1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

আসাদের হাতে কুর্দিদের হাত

১৪ অক্টোবর ২০১৯

রোববার সিরিয়ার উত্তরে এসডিএফ বাহিনী আসাদ প্রশাসনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ ফলে তুরস্কের সঙ্গে সিরিয়ার সামরিক সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে৷ দ্রুত সৈন্য প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিচ্ছে ওয়াশিংটন৷

https://p.dw.com/p/3REeE
Syrien Beerdigung kurdische Politiker
ছবি: AFP/D. Souleiman

আচমকা সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প শত্রু-মিত্র অনেককেই অবাক করে দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সে দেশের প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তথাকথিত ইসলামিক স্টেট জঙ্গি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংগ্রামে অ্যামেরিকার জোটসঙ্গী কুর্দিদের মধ্যে এর ফলে চরম হতাশা ও ক্রোধ দেখা দেয়৷ ট্রাম্পের ঘোষণার পর সিরিয়ার উত্তরে তুরস্কের সামরিক অভিযান কুর্দিদের নেতৃত্বে এসডিএফ বাহিনীর অবস্থা আরও কঠিন করে তুলেছে৷ ফলে মরিয়া হতে তারা এখন পুরানো শত্রু আসাদের সঙ্গে বোঝাপড়ার ঘোষণা করলো৷ এই চুক্তির আওতায় আসাদের সেনাবাহিনী এবার উত্তরে তুরস্ক সীমান্তে মোতায়েন করা হবে৷ সে ক্ষেত্রে সিরিয়া ও তুরস্কের মধ্যে সরাসরি সংঘাত অনিবার্য হয়ে পড়বে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

রোববার কুর্দি বিদ্রোহী ও আসাদ প্রশাসনের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের দিনই অ্যামেরিকা সিরিয়া থেকে প্রায় সব সৈন্য প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে৷ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এস্পার প্রায় ১,০০০ মার্কিন সৈন্য দেশে ফিরিয়ে আনার জানান, তুরস্কের সেনাবাহিনী সিরিয়ার আরও গভীরে প্রবেশ করায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো৷ গত বুধবার থেকে তুরস্কের সেনাবাহিনীর লাগাতার হামলার ফলে হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে৷

এমন পরিস্থিতিতে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে তুরস্কের মধ্যে ক্ষমতার সমীকরণ প্রায় আমূল বদলে গেল৷ সেইসঙ্গে সিরিয়ায় সক্রিয় বিদেশি শক্তিগুলির প্রভাব-প্রতিপত্তির মাত্রাও নতুন করে স্থির হচ্ছে৷ ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের ফলে একদিকে অ্যামেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্বের প্রভাব কমে যাচ্ছে৷ অন্যদিকে রাশিয়া ও ইরান আসাদ সরকারের মাধ্যমে সিরিয়ার উপর আরও প্রভাব বাড়াতে সক্ষম হচ্ছে৷

তুরস্ক তার মিত্র দেশ রাশিয়া ও ইরানের মদতপুষ্ট আসাদ প্রশাসনের সঙ্গে সামরিক সংঘাতে জড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি কোনদিকে এগোবে, তা বলা কঠিন৷ অ্যামেরিকা ও ইউরোপের সতর্কতাবাণী সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়িপ এর্দোয়ান সীমান্তের দুই প্রান্তে কুর্দিদের দমন করতে বদ্ধপরিকর৷ কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় কার্যত একঘরে হয়ে পড়লে তুরস্কের স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা সম্ভব, এর্দোয়ানকে তার জবাবদিহি করতে হবে৷

‘পিস স্প্রিং' অভিযানের আওতায় তুরস্ক সিরিয়ার মধ্যে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এক ‘নিরাপত্তা বলয়' সৃষ্টি করতে চায়৷ কিন্তু অভিযানের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ৬০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হওয়ায় তুরস্কের উপর চাপ বাড়ছে৷ মানুষ দলে দলে এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছে৷ ফলে ইউরোপেও আবার শরণার্থী সংকটের আশঙ্কা বাড়ছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়ন তুরস্কের কাছে অস্ত্র বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর উদ্যোগ নিচ্ছে৷ ন্যাটো সদস্য দেশ হওয়া সত্ত্বেও তুরস্কের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ নেওয়া অ্যামেরিকা ও ইউরোপের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তিকর৷ পরিস্থিতি যাতে আরও সংকটপূর্ণ না হয়ে ওঠে, সেই লক্ষ্যে কূটনৈতিক স্তরেও তুরস্কের উপর চাপ বাড়ছে৷

বর্তমান সংকটের ফলে পরাজিত ও কোণঠাসা আইএস গোষ্ঠী আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ এতকাল প্রায় ১২,০০০ আইএস জঙ্গি এসডিএফ বাহিনীর হাতে বন্দি ছিল৷ তুরস্ক তাদের দায়িত্ব নেবার ইঙ্গিত দিলেও কার্যক্ষেত্রে কী হবে, তা স্পষ্ট নয়৷

এসবি/কেএম (রয়টার্স, এএফপি)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য