1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইসরায়েল সফরে ম্যার্কেল

৫ অক্টোবর ২০১৮

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সাথে সুর মিলিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলও ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তবে এ থেকে ইরানকে বিরত রাখার প্রক্রিয়া নিয়ে দেখা দিয়েছে মতানৈক্য৷

https://p.dw.com/p/362QE
ছবি: picture-alliance/Photoshot/G. C. Magen

জার্মানি ও ইসরায়েল সরকারের মধ্যে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবেই ম্যার্কেল ও তাঁর মন্ত্রীদের এই একদিনের সফর৷ কিন্তু সম্প্রতি ইরানের সঙ্গে হওয়া পরমাণু চুক্তি বাঁচাতে ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু৷

তাছাড়া ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকে শান্তি প্রক্রিয়ায় বাধা বলে মন্তব্য করে আসছে জার্মানি এবং অন্যান্য ইউরোপীয় দেশ৷

ফলে এরপর ম্যার্কেলের এই সফরটির দিকে স্বভাবতই বিশেষ দৃষ্টি ছিল সবার৷ তবে বৈঠক শেষে দুই নেতা জানান, সব বৈরিতা দূর করে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করতে আগ্রহী তাঁরা৷

ইরান পরমাণু চুক্তি

ইরানের সাথে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর করা পরমাণু চুক্তিকে বরাবরই ‘ঐতিহাসিক ভুল’ দাবি করে এসেছেন নেতানিয়াহু৷ চুক্তিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি অন্যতম৷

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন৷ জার্মানিসহ চুক্তিতে থাকা অন্য দেশগুলোকেও ট্রাম্পের নীতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে আসছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী৷

তবে ইসরায়েল সফরে এ নিয়ে বিতর্কে জড়াননি জার্মান চ্যান্সেলর৷ বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইসরায়েলের সাথে একটি বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত হয়েছি৷ পরমাণু অস্ত্র তৈরি করা থেকে ইরানকে যেভাবেই হোক, বিরত রাখতে হবে৷’’

তবে এক্ষেত্রে যে কিছু দ্বিমতও রয়েছে, তা-ও স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তিনি, ‘‘কিভাবে ইরানকে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে আমাদের মতপার্থক্য রয়েছে৷ এজন্যই আমাদের আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে৷’’

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিতর্ক

ফিলিস্তিনের ইসরায়েলি দখলে থাকা পশ্চিম তীরে একটি বেদুইন গ্রাম গুঁড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে জার্মানি৷ এর ফলে দ্বি-রাষ্ট্র শান্তি প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে বলেও মনে করে জার্মানি৷ একক সিদ্ধান্তে দখলীকৃত ভূমিতে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না করতে ইসরায়েলকে আহ্বানও জানিয়েছে জার্মানি৷

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট রয়ভেন রিভলিনের সাথে ম্যার্কেলের সাক্ষাতের সময় তাঁর অফিসের বাইরে বেদুইন গ্রাম থেকে আসা কিছু শিশু সাহায্যের আবেদন জানিয়ে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করে৷

তবে এবারের সফরে ম্যার্কেল এ বিষয়ে কিছুটা নরম অবস্থানেই ছিলেন৷ শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসরায়েলের দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দিলেও নেতানিয়াহুর কথা মেনে তিনি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথেও কথা বলতে রাজি হয়েছেন৷

নেতানিয়াহুর অভিযোগ, গাজা উপত্যকায় শান্তি আলোচনা শুরুর করতে আব্বাসই বাধা দিয়ে আসছেন৷ ম্যার্কেল বলেন, ‘‘আমি প্রধানমন্ত্রীকে (নেতানিয়াহু) প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের সাথে আমি কথা বলবো৷ আমি তাঁকে আমাদের আলোচনার বিষয়ে জানাবো, তাঁর কাছ থেকেও গাজা পরিস্থিতি কিছু বিষয়ে জানতে চাইবো৷’’

তিনি বলেন, ‘‘ফিলিস্তিনি পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আনতে আমাদের উৎসাহিত করা উচিত এবং আমরা তা করবো৷’’

জার্মানিতে ইহুদিবিদ্বেষ

জেরুজালেমে হলোকস্ট মেমোরিয়াল পরিদর্শন করে ইসরায়েল সফর শুরু করেন ম্যার্কেল৷ সেখানে রাখা অতিথি বইয়ে ম্যার্কেল লিখেছেন, ‘‘এই অপরাধের কথা মনে রাখা এবং ইহুদিবিদ্বেষ, বিদেশিবিদ্বেষ, ঘৃণা ও সহিংসতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো জার্মানির চিরকালের দায়িত্ব৷’’

ম্যার্কেলের সাথে সফরে আসা প্রতিনিধিদলের সাথে ছিলেন ইহুদিবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জার্মান সরকারের প্রধান কর্মকর্তা ফেলিক্স ক্লাইন৷ জার্মানিতে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান বিদ্বেষ ও তা মোকাবিলার উপায় নিয়েও আলোচনা হয়েছে দুই দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে৷

এডিকে/এসিবি (এপি, এএফপি)