1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এত মৃত্যুর আশঙ্কা এড়াতে পারবে ইরান?

১৮ মার্চ ২০২০

গত ৫০ বছরে একবারও না চাইলেও এবার বাধ্য হয়ে আইএমএফ-এর কাছে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে ইরান। করোনা ভাইরাস ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে দেশটিকে৷

https://p.dw.com/p/3ZdHe
ছবি: DW/G. Kakar

নভেল করোনা ভাইরাস মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশকে 'মৃত্যুপুরী' বানাতে পারে - এ আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছে।

আশঙ্কা বাড়ার কারণ আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘাটতি, সরকারি অব্যবস্থাপনা আর সংকট নিরসনের কাজে নেতৃত্ব কে দিচ্ছেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা।

এদিকে নভেল করোনায় সংক্রমণ এবং তার ফলে মৃত্যু বেড়েই চলেছে। সরকারিভাবে ১৬ হাজার মানুষের সংক্রমিত হওয়া এবং ৯৮৮ জনের মৃত্যুর তথ্য দেয়া হলেও প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঝুঁকিপূর্ণ সব এলাকা কোয়ারেন্টিনের আওতায় না নিলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ইরানে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

নেতৃত্ব নিয়ে ধোঁয়াশা, কোয়ারান্টিনে অনীহা

ইরানে বেশিরভাগ মানুষই কোয়ারেন্টিন মানছেন না। রাজধানী তেহরানের অবস্থা দেখলেই পুরো দেশের চিত্রটা বোঝা যাবে। সরকারের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত তেহরানেই করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

কয়েকদিন আগে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি সেনাবাহিনীকে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরুর আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে গত রবিবার আরেক বার্তায় তিনি সেনাবাহিনীকে প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এবং তার সরকারের পরামর্শ মতো কাজ করতে বলেন।

জনগণের মনে এক ধরনের অনীহা থাকার ফলে তেহরানে অনেকেই এখনো কোয়ারেন্টিনে যাচ্ছেন না। তেহরানের মেয়র পিরুজ হানাচি কোনো রাখঢাক ছাড়া নিজেদের অক্ষমতা স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন, "তেহরানকে কোয়ারেন্টিনে নেওয়ার সামর্থ্য বা ক্ষমতা আমাদের নেই।'‘ অক্ষমতার কারণ হিসেবে তিনি অবশ্য ইরানের উপর আরোপ করা অর্থনৈতিক অবরোধের কথা উল্লেখ করেন, "আমরা কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষদের দেখভাল করতে পারবো না, কেননা বিষয়টি অবরোধের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। "

কোমে দ্রুত বাড়ছে কবর

কোম শহর থেকে করোনায় প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৯ ফেব্রুয়ারি। তারপর থেকে ওই শহরের পরিস্থিতি বাইরের দুনিয়া খুব একটা জানতে পারেনি। গত ১২ মার্চ ওয়াশিংটন পোস্ট স্যাটেলাইট থেকে তোলা একটি ছবি প্রকাশ করে। সেখানে দেখা যায়, কোম শহরের কবরস্থানের পাশের কয়েক একর জমিতেও খোঁড়া হয়েছে অনেকগুলো নতুন কবর। সেখানে কবর দেয়াও চলছে পুরোদমে৷

শিয়া অধ্যুষিত দেশ ইরানের এই শহরের বেশিরভাগ মানুষ ধর্মীয় বিধি-নিষেধ খুব কঠোরভাবে মেনে থাকেন। করোনার প্রকোপ বাড়ায় বিশ্বের অনেক মুসলিমপ্রধান দেশেই জুম্মার নামাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু কোম শহরের ফাতিমা মাসুমেহ মাজার অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা যায়নি। সোমবার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে মাজারের অনুসারীরা।

করোনার বিরুদ্ধে অবাস্তব 'সেনা-হুঙ্কার'

কয়েকদিন আগে ইরানের সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ মোহামেদ বাঘেরি বলেছিলেন, তিনি ১০ দিনের মধ্যে দেশকে করোনামুক্ত করবেন।

তবে তেহরানের শরিফ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা বলছেন, খুব দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা না নিলে আগামী এক সপ্তাহে ইরানে মৃতের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়াতে পারে।

কোনো কোনো গবেষকের আশঙ্কা এর চেয়েও ভয়াবহ৷ তারা মনে করেন, ইরান আগামী মে মাস পর্যন্ত থাকতে পারে করোনার কবলে এবং সেরকম হলে মৃতের সংখ্যা ৩৫ লাখ হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

শবনম ফনহাইম/এসিবি/কেএম