1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উদ্ভিদের মাধ্যমে খনিজ উপাদান উত্তোলনের প্রচেষ্টা

৯ আগস্ট ২০২১

মোবাইল ফোন, ইলেকট্রিক গাড়ির ইঞ্জিনের মতো অনেক হাইটেক যন্ত্রপাতি তৈরির জন্য কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের প্রয়োজন হয়৷ কিছু উদ্ভিদের মাধ্যমে মাটি থেকে সেই সব উপাদান সস্তায় সংগ্রহের অভিনব প্রচেষ্টা চলছে৷

https://p.dw.com/p/3yjjj
ফাইল ফটোছবি: Imago/blickwinkel

জার্মানির স্যাক্সনি রাজ্যের ফ্রাইব্যার্গ শহরের এক বাগানে এলোমেলোভাবো সাজানো গাছপালাগুলির আসলে বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে৷ অত্যন্ত ভেবেচিন্তে সেগুলি বাছাই করা হয়েছে৷ জীববিজ্ঞানী হিসেবে ড. অলিভার ভিশে বলেন, ‘‘আমরা এখানে যেটা করছি, তার নাম ফাইটোমাইনিং, অর্থাৎ গাছপালার খনি৷ এর অর্থ, ভুট্টার মতো সাধারণ গাছের সাহায্যে মাটি থেকে জার্মেনিয়াম, রেয়ার আর্থ, গ্যালিয়াম, তামা এবং দস্তার মতো লাভজনক উপকরণ আহরণ করতে চাই৷'' 

গোটা গ্রীষ্মকাল জুড়ে ভুট্টার গাছ কতটা সফলভাবে সেই দায়িত্ব পালন করেছে, এবার তা পরখ করার পালা৷ কারণ এবার শস্য তোলা হচ্ছে৷ জীববিজ্ঞানী হিসেবে ড. অলিভার ভিশের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ এক দিন৷ তিনি ফ্রাইব্যার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই প্রকল্পের উদ্যোক্তা৷ কিন্তু প্রশ্ন হলো, গাছপালা কেন খনির ভূমিকা পালন করবে? ভুট্টার ক্ষেত্রে প্রকৃতির একটি ত্রুটি কাজে লাগানো হচ্ছে৷

ড. ভিশে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘‘ভুট্টা আসলে সিলিকন গ্রহণ করতে চায়৷ সামগ্রিকভাবে ঘাস হলো সিলিকন অ্যাকুমুলেটর৷ অর্থাৎ ঘাস মাটি থেকে সিলিকন শুষে নিয়ে সেটিকে রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করে৷ ঘাসের পাতায় সেই সিলিকন জমা হয়ে ক্ষুদ্র পাথরের মতো বস্তু সৃষ্টি হয়৷ পশুপাখি সেই ঘাস খেতে এলে সেই পাথর সুরক্ষা দিতে পারে৷ বিশেষ পরিবহণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সিলিকন গ্রহণ করা হয়৷ প্রকৃতির খামখেয়ালিপনার দৌলতে সেই প্রক্রিয়া সিলিকন ও জার্মেনিয়ামের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে না৷''

পরীক্ষামূলক বাগানে গাছপালার এমন এলোমেলো বিন্যাসের কারণ না হয় জানা গেল৷ ভুট্টার কাজ জার্মেনিয়াম আহরণ করা৷ বাজরাও সেই কাজ করে৷ অন্যদিকে সূর্যমুখী ও বকহুইট নিজস্ব পাতা ও ডালপালায় রেয়ার আর্থ জমা করে৷

কিন্তু এমন সব উপাদানের কেন প্রয়োজন হয়? বিশেষ এক ধরনের রাসায়নিক গোষ্ঠীর ১৬টি উপাদানকে রেয়ার আর্থ বলা হয়৷ মোবাইল ফোন, এলসিডি স্ক্রিন থেকে শুরু করে ইলেকট্রিক ইঞ্জিন ও বায়ুচালিত বিদ্যুৎ প্লান্টেও সেগুলি ব্যবহার করা হয়৷ 

বিশ্বের প্রথম সুড়ঙ্গ খেত

মোবাইল ফোন, কেবেল বা নাইট ভিশন ডিভাইসের মতো হাইটেক পণ্যের মধ্যে জার্মেনিয়ামও থাকে৷ জার্মেনিয়াম অত্যন্ত দামী উপাদান৷ বর্তমানে এক কিলোর দাম প্রায় ২,০০০ ইউরো৷ তাই আরও সস্তার কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন উপাদান সংগ্রহের প্রচেষ্টা মোটেই বিস্ময়কর নয়৷

গোটা প্রক্রিয়া এভাবে চলে৷ ভুট্টা বিভ্রান্ত হয়ে শিকড়ের মাধ্যমে মাটি থেকে সিলিকনের বদলে জার্মেনিয়াম সংগ্রহ করে৷ তারপর সেই জার্মেনিয়াম পাতা পর্যন্ত পৌঁছে যায়৷ সেখানে সিলিকনের মতো জার্মেনিয়ামও কোষের প্রাচীরে জমা হয়৷

একই প্রক্রিয়ায় জোয়ারও জার্মেনিয়াম সংগ্রহ করে৷ সূর্যমুখী ও বাকহুইট অন্য এক কৌশল প্রয়োগ করে৷ স্বাস্থ্যকর এই শস্যের মাটি থেকে রেয়ার আর্থ সংগ্রহের অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে৷

স্টেফানি ক্র্যুগার/এসবি