1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

উন্নত বিশ্বে ‘সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল’

৩০ আগস্ট ২০১৯

পাঁচ বছর আগে ব্রিটিশ এক নারীকে হত্যা করেছিল ১৩ ও ১৪ বছরের দুই কিশোরী৷ তাদের বিরুদ্ধে মামলা চলার সময় অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের হুমকি দিয়েছিলেন৷ এই ঘটনায় নতুন করে মামলা শুরুর নির্দেশ দেয়া হয়েছিল৷

https://p.dw.com/p/3OkPf
ছবি: imago images/ZUMA Press/I Alexopoulos

মামলা চলাকালীন সংবাদপত্রে সঠিকভাবেই তার খবর ছাপা হচ্ছিল৷ কিন্তু সেই খবরগুলো সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে মামলার জন্য ক্ষতিকর মন্তব্য প্রকাশ করেছিলেন অনেকে৷ বিচারকেরা সেসব মন্তব্য পড়ে নিরপেক্ষ থাকতে পারছেন কিনা, সেই আশঙ্কায় মামলা পরিচালনা থেকে একজন বিচারককে সরিয়ে দেয়া হয়েছিল৷ 

ঐ ঘটনার পর আদালতে চলা মামলার উপর সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্যের প্রভাব কতখানি, তা জানতে একটি কমিটি গঠন করেছিল ব্রিটেনের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়৷ সেই কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের শুরুতে ফেসবুক, টুইটার ও গুগলের সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটিশ কর্মকর্তারা৷ এতে মামলা চলাকালীন ক্ষতিকর মন্তব্য দ্রুত মুছে ফেলতে সম্মত হয় সামাজিক মাধ্যমগুলো

ঐ সময় ইংল্যান্ডের সলিসিটর জেনারেল ছিলেন রবার্ট বাকল্যান্ড, যিনি বর্তমানে দেশটির বিচার প্রতিমন্ত্রী৷ সেই সময় বাকল্যান্ড বলেছিলেন, প্রত্যেক অভিযুক্ত ব্যক্তির নিরপেক্ষ রায় পাওয়ার অধিকার রয়েছে৷ আদালতে উত্থাপন করা তথ্য প্রমাণাদির ভিত্তিতেই মামলার রায় দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্যের কোনো প্রভাব থাকা উচিত নয়৷ আদালত অবমাননার জন্য সাংবাদিকদের যেমন জরিমানা ও সর্বোচ্চ দুই বছরের শাস্তি হতে পারে, সেই আইন সামাজিক মাধ্যমব্যবহারকারীর জন্যও প্রযোজ্য বলে জানিয়েছিলেন বাকল্যান্ড৷

অবশ্য তিনি বলেছিলেন, মামলার উপর সামাজিক মাধ্যমের প্রভাব এতটা বেড়ে যায়নি যে, তা ঠেকাতে নতুন আইন করতে হবে৷

এবার আসি হলিউড প্রযোজক হার্ভি ওয়াইনস্টিনের কথায়৷ তাঁর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা শুরু হওয়ার অপেক্ষায়৷ কিন্তু তার আগে ওয়াইনস্টিনের আইনজীবারা মামলার স্থান পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন৷ কারণ তাঁরা বলছেন, গণমাধ্যমের খবর ও সামাজিক মাধ্যমের পোস্টের কারণে নিউ ইয়র্কে ‘সার্কাসের মতো পরিবেশ' ও ‘উন্মত্ত' পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ এই অবস্থায় বিচারকদের পক্ষে নিরপেক্ষ রায় দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে৷

এই দুই ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ট্রায়াল'এর ঘটনা উন্নত দেশেও হয়ে থাকে৷ 

DW Bengali Mohammad Zahidul Haque
জাহিদুল হক, ডয়চে ভেলেছবি: DW/Matthias Müller

কোনো মামলার রায় দেয়ার একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে আদালতে উপস্থিত তথ্যপ্রমাণাদি৷ কিন্তু বিচারকরা যদি সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশিত মন্তব্য কিংবা সামাজিক মাধ্যম থেকে পাওয়া কোনো তথ্যে প্রভাবিত হন, তাহলে নিরপেক্ষ রায় দেয়া সম্ভব হতে পারে না৷ সে কারণে ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় এক মামলা চলার সময় গুগলে অভিযুক্তদের খোঁজায় দুই বিচারকের প্রত্যেককে তিন হাজার ডলার করে জরিমানা করা হয়েছিল৷

সামাজিক মাধ্যমের এই যুগে মানুষ তার মতামত, আবেগ প্রকাশ করবেই৷ আইনজীবীদের পক্ষে সেসব থেকে দূরে থাকা অনেক কঠিন৷ তাই সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদেরই সচেতন হয়ে মামলায় প্রভাব বিস্তার করতে পারে এমন মন্তব্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে৷

প্রিয় পাঠক, আপনার কি কিছু বলার আছে? লিখুন নীচের মন্তব্যের ঘরে৷