নগর কর্তৃপক্ষ৷ এইভাবে তারা বর্জ্যদূরীকরণের জন্য খরচ বাঁচানোর চেষ্টা করেন৷

Müllkippe Müll Albanien Umwelt Umweltverschmutzung Durres
শুয়োর, গরু, ছাগল ঘাঁটাঘাঁটি করে এসবছবি: DW/J. von Mirbach

ছাড়িয়েছে সহ্যের সীমা

ইতোমধ্যে জনসাধারণের সহ্যের সীমা অতিক্রম করেছে৷ সম্প্রতি সবুজ দল, পরিবেশবিদ এবং বিরোধী সমাজতান্ত্রিক দলের একটি জোট বর্জ্য আমদানি রোধে গণভোটের উদ্যোগ নিয়েছে৷ ডিসেম্বর মাসের শেষ নাগাদ অনুষ্ঠিত হবে এই গণভোট৷ জনসাধারণ বর্জ্য আমদানি নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দেবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ কিন্তু আমদানি বন্ধ করলেই যে আলবেনিয়ার আবর্জনা সমস্যার সমাধান হবে তা বলা যায় না৷ এজন্য সর্বস্তরে জাগাতে হবে সচেতনতা৷ তা না হলে নিজস্ব বর্জ্যের চাপে সামনের দিনগুলিতেও ভুগতে হবে দেশটির পরিবেশবিদ, বিনিয়োগকারী, নাগরিক ও প্রকৃতিকে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য