1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আমফানের ধাক্কায় এখনো বেসামাল কলকাতা

পায়েল সামন্ত কলকাতা
২৪ মে ২০২০

চারদিন কেটে গেলেও ঘূর্ণিঝড় আমফানের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি কলকাতাসহ অন্যান্য জেলা৷ রাস্তায় পড়ে রয়েছে গাছ৷ বিদ্যুৎ নেই বহু এলাকায়৷ পথে নেমে এসেছে মানুষ৷ পুনর্বাসন কাজে যোগ দিয়েছে সেনা সদস্যরাও৷

https://p.dw.com/p/3cgpP
ছবি: picture-alliance/NurPhoto/I. Aditya

বুধবার সন্ধ্যায় কলকাতার উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড় আমফান৷ তারপর প্রায় চারদিন কেটে গেলেও এখনও ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী৷ একই অবস্থা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, হুগলি, হাওড়া জেলায়৷ এই ঝড়ে কলকাতায় মারা গিয়েছেন ১৯ জন৷ সাড়ে ১২ হাজার গাছ ঝড়ের দাপটে পড়ে গেছে৷ একটা বড় অংশই পড়েছে রাস্তায়৷ বিভিন্ন জায়গায় উপড়ে গেছে বিদ্যুতের খুঁটি৷ প্রবল বৃষ্টিতে বহু জায়গা এখনো জলমগ্ন৷

ঝড়ের পর পরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে গাছ কেটে রাস্তা চলাচল উপযোগী করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে৷ যেসব জায়গায় বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে, তা জোড়া লাগিয়ে সরবরাহ শুরু করার কাজ চলছে৷ কিন্তু বিপর্যয়ের ব্যাপকতা এতটাই বেশি যে পুরসভা, সরকারি দপ্তর এবং বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা সিইএসসি-র কর্মীদের পক্ষে এখনও সব জায়গায় পরিষেবা শুরু করা সম্ভব হয়নি৷ সেই কারণে শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তায় নেমে অবরোধে শামিল হয়েছে জনতা৷ দমদম পুরসভার বহু ওয়ার্ডে পানীয় জল, বিদ্যুতের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ হয়েছে৷ গাছ না সরানো এবং পরিষেবাগুলো চালু না হওয়ায় তারা প্রশাসনকে দায়ী করেছে৷ এ সম্পর্কে দমদম পুরসভার উপ-পুরপ্রধান বরুণ নট্ট বলেন, ‘‘আমরা ২৪ ঘণ্টা কাজ করছি, যাতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়৷ গাছ কাটা চলছে৷ কিন্তু, সব জায়গাই বিপর্যস্ত৷ এত কর্মী নেই যে একসঙ্গে সর্বত্র কাজ করানো যাবে৷’’

বরুণ নট্ট

অবরোধ হয়েছে কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সংযোগকারী ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস-এ৷ দমদম থেকে বেহালার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ দুদিন ধরে পথে নেমেছেন৷ বিক্ষোভ হয়েছে নেতাজিনগর, আজাদগড়ে৷ বেহালার বাসিন্দা সমীর রায় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ এসেছে৷ বাকিটা এখনো অন্ধকার৷ এর ফলে জল সরবরাহ বন্ধ৷ অবর্ণনীয় অবস্থার মধ্যে দিন কাটছে৷’’

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেহালায় বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘‘বিক্ষোভ করবেন না৷ সিইএসসি-র সঙ্গে আমরা বারবার কথা বলেছি৷ লকডাউনের জন্য ওদের কর্মী কম আছে বলে জানিয়েছে৷ আমরা দেড়শোটা জেনারেটর ভাড়া করে আপাতত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করতে বলেছি৷’’

মেয়র ফিরহাদ হাকিমের প্রতিশ্রুতি, ‘‘আর দিন দুয়েকের মধ্যে জল ও বিদ্যুতের সরবরাহ ফিরে আসব৷ সাতদিন সময় দিন, কলকাতাকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে দেব৷ এত বড় বিপর্যয় কলকাতা আগে দেখেনি, আমরা নিরুপায়৷’’

বিপর্যয় মোকাবিলায় শুধু কলকাতাতেই ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স-এর ২২৫টি দল কাজ করছে৷ এর সঙ্গে রয়েছে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, পুলিশ, পুরসভা, দমকল৷ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের একশোটির বেশি দল গাছ কাটাসহ সার্বিক ত্রাণের কাজে হাত লাগিয়েছে৷ এক-একটা গাছ সরাতে ঘণ্টা দেড়েক সময় লাগছে৷ গাছ কেটে রাস্তা সাফ করার জন্য শনিবার টালিগঞ্জ, বালিগঞ্জ, রাজারহাট-নিউটাউন, বেহালা প্রভৃতি স্থানে পাঁচ কলাম সেনা নামানো হয়েছে৷ ৷ জনস্বাস্থ্য কারিগরী দপ্তরের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জল বিলি করা হচ্ছে৷ ত্রাণকাজের জন্য রেলওয়ে, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং বেসরকারি সংস্থার কাছে রাজ্য সরকার সহযোগিতা চেয়েছে৷

কলকাতা ও জেলায় টেলিফোন পরিষেবা ঝড়ের তিনদিন পরেও ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত৷ অনেক জায়গায় বন্ধ রয়েছে ডিটিএইচ ও কেবল টিভি পরিষেবা৷ উল্টোডাঙার বাসিন্দা অপরেশ সান্যাল বলেন, ‘‘একটা মোবাইল ফোন পুরো চার্জ দেওয়ার জন্য ২০ টাকা নিচ্ছে৷ পাওয়ার ব্যাঙ্কের বিক্রি বেড়ে গিয়েছে৷ জেনারেটরের ভাড়া প্রতি ঘণ্টায় দেড় হাজার টাকা৷’’ কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে কলকাতা, এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন শহরবাসী৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান