1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

অর্থাবাবে উইকিলিক্স

২৩ জুলাই ২০১২

মার্কিন গোপন নথি ইন্টারনেটে প্রকাশ করে সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল উইকিলিক্স৷ বর্তমানে এই সংস্থাটি অর্থকষ্টে ভুগছে৷ গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে উইকিলিক্স জানিয়েছে, হাতে আছে মাত্র এক লাখ ইউরো৷

https://p.dw.com/p/15dEI
ছবি: Reuters

ইরাক যুদ্ধের গোপন দলিল প্রকাশ দিয়ে আলোচনার শুরু৷ উইকিলিক্স ইন্টারনেটে ২০০৪ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত সময়কালের ইরাক যুদ্ধের গোপন দলিল প্রকাশ করে৷ ২০১০ সালে প্রকাশিত এই দলিল থেকে জানা যায়, ইরাকি পুলিশ এবং সেনাদের নানা অপকর্ম তদন্তে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে মার্কিন বাহিনী৷ এমনকি ইরাকি কর্তৃপক্ষও মার্কিন বাহিনীর নানা অভিযোগ খুব একটা আমলে নেয়নি৷ বরং ইরাকিরাই ইরাকিদের হত্যায় অবদান রেখেছে৷ শুধু তাই নয়, ইরাক যুদ্ধে ইরানের সম্পৃক্ততাও দেখা যাচ্ছে গোপন দলিলে৷ বিশেষ করে ইরাকি জঙ্গিদেরকে পরোক্ষ মদদ দিয়েছে ইরান, অভিযোগ এমনটাই৷

London Entscheidung über Auslieferung Julian Assanges SCREENSHOT
বর্তমানে উইকিলিক্স অর্থকষ্টে ভুগছেছবি: picture-alliance/dpa

এরপর কিছুদিন যেতেই আবারও ইন্টারনেটে ‘বোমা ফাটায়' সংস্থাটি৷ এবার মার্কিন কূটনীতির গোপন নথি খোলা বাজারে ছেড়ে দেয় তারা৷ গুগল হ্যাক করার চীনা উদ্যোগ, গুয়ান্তানামো বন্দিদের অন্য দেশে হস্তান্তরে চাপাচাপি, আফগানিস্তানে দুর্নীতি, ইরানে আক্রমণের জন্য সৌদি চাপসহ নানা বিষয়ের মার্কিন গোপন বার্তা ফাঁস করেছে সংস্থাটি৷ এককথায় বলতে গেলে, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৭০ টি মার্কিন দূতাবাসের মধ্যকার গোপন বার্তা প্রকাশ করে দেয় তারা৷

এভাবে খুব দ্রুত আলোচনায় আসে উইকিলিক্স৷ সংস্থাটির সাহসী উদ্যোগের প্রশংসা করেন অনেকে৷ কিন্তু এই সাহসিকতার খেসারত দিতে হয় উইকিলিক্স প্রধান জুলিয়ান আসাঞ্জকে৷ সুইডেনে মামলায় জড়িয়ে আত্মগোপনে চলে যান তিনি৷ এরপর লন্ডনে আইনি লড়াইয়ে হেরে যান, আশ্রয় নেন লন্ডনস্থ ইকুয়েডরের দূতাবাসে৷ অন্যদিকে উইকিলিক্সের আর্থিক লেনদেনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়৷ ফলে অর্থ সঙ্কটের কবলে পড়ে সাড়া জাগানো এই ওয়েবসাইটটি৷

বর্তমানে উইকিলিক্সের ভাণ্ডারে জমা আছে মাত্র এক লাখ ইউরো৷ এই অর্থ দিয়ে আগামী কয়েকমাস হয়ত চলবে৷ এরপর কী হবে? সংস্থাটি গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, জমানো অর্থ শেষ হয়ে যাবে কয়েকমাসের মধ্যেই৷ তাই সংস্থাটিকে টিকিয়ে রাখতে গেলে এখনই প্রয়োজন এক মিলিয়ন ইউরো৷

বলাবাহুল্য, বিশ্বজুড়ে উইকিলিক্সের সমর্থকের সংখ্যা নেহাত কম নয়৷ কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ভিসা এবং মাস্টারকার্ড'এর মাধ্যমে সংস্থাটিকে অর্থ প্রদান সম্ভব নয়৷ এই দুটি সংস্থাই উইকিলিক্সকে নিষিদ্ধের তালিকায় রেখেছে৷ তবে উইকিলিক্স একটি আপাত সমাধান খুঁজে পেয়েছে৷ ফরাসি ক্রেডিট কার্ড সিস্টেম ‘কার্ত ব্ল্যো' এর মাধ্যমে সংস্থাটিকে অর্থ সহায়তা করা যেতে পারে৷

Julian Assange
নানা সমস্যার মুখে পড়েছেন উইকিলিক্স প্রধান জুলিয়ান আসাঞ্জছবি: dapd

উইকিলিক্স অবশ্য সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, ‘‘সকল সমর্থকের প্রতি উইকিলিক্সের পরামর্শ হচ্ছে, আপনারা দ্রুত এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করুন৷ কেননা, ভিসা / মাস্টারকার্ড খুব শীঘ্রই এই পন্থাও বন্ধ করে দিতে পারে৷''

২০১০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের চাপের কারণে উইকিলিক্সের সমস্ত লেনদেন বন্ধ করে দেয় ভিসা এবং মাস্টারকার্ড৷ এরফলে সমর্থকরা চাইলেও সংস্থাটিকে সহায়তা করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়৷ ২০১০ সালের ডিসেম্বরে সংস্থাটির কাছে প্রায় এক মিলিয়ন ইউরো থাকলেও গত জুন মাসে সেটি কমে দাঁড়ায় এক লাখ বিশ হাজার ইউরোতে৷ এই সময়ের মাঝে উইকিলিক্স তিন লাখ পঁচিশ হাজার মার্কিন ডলার খরচ করে বিভিন্ন ক্যাম্পেইন বাবদ৷ এছাড়া পরিকাঠামোগত খাতে ব্যয় করেছে এক লাখ বিশ হাজার মার্কিন ডলারের বেশ৷ আর আইনি পরামর্শের পেছনে সংস্থাটি ব্যয় করেছে আটাশি হাজার মার্কিন ডলার৷

এখন নতুন করে অর্থ সহায়তা না পেলে উইকিলিক্স শীঘ্রই অর্থশূন্য অবস্থায় উপনীত হবে৷ অথচ সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ভিসা/মাস্টারকার্ড অর্থ সহায়তা বন্ধ না করলে তাদের কাছে এখন থাকতো ২০ মিলিয়নের বেশি ইউরো৷

বলাবাহুল্য উইকিলিক্সের অর্থ উপার্জনের অন্যতম উপায় হচ্ছে সমর্থকদের সহায়তা৷ এক্ষেত্রে জার্মানির ওয়াউ-হলান্ড-ফাউন্ডেশন সংস্থাটিকে সহায়তা করেছে৷ তাছাড়া সম্প্রতি আইসল্যান্ডে এক আইনি লড়াইয়ে জয় পেয়েছে উইকিলিক্স৷ এই রায়ের ফলে উইকিলিক্সকে দেওয়া সমর্থকদের অর্থ লেনদেন করতে পারবে ভিসা এবং মাস্টারকার্ডের আইসল্যান্ড পার্টনার ভালিটর৷

এই জয়ের ফলে অবশ্য আশাবাদী হয়ে উঠেছে উইকিলিক্স৷ বিশেষ করে ফ্রান্সে অর্থ লেনদেনের উপরে কোন নিষেধাজ্ঞা জারি হলে সেখানে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে তারা৷ জুলিয়ান আসাঞ্জ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘‘আমরা আইসল্যান্ডে তাদেরকে পরাস্ত করেছি৷ ফ্রান্সেও তাদেরকে পরাস্ত করব৷''

প্রতিবেদন: আরাফাতুল ইসলাম (এএফপি)

সম্পাদনা: সঞ্জীব বর্মন

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য