1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জলবায়ু পরিবর্তন

৩১ জুলাই ২০১২

‘কার্বন ডাইঅক্সাইড ক্যাপচার অ্যান্ড স্টোরেজ’, সংক্ষেপে সিসিএস৷ কার্বন নির্গমন জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী৷ কারখানার ধোঁয়াকে মাটি চাপা দিয়ে বন্ধ করে রাখলে কেমন হয়? জার্মানিতে এই নিয়ে বিতর্ক চলেছে৷

https://p.dw.com/p/15gmo
--- 2012_07_30_co2_css.psd

কার্বন ডাইঅক্সাইড'কে ধরা এবং আটকে রাখা, অর্থাৎ সিসিএস সংক্রান্ত আইনটি জার্মানিতে পাশ হয়ে যাবার পরও পরিবেশমন্ত্রী পেটার আল্টমায়ার বলেছেন, জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে মাটিতে কার্বন ডাইঅক্সাইড জমা রাখার পরিকল্পনা সফল হবে না৷ এই ধরণের নতুন প্রযুক্তি সম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনের চুল্লিকে নিজেদের সীমানায় ঠাঁই দিতে জার্মানির কোনো প্রদেশই আপাতত সম্মত নয়, বলে তাঁর ধারণা৷

অথচ ফেডারাল সরকার এবং জার্মান সংসদ মাত্র কিছুদিন আগে পূর্ণাঙ্গ আইন পাশ করে বসে আছে, ঠিক কি পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড মাটির নীচে জমা করা যাবে৷ অপরদিকে এ ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার তাদের সীমানার মধ্যে কার্বন ডাইঅক্সাইড ভূগর্ভে জমা করা নিষিদ্ধ করতে পারবেন৷

উত্তর জার্মানির শ্লেশভিগ হল্টাইন রাজ্য ঠিক তাই করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ ওদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্বালানি শক্তি কমিশনার গুইন্টার ওয়েটিংগার, যিনি নিজেই জার্মান, প্রস্তাব দিয়ে বসে আছেন যে, উত্তর সাগরে জার্মানির বারো মাইল সামুদ্রিক এলাকার মধ্যে তো সমুদ্রগর্ভেই কার্বন ডাইঅক্সাইড জমা করা যেতে পারে৷ এবং তা কোনো রাজ্য কিংবা প্রাদেশিক সরকারের পক্ষে নিষিদ্ধ করা সম্ভব হবে না৷ বিভিন্ন রাজ্যের উপর দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে কার্বন ডাইঅক্সাইড পাচার করার জন্য কারো অনুমতি লাগবে না৷

কারো সর্বনাশ, কারো পৌষমাস৷ মধ্য জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্য সিসিএস'এর ব্যাপারে পথিকৃৎ হতে আকুল৷ কেননা এই রাজ্যটিতে প্রচুর পরিমাণ লিগনাইট কয়লা উৎপন্ন হয়, যা বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্পে কাজে লাগে৷ ব্রান্ডেনবুর্গ রাজ্যে কর্মসংস্থান এবং রাজস্বের একটি বড় অংশ আসে বিদ্যুৎ উৎপাদন শিল্প থেকে৷ অবশ্য জনসাধারণকে রাজ্য-অর্থনীতির এ সব গূঢ় রহস্য বোঝানোর প্রয়োজন নেই৷ কাজেই তাদের ‘জ্বালানি মোড়', বা পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে অপরাপর জ্বালানি শক্তিতে যাওয়ার কথাই বলা হচ্ছে৷

বলতে কি, বিশেষ করে জার্মানির পূর্বাঞ্চলে একাধিক রাজ্যের সমস্যা হল, পরিবেশ বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রদেশের অর্থনীতিকে তো আর জলাঞ্জলি দেওয়া চলে না৷ ফেডারাল আইনে স্বরাজ্যে সিসিএস'কে নিষিদ্ধ করার দায়িত্ব রাজ্য সরকারের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, কিংবা তাদের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এখন যারা চাকরি দেয় এবং রাজস্ব দেয়, সেই শিল্পসংস্থাগুলিকে পরিবেশ বাঁচানোর জন্য বিদায় করলে ভোটারদের কি প্রতিক্রিয়া হবে, রাজ্য-রাজনীতিকরা স্বভাবতই সে ব্যাপারটাও চিন্তা করে দেখবেন৷

আর বিনিয়োগের ব্যাপারটাও তো শুধু কাল্পনিক নয়৷ সুইডিশ কোম্পানি ভাটেনফাল ব্রান্ডেনবুর্গে দেড় বিলয়ন ইউরো ব্যয় করে একটি আনকোরা সিসিএস প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছিল৷ এমনকি এ জন্য খোদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছ থেকে ভরতুকিও পেয়েছিল৷ কিন্তু এলাকার মানুষদের প্রতিবাদে গোটা প্রকল্পটাই প্রথমে বিলম্বিত, এবং পরে প্রায় বাতিল হয়ে যায়৷ জার্মান সরকারের সিসিএস সংক্রান্ত আইনের পর ভাটেনফাল নাকি আবার রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলতে আগ্রহী৷

বলতে কি, সিসিএস নিয়ে গোলযোগে ফেডারাল সরকার, রাজ্য সরকার, নাগরিক আন্দোলন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সকলেই সংশ্লিষ্ট৷ সিসিএস সংক্রান্ত নতুন জার্মান আইনটিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সূত্র ধরেই৷ এবং সিসিএস'এর প্রবক্তারা ইতিমধ্যেই ব্যাপকতর স্বপ্ন দেখছেন: ইউরোপ জুড়ে সিসিএস, বাইশ হাজার কিলোমিটার পাইপলাইন, তা দিয়ে বছরে ১২০ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড পাচার হচ্ছে...

প্রতিবেদন: কাই-আলেক্সান্ডার শল্ৎস / এসি
সম্পাদনা: দেবারতি গুহ

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য