1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এখন তেলের চেয়ে ট্যাঙ্কের দাম বেশি

২১ এপ্রিল ২০২০

সোমবার এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখলো পুরো বিশ্ব৷ জ্বালানি তেলের দাম যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ঋণাত্মক হয়ে গেছে৷ অর্থাৎ, কেউ কিনলে তাকে উলটো পয়সা দেয়া হবে৷ কেন এমন হলো?

https://p.dw.com/p/3bDXE
ছবি: picture-alliance/AP Photo

এক কথায় বিষয়টিকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়, বিশ্ব এখন জ্বালানি তেলে ভাসছে৷ রাখার জায়গা নেই৷ তাই পয়সা দিয়ে হলেও নেবার লোক খুঁজছে মার্কিন কোম্পানিগুলো৷ যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডাব্লিউটিআই) বা পাতলা অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বেঞ্চমার্ক যাকে বলা হয়, তার দাম (মে মাসের জন্য) সোমবার সকালে ব্যারেলপ্রতি ১৫ ডলার থাকলেও, তা কমে -৪০ ডলার পর্যন্ত হয়ে যায়! এ অবস্থা দেখে মার্কিন তেলের দামের নিয়ন্ত্রক সংস্থা টেক্সাস রেলরোড কমিশনের মাথায় হাত! কমিশনার রায়ান সিটন তো বলেই বসেছেন, ‘‘এমনটাই তো হবার কথা ছিল৷’’ আসলে এমন অবস্থা যে তৈরি হবে তা আগেই ধারণা করা গিয়েছিল৷ সে প্রসঙ্গে পরে আসছি৷ 

এখানে একটি কথা বলা দরকার, তা হলো, এই দাম কিন্তু ‘ফিউচার্স কনট্রাক্টু' বা ভবিষ্যৎ চুক্তি৷ এখানে মে মাসে পরিশোধের জন্য দাম করা হচ্ছিলো৷ যুক্তরাষ্ট্রে ডাব্লিউটিআই-এর বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ফিউচার্স কনট্রাক্টের আওতায় কেনা যায়৷ একেকটি চুক্তি হয় এক হাজার ব্যারেলের৷ তা নয় বছর পর্যন্ত হতে পারে৷ বিশ্ববাজারে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের ক্ষেত্রেও এমন ভবিষ্যৎ দামের আওতায় বাণিজ্য হয়৷

HA Asien | Zobaer Ahmed
যুবায়ের আহমেদ, ডয়চে ভেলে

যা-ই হোক, সবাই যে প্রশ্নটি করছেন তা হলো, এই প্রথম কি এতটা দাম পড়ল? আসলে এর আগেও দামের বিরাট হেরফের হয়েছে৷ তবে এটা সত্য যে, এই ফিউচার্স কনট্রাক্টের ক্ষেত্রে এমন ঘটনা, অর্থাৎ শূন্যের নীচে নেমে যাওয়া এবারই প্রথম৷ তবে কেউ যদি ভেবে থাকেন, শূন্যের নীচে নেমে যাওয়ায় এখন কোম্পানিগুলো সবাই পয়সা দিয়ে বিক্রি করা শুরু করে দিয়েছে, তাহলে ভুল হবে৷ হ্যা, কিছু কিছু কোম্পানি হয়তো করছে৷ কিন্তু সবাই নয়৷ বিশ্লেষকরা এই পড়তি দামকে ‘টেকনিক্যাল' বলতে চান৷ অর্থাৎ ভবিষ্যতের ‘ভবিষ্যৎ চুক্তি'র ওপর এর প্রভাব পড়তে পারে৷ হিসেব বলছে, বেশিরভাগ ক্রেতারা মে মাসের চেয়ে জুনের সরবরাহের দিকে মনোযোগী হয়েছেন৷ তাই মে মাসের এই হাল৷

বিশ্লেষকরা এপ্রিলের শেষ নাগাদ বা মে মাসের শুরুর দিকে সংকট শুরুর কথা আগেই সাবধান করেছিলেন৷ যেহেতু পরিবহণ খাত প্রায় বন্ধ, এ সময়টায় পেট্রোল ও জেট ফুয়েলের ব্যবহার একেবারে কমে গেছে৷

লম্বা পথ পাড়ি দেবার সময় বোতলের পানির চেয়ে খালি বোতল যেমন কখনো কখনো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, তেমনি তেলের চেয়ে তেলের ট্যাঙ্ক হয়ে গেছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ৷ কারণ, ট্যাঙ্ক খালি না হলে পাইপলাইনের বাকি তেল রাখার জায়গা থাকবে না৷ আর রাখার জায়গা না থাকলে সেই তেল হয় সাগরে ভাসিয়ে দিতে হবে, অথবা তেলক্ষেত্র বন্ধ করে দিতে হবে৷ আর সেই ঝুঁকি কোম্পানিগুলো নেবে না, কারণ, তাতে তেলক্ষেত্রটিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে উৎপাদনের হার কমানো যেতে পারে৷ 

সম্প্রতি এসব দিক বিবেচনা করে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে অ্যামেরিকার চাপে ওপেক ও তার মিত্ররা প্রতিদিন ৯.৭ মিলিয়ন ব্যারেল কম জ্বালানি তেল উৎপাদনের চুক্তি করে, যা বৈশ্বিক উৎপাদনের প্রায় ১০ ভাগ৷ কিন্তু তাতেও রক্ষা হলো না ডনাল্ড ট্রাম্পের দেশের৷  যদি এ অবস্থা অনেকদিন চলতে থাকে, তাহলে অপরিশোধিত তেলের মজুদ সক্ষমতা বাড়ানো এবং উৎপাদন কমানো ছাড়া আর কোনো উপায় নেই৷

আর শেষ কথা হলো, আগে পেট্রোলের দাম কমলে জনগণের লাভ হতো৷ এর আগেও যুক্তরাষ্ট্রে গ্যালনপ্রতি (৩.৭ লিটার) এক ডলারে নেমে এসেছিল পেট্রোলের দাম৷ তাতে মানুষ উপকার পেয়েছেন৷ গাড়ি চালিয়ে খুব আরাম পেয়েছেন৷ এখন লকডাউনে গাড়ি চালাবারও উপায় নেই৷ তাই এই দাম কমায় সাধারণেরও লাভ নেই৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য