1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ইয়েমেনে জার্মান অস্ত্র ব্যবহারের খবরে তীব্র সমালোচনা

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের জার্মানিতে তৈরি অস্ত্র ব্যবহারের খবরে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জার্মানির বিরোধী রাজনীতিক ও মানবাধিকার কর্মীরা৷

https://p.dw.com/p/3EGgk
DW Exclusive Deutsche Waffen in Jemen SPERRFRIST 26.02.2019 20 Uhr saudische Luftwaffe Folgen
ছবি: picture-alliance/AP Photo/H. Mohammed

তবে সরকার বলছে, সৌদি জোট জার্মান অস্ত্র ব্যবহার করছে, এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই৷

জার্মানির পাবলিক ব্রডকাস্টার বায়ারিশে ব়্যুন্ডফুঙ্ক, স্টার্ন ম্যাগাজিন, ডাচ তথ্য ব্যুরো লাইটহাউস রিপোর্ট এবং অনুসন্ধানী নেটওয়ার্ক বিলিংক্যাটের সহযোগিতায় ডয়চে ভেলে সম্প্রতি একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে৷ এতে ইয়েমেন যুদ্ধেজার্মান অস্ত্র ব্যবহার হচ্ছে বলে জানানো হয়, যা জার্মান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনের লঙ্ঘন৷ বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, জার্মানি সংঘাতে লিপ্ত কোনো দেশ কিংবা যেসব দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আছে, সেসব দেশের কাছে অস্ত্র রপ্তানি করতে পারে না৷

অবশ্য গতবছর সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশগজি হত্যাকাণ্ডের পর জার্মানি সৌদি আরবে অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে৷

অভিযোগ অস্বীকার

এদিকে, গত বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মান সরকারের পক্ষ থেকে ইয়েমেনে জার্মান অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে৷ সৌদি জোট ইয়েমেনেজার্মানির তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করছে, এ বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে নেই বলে জানায় সরকার৷

অস্ত্র বিক্রির সময় জার্মান প্রতিষ্ঠানগুলো বিক্রেতাদের কাছ থেকে ‘এন্ড ইউজার সার্টিফিকেট' নামে একটি চুক্তি করে থাকে, যেখানে বলা হয়, বিক্রিত এ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ করা হবে এবং অন্য কোনো পক্ষের কাছে সরবরাহ করা হবে না৷

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেলের মুখপাত্র উলরিকে ডেমার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে নতুন কোনো মন্তব্য না করে এ বিষয়ে সরকারের আগের অবস্থানই পুনর্ব্যক্ত করেন৷ তিনি বলেন, মানবাধিকার বিষয়ে জার্মান সরকার সবসময়ই সচেতন থাকে৷ কেউ যদি অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় বিষয়ক চুক্তি লঙ্ঘন করে তাহলে সরকার তা সতর্কতার সাথেই বিবেচনা করে, বলেন ডেমার৷

তবে ইয়েমেনে সৌদি সামরিক জোটের জার্মান অস্ত্র ব্যবহার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার এ নিয়ে কোনো তদন্ত করবে কিনা, সে বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি কিছু বলেননি৷

রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়া

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলো ইয়েমেনে হামলায় সৌদি জোটের জার্মান অস্ত্র ব্যবহারের এ বিষয়টিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে৷ দেশটির সবুজ দলের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র অমিড নওরিপোর ডয়চে ভেলেকে বলেন, সরকার এতদিন ধরে জার্মান অস্ত্র রপ্তানি বিষয়ে যে সকল তথ্য দিয়েছে, তা মোটেও সঠিক নয়৷ অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে জার্মান সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এবং এ বিষয়টি জনগণের কাছে সরকারের স্বীকার করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি৷ নওরিপোর বলেন, জার্মানির উচিত সৌদি আরবের সাথে সব ধরণের কৌশলগত সম্পর্ক চিরতরে ছিন্ন করা৷

অভিযোগ পুরনো!

জার্মানির বিরুদ্ধে অস্ত্র রপ্তানির মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ বেশ পুরনো বলে দাবি করছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো৷ যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার সংস্থা ‘ক্যাম্পেইন অ্যাগেইনস্ট আর্মস ট্রেড' এর মুখপাত্র অ্যান্ড্রু স্মিথ ডয়চে ভেলেকে বলেন, জার্মানি দীর্ঘদিন ধরেই মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, এমন দেশের কাছে অস্ত্র রপ্তানি করছে৷ যুদ্ধবিমানগুলো না পেলে হয়তো ইয়েমেনের উপর এ হামলা হতো না৷''

জার্মানিতে তৈরি অস্ত্র সৌদি সামরিক জোট ইয়েমেনে হামলা চালাতে ব্যবহার করছে এমন দাবি করে ‘বার্লিন ইনফরমেশন সেন্টার ফর ট্রান্স-আটলান্টিক সিকিউরিটি'র পরিচালক অটফ্রিড নাসাউর বলেন, এটি প্রমাণিত যে সৌদি জোট ইয়েমেনে হামলায় জার্মানিতে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করছে, যা জার্মানির অস্ত্র বিক্রয় চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন৷

কীভাবে দায় এড়াবে জার্মানি?

নাসাউর বলেন, জার্মান আইন অনুযায়ী অস্ত্র ক্রেতার বিরুদ্ধে যদি চুক্তি ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে জার্মানি থেকে অস্ত্র কেনার বিষয়ে তাকে আর অনুমতি প্রদান করা যাবে না৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘জার্মান অস্ত্র ব্যবহার করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনাতেই এ আইন মানতে দেখিনি আমি৷''

সংবাদ মাধ্যমে জার্মান অস্ত্র রপ্তানি বিষয়ে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর রাজনৈতিক দলগুলো অস্ত্র রপ্তানির বিষয়ে জার্মান সরকারকে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের জন্য তাগিদ দিয়েছে৷ তবে নাসাউর মনে করেন, এ আইন এমনভাবে সুনির্দিষ্ট হওয়া উচিত যেন এর স্পষ্ট প্রভাব দেখা যায়৷

বেন নাইট/আরআর