1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে জীবনযাত্রা পাল্টান

৩০ নভেম্বর ২০১০

উচ্চ রক্তচাপের মতো নীরব ঘাতক হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক পর্যন্ত ঘটাতে পারে৷ এর চিকিৎসার জন্য এতোদিন ব্যবহৃত হয়ে আসছে নানা ধরণের ওষুধ৷অথচ বিজ্ঞানীরা বলছেন, জীবনযাত্রার পদ্ধতি পাল্টে ফেলেও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷

https://p.dw.com/p/QLRF
রক্তচাপ পরীক্ষা (ফাইল ফটো)ছবি: picture-alliance/OKAPIA/Klaus Rose

জার্মান কার্ডিয়াক সোসাইটি'র হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ভল্ফরাম ডেলিউস বলছেন, প্রত্যেকেরই উচিত নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা৷ কেননা কোনো ধরণের লক্ষণ ছাড়াই যখন তখন উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিতে পারে৷ রক্তচাপ নিচে ৯০ এবং উপরে ১৪০'র মাত্রা পেরিয়ে গেলে তাকে হাইপারটেনশন হিসেবে অভিহিত করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা৷ আর যারা ইতোমধ্যে এই শ্রেণীতে পড়েছেন তাঁদের উচিৎ যত দ্রুত সম্ভব রক্তচাপ কমানোর চেষ্টা করা৷

জার্মানির হালটার্ন আম জে শহরের লেখক এবং ডাক্তার রামোন মারটিনেজ বলছেন, যখন রক্তচাপ অনেক বেশি বেড়ে যায় তখন সবসময় ওষুধ খাওয়া এড়িয়ে চলা সম্ভব নয়৷ বরং যখন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে তখন মানুষ এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে৷

জার্মানির কোলনে অবস্থিত জার্মান স্পোর্টস ইউনির্ভার্সিটির ইনস্টিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ অ্যান্ড স্পোর্টস মেডিসিনের চিকিৎসক উরজুলা হিলডেব্রান্ড বলছেন, ‘‘অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া হাইপার টেনশনের প্রাথমিক কারণ৷ যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন তাঁদের ত্রিশ শতাংশই মোটা৷'' তিনি আরও জানান, এক কিলো ওজন কমানোর সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ উপরে ২ এবং নিচে ১ মাত্রা করে কমে আসে৷ এই হিসেবে দশ কিলো ওজন কমালে রক্তচাপ বিশ মাত্রা পর্যন্ত কমে যেতে পারে৷ তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা৷ যেমন, প্রাণীজ চর্বি কম খাওয়া, মাংসের পরিবর্তে মাছ খাওয়া, উদ্ভিজ তেল খাওয়া এবং ময়দার পরিবর্তে আটার রুটি খাওয়া৷

ডাক্তার মারটিনেজ অবশ্য এরসঙ্গে প্রতিদিন বার পাঁচেক টাটকা ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন৷ তিনি বলছেন, ‘‘এটা শরীরে পটাশিয়ামের মাত্র বাড়িয়ে দেয়৷ আর পটাশিয়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে৷''

অতিরিক্ত লবণ খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের জন্য ঝুঁকি বয়ে আনতে পারে৷ ডাক্তার ডেলিউস বলছেন, ‘‘বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, আমাদের শরীরের জন্য যে পরিমণন লবণ প্রয়োজন তার চাইতে আমরা অনেক বেশি লবণ খাচ্ছি৷'' তিনি আরও বলেন, কেউ যদি প্রতিদিনের খাবার হতে চিরদিনের জন্য পাঁচ থেকে ছয় গ্রাম লবণ কমাতে পারেন তাহলে তাঁর রক্তচাপ সাত মাত্রা পর্যন্ত কমে যেতে পারে৷ আর তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই পার্থক্যটা দেখা যায়৷

শরীরচর্চাও এক্ষেত্রে সাহায্য করতে পারে৷ বললেন ডাক্তার হিলডেব্রান্ড৷ তিনি বলেন, আমরা নর্ডিক ওয়াকিং, সাইকেল চালানো বা সাঁতারকাটার মতো পরিমিত অ্যারোবিক শরীরচর্চার পরামর্শ দিয়ে থাকি৷ হিলডেব্রান্ড আরও বলেন, যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী সুফল পেতে চাইলে তাঁদের সপ্তাহে তিন থেকে চারদিন আধাঘন্টা ব্যায়াম করা উচিত৷ প্রাত্যহিক শরীরচর্চা রক্তচাপ দশ মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে৷ সেইসঙ্গে বিরত থাকতে হবে ধূমপান ও মদ্যপান থেকে৷

তবে বংশগত ধারাকে উপেক্ষা করার উপায় নেই৷ ডেলিউস বলেন, বাবা বা মা কারোও যদি রক্তচাপ উঁচু থাকে তাহলে সন্তানদের মধ্যে এর ঝুঁকি থেকে যায়৷ তাই এইসব সন্তানদের অল্প বয়স থেকেই স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খাওয়া এবং শরীরচর্চার অভ্যাস করা উচিত৷ অন্যদিকে অ্যামেরিকার একটি গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ২ দশমিক ৭ গ্রাম করে রসুন খাওয়া রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে৷

প্রতিবেদন: জান্নাতুল ফেরদৌস

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক