1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইউক্রেন সংকটের ধাক্কা সামলাতে জার্মানিতে ব্যাপক ছাড়

২৫ মার্চ ২০২২

সাধারণ মানুষের উপর জ্বালানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা কিছুটা লাঘব করতে জার্মান সরকার বেশ কিছু সাময়িক ভর্তুকি ও ছাড়ের ঘোষণা করেছে৷ এই ঘোষণার ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ 

https://p.dw.com/p/491Dz
ফাইল ছবিছবি: Sabine Kinkartz/DW

প্রথমে করোনা সংকট, তারপর ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা – একের পর এক সংকটে জর্জরিত জার্মানি তথা ইউরোপের মানুষ৷ ফলে মূল্যবৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি ও নানা অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সমস্যা দেখা দিচ্ছে৷ বিশেষ করে বিদ্যুৎ, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, হিটিং ব্যবস্থা ও পরিবহণের ব্যয় অনেক বেড়ে গেছে৷ সাধারণ মানুষের দুর্দশা অনন্ত কিছুটা হলেও কমাতে সরকার পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ প্রায় দশ ঘণ্টা ধরে আলাপ-আলোচনার পর বৃহস্পতিবার এমনই কিছু সিদ্ধান্ত নিলো জার্মানির জোট সরকার৷ এর আওতায় আপাতত ৯০ দিনের জন্য বেশ কিছু ছাড় ঘোষণা করা হয়েছে৷

পেট্রোল-ডিজেলের আকাশছোঁয়া মূল্যে রাশ টানতে জার্মান সরকার সাময়িক ভর্তুকি দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পেট্রোলের ক্ষেত্রে লিটার-প্রতি ৩০ সেন্ট এবং ডিজেলের ক্ষেত্রে লিটার-প্রতি ১৪ সেন্ট কম গুনতে হবে৷ ফলে আপাতত তেল ভরার সময় কিছুটা স্বস্তি পাবেন যানচালকরা৷ সেই সঙ্গে তিন মাস ধরে মাসে মাত্র নয় ইউরো মূল্যে বাস-ট্রাম ব্যবহার করা যাবে৷ দেশের সব গণপরিবহণ নেটওয়ার্কে সেই সুযোগ চালু করা হচ্ছে৷ গাড়ি ছেড়ে আরো বেশি মানুষ যাতে গণপরিবহণ ব্যবস্থা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন, তাতে উৎসাহ দিতেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷

সবার জন্য এমন ছাড়ের পাশাপাশি জনসংখ্যার নির্দিষ্ট কিছু অংশের জন্যও বিশেষ সুবিধা দিচ্ছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার৷ যেমন জ্বালানির বাড়তি মূল্যের ধাক্কা সামাল দিতে আয়করদাতারা এককালীন ৩০০ ইউরো পর্যন্ত হাতে পাবেন৷ তবে বেশি আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে সেই ছাড়ের মাত্রা কম হবে৷ সন্তানপ্রতি ১০০ ইউরো বাড়তি ভাতাও দেওয়া হবে৷ স্বল্প আয়ের পরিবারগুলির জন্যও ভর্তুকির ঘোষণা করেছে জার্মান সরকার৷

সরকারের এই ঘোষণার ফলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে৷ একদল এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলছে, দুর্দিনে জনসাধারণের বাড়তি বোঝা কিছুটা শিথিল করে সরকার আখেরে অর্থনীতিরও সার্বিক উপকার করেছেন৷ হাতে বাড়তি অর্থ পেয়ে মানুষ জ্বালানির বদলে অন্য খাতে খরচ বাড়াতে পারবেন৷ অন্যদিকে সেই ভর্তুকি দিতে গিয়ে সরকারি কোষাগারে বিশাল ধাক্কা সম্পর্কেও সতর্ক করে দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ ইউক্রেন সংকট আরও দীর্ঘায়িত হলে তিন মাস পরে আরও ভরতুকির প্রয়োজন হতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন৷ তাছাড়া জ্বালানির ক্ষেত্রে ভরতুকি দিয়ে সরকার জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার কমাতে কোনো উৎসাহ দিচ্ছে না বলে সমালোচকরা মনে করছেন৷ সাধারণ মানুযের পাশাপাশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্যও এখনো কোনো ছাড়ের ঘোষণা না করায়ও ক্ষোভ দেখা যাচ্ছে৷

জার্মানির অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়ান লিন্ডনারের মতে, সদ্য ঘোষিত পদক্ষেপগুলির আর্থিক মূল্য নিশ্চিতভাবে বলা না গেলেও প্রায় ১,৩০০ কোটি ইউরো ব্যয় হতে পারে৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তিনি ২০২২ সালের জন্য বাড়তি বাজেট পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন৷ সবুজ দলের নেতা রিকার্ডা লাং বলেন, এর আগে জার্মানিতে এত সস্তায় বাস, ট্রাম বা ট্রেনে ভ্রমণ করা সম্ভব হয় নি৷

এসবি/এসিবি (ডিপিএ, এএফপি)