1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘গোপন’ পরমাণু কর্মসূচির অভিযোগ

২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু জাতিসংঘে ইরানের ‘গোপন' পরমাণু গুদামঘরের ছবি তুলে ধরলেন৷ সেইসঙ্গে ইউরোপের বিরুদ্ধে তেহরানকে ‘তোয়াজ' করার অভিযোগ আনলেন৷ ইরান অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/35byV
জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু
ছবি: Getty Images/AFP/T. A. Clary

ইরান আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি মেনে চলছে, অ্যামেরিকা ছাড়া স্বাক্ষরকারী সব দেশ এবং জাতিসংঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা তা স্বীকার করছে৷ শুধু ট্রাম্প প্রশাসন ও ইসরায়েল এ ক্ষেত্রে ইরানের উপর আস্থা রাখতে নারাজ৷ এর আগেও ইরানের ‘গোপন' পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে তারা অভিযোগ তুলেছে, যদিও এমন দাবির পক্ষে কোনো অকাট্য প্রমাণ তারা পেশ করতে পারেনি৷

এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু জাতিসংঘে তাঁর ভাষণে দাবি করলেন যে, তেহরানে এক ‘গোপন পরমাণু গুদামঘর' রয়েছে৷ নিজের দাবি প্রমাণ করতে তিনি আকাশ থেকে তোলা একটি ছবিও পেশ করেন৷ তাতে লাল তির দিয়ে একটি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে৷ তাঁর মতে, সেখানে পরমাণু কর্মসূচির জন্য প্রায় ৩০০ টন ওজনের নানা সরঞ্জাম ও তেজস্ক্রিয় উপকরণ রাখা হয়েছে৷ নেতানিয়াহু আরো দাবি করেন যে, ইরান এখনো পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে বদ্ধপরিকর৷ ইউরোপের দেশগুলি তেহরান সরকারকে ‘তোয়াজ' করে চলেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন৷ তিনি জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার উদ্দেশ্যে অবিলম্বে গাইগার কাউন্টার যন্ত্রসহ সেই জায়গা পরিদর্শন করার ডাক দিয়েছেন৷ নেতানিয়াহু অবশ্য সেখানে কী আছে, সে বিষয়ে খোলসা করে কিছু বলেননি৷

উল্লেখ্য, ২০১২ সালেও নেতানিয়াহু জাতিসংঘের ভাষণে ইরানের ‘গোপন' কর্মসূচি নিয়ে এমন এক দাবি পেশ করেছিলেন৷ তবে তার ভিত্তিতে তদন্তের কোনো সুযোগ ছিল না৷ চলতি বছরের এপ্রিল মাসেও ইরানে পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি সংক্রান্ত ‘গোপন' নথিপত্র তুলে ধরেন৷ ইরান অবশ্য সে সব ‘জাল নথিপত্র' হিসেবে বর্ণনা করে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল৷

বলা বাহুল্য, ইরান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে৷ সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, গোটা বিশ্ব এমন ভুল, অর্থহীন ও অপ্রয়োজনীয় ভাষণ নিয়ে শুধু হাসাহাসি করবে৷

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহম্মদ জাভাদ জরিফ উলটে ইসরায়েলের পরমাণু কর্মসূচির উপর কড়া নজরদারির প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন৷ তিনি বলেন, গোটা অঞ্চলে ইসরায়েলই একমাত্র দেশ, যার গোপন ও অঘোষিত পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি রয়েছে৷ এমনকি সে দেশের কাছে এক পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারও রয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন৷ ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এবার আন্তর্জাতিক পরিদর্শকদের কাছে সেই বেআইনি পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচি খুলে ধরার সময় এসে গেছে৷

জরিফ আরো বলেন, ইসরায়েল এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকেও একঘরে করে দিয়েছে৷ নেতানিয়াহু তাঁর নীতি কীভাবে অ্যামেরিকার উপর চাপিয়ে দিয়েছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে তা দেখা গেছে৷ ফলে অ্যামেরিকা জাতিসংঘের সাধারণ ও নিরাপত্তা পরিষদে একঘরে হয়ে পড়েছে৷

নেতানিয়াহুর ভাষণের পর মার্কিন প্রশাসন আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা আইএইএ'র উদ্দেশ্যে এই দাবির ভিত্তিতে তদন্তের ডাক দিয়েছে৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা অবশ্য জানিয়েছেন যে, ইরানে সেই চিহ্নিত গুদামঘর সম্পর্কে অ্যামেরিকা আগেই অবহিত ছিল৷ সেখানে নথিপত্র ছাড়া আর কিছু নেই৷ অতএব তার ভিত্তিতে পরমাণু চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ ধোপে টিকবে না৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, এএফপি)