1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘‘আমরা ইনস্টিটিউশনালি একদলীয় গণতন্ত্র না''

৩০ ডিসেম্বর ২০২৩

নির্বাচন পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ কি অঘোষিতভাবে একদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আছে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান এই মন্তব্য করেছেন৷

https://p.dw.com/p/4aisA
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের ঋণের ভাগ বেশি হয়ে গেছে এইটা একটা মিসপারসেপশন।''
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের ঋণের ভাগ বেশি হয়ে গেছে এইটা একটা মিসপারসেপশন।''ছবি: DW

‘ডয়চে ভেলে খালেদ মুহিউদ্দীন জানতে চায়' টকশোতে  'জাতীয় নির্বাচন ও অর্থনীতি' নিয়ে আলোচনা করতে এবার অতিথি হিসেবে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান৷

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইনস্টিটিউশনালি একদলীয় গণতন্ত্র না৷ তবে অন্য যে দলগুলো আছে, তাদের বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব ও পলিসির ঘাটতি আছে৷ আমরা মানি বা না মানি, আওয়ামী লীগকে পছন্দ করি বা না করি, আওয়ামী লীগ বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব ও পলিসি প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে৷''

কেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এইবারের নির্বাচনকে ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো হতে দিতে চান না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. রহমান বলেন, ‘‘প্রতিদ্বন্দ্বীহীনতার চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকাটা ভালো৷ যেখানে ভোট হবে এবং ভোটার ভোট দিবে, সেখানেও একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে৷''

টক শো এর সঞ্চালক খালেদ মুহিউদ্দীন বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়েপ্রতিবেশি দেশ ভারতের কিছু অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, "আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন 'ভারত চায় না বাংলাদেশে আরেকটা ১/১১ হোক'", ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি তার বইয়ে লিখেছেন, 'সেনাপ্রধানের চাকরি যেন থাকে তা প্রধানমন্ত্রীকে তিনি বলে দিবেন'"। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ইস্যুতে ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘আমার কাছে মনে হয়েছে বাইরে যা আমরা শুনি আসলে বাস্তবে তা না৷ ভারত চাইবে বাংলাদেশে একটা সরকার থাকুক যারা ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায়  রাখবে৷  যারা উগ্রবাদকে উসকে দিবে না৷ ট্রানজিটের জন্যও ভারতের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ৷''

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘আমাদের ঋণের ভাগ বেশি হয়ে গেছে এইটা একটা মিসপারসেপশন৷ আমাদের যেই ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে তা যদি আমাদের আউটপুট দেয় আগামী ২৫- ৩০ বছরে, আমরা তাহলে ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারবো৷  এইটা এতো ভয়াবহ কিছু না।'' বৈদেশিক ঋণ ও রিজার্ভ বিবেচনায় বাংলাদেশের অর্থনীতি এই মুহূর্তে সর্বোচ্চ খারাপ অবস্থায়৷ করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতি কাটিয়ে উঠলেও বাংলাদেশের এই খারাপ অবস্থার পেছনে বাংলাদেশ সরকারের নীতির দায় আছে কিনা প্রশ্নের জবাবে এই কথা বলেন ড. মসিউর রহমান৷

তিনি যুক্ত করেন, ‘‘করোনার পরে আমাদের রিকভারি ভালো হচ্ছিলো, আমাদের গ্রোথ রেটও ভালো ছিল সাউথ এশিয়ায় আমাদেরটাই বোধহয় সবচেয়ে অগ্রগণ্য৷  এইখানে আমি বলবো না যে পলিসির দোষ বা পলিসির ব্যর্থতা৷ কোনো সিস্টেমিক কারণ আছে যা আমরা দেখতে পাচ্ছি না৷ যেটা হয়েছে সেটা হচ্ছে, বাইরের কোন শকের কারণে৷ ঋণ এর যেটা আছে, আমাদের বেশির ভাগ ঋণেরই ইন্টারেস্ট রেট খুবই কম এবং এদের রিপেমেন্ট পিরিয়ড ২৫-৩৫ বছর৷''    

বাংলাদেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভয় পাচ্ছেন কিনা, প্রশ্ন করেন খালেদ মুহিউদ্দীন। জবাবে ড. মসিউর রহমান বলেন,  ‘‘অর্থনীতিবিদরা কখনো ভরসার স্থল দেখে না৷ সবচেয়ে ভাল যখন হচ্ছে তখনও তারা বলে এই ভাল কতদিন চলবে৷ আইএমএফ কিন্তু ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি দেয়ার আগে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বলেছে পলিসি ট্র্যাকে রয়েছে৷ এটা এতোটা ভয়ের না৷'' 

নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ করার পেছনে সরকারের সদিচ্ছার অভাব ছিল কিনা জানতে চাওয়া হলে, ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘না আমি এটা মনে করবো না৷ কে ইলেকশনে আসবে কোন দল আসবে না আসবে এটা সেই দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার৷''

তিনি পালটা ইঙ্গিত করেন বিএনপির নেতৃত্বের দুর্বলতার দিকে, ‘‘আমি যেটা মনে করি, তাদের দুর্বলতা হচ্ছে তারা কোনো বিশ্বাসযোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি৷ বিশ্বাসযোগ্য পলিসিও তৈরি করতে পারেনি৷ বিএনপিকে বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার সাথে একাত্ম হতে হবে৷ তারা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল হয়ে সিস্টেমের বাইরে থাকতে পারে না৷'' 

দুর্নীতি এবং বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হওয়ার দায় সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীর ওপর কেন বর্তাবে না, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মসিউর রহমান বলেন, ‘‘যে কয়জনের নাম প্রকাশিত হয়েছে এদের ৪-৫ জনকে আমি চিনি৷ তাদের বাবা বা তারা  বিদেশে কাজ করেছে, তারা হয়তো সেখানে টাকা রেখেছে৷ হয়তো সেটা বড় অংকের৷ যাদের নাম প্রকাশ হয়েছে তাই সেগুলো কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য আমি বলতে পারি না৷''  

নির্বাচনের হলফনামায় মন্ত্রী-এমপিদের অস্বাভাবিক সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, ‘‘আমার বাড়লে (সম্পদ) আমি বলতে পারতাম কিভাবে বাড়ে৷''

এসএইচ/এডিকে