1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এবারের নির্বাচনে দল বদলের রাজনীতি

২৭ নভেম্বর ২০১৮

ড. কামাল হোসেনের বিএনপি'র সঙ্গে জোট গঠনের পর, কাদের সিদ্দিকীর ঐক্যফ্রন্টে এবং বি চৌধুরীর মহাজোটে যোগদান আলোচনায় ছিল৷ তবে সম্প্রতি আওয়ামী লীগ নেতা আবু সাইয়িদ এবং গোলাম মাওলা রনি'র দল বদল আরো আলোচনার জন্ম দিয়েছে৷

https://p.dw.com/p/38yeq
Bangladesch Dhaka Diskussionen politischer Parteien
ছবি: bdnews24.com/Abdullah Al Momin

এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি'র মনোনয়ন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে৷ তবে এর মধ্যে দল বদলের খেলা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে তাঁরা সে বিষয়ে মতামত জানিয়েছেন৷ ভোটের আগে দল বদলের পালায় শেষ নামটি পটুয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি, যিনি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন৷

প্রযোজক লস্কর নিয়াজ ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, ‘‘এবারের নির্বাচনকে অলিম্পিকের আসর মনে হচ্ছে৷ খেলা শুরু হয়েছে জিমন্যাস্টিকস দিয়ে৷ প্রথম রাউন্ডে সব দলের খেলোয়াড়রা ডিগবাজি প্রদর্শণ করছে৷ যারা প্রথম রাউন্ডে নির্বাচিত হয় নাই, তাদের কেউ কেউ আবার কান্নাকাটি করছেন৷ এত বড় আসরে এরকম একটু-আধটু হয়৷ এর পরে শুরু হবে হাই জাম্প, লং জাম্প৷''

সাংবাদিক মাসুদ কামাল প্রশ্ন তুলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ভাগ্নে'র মনোনয়ন নিয়ে৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘পটুয়াখালী-৩ আসনের বর্তমান এমপি খ ম জাহাঙ্গীর৷ ইনি একাধিকবার এমপি ছিলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন, ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক৷ কিন্তু এবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি, পেয়েছেন এস এম শাহজাদা৷ কে এই শাহজাদা? আওয়ামী লীগের কোন পর্যায়ের নেতা তিনি? তিনি কি বড় কোনো সমাজসেবক? না, এসবের কোনোটাই নয়৷ তার পরিচয় হচ্ছে, তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদা'র ভাগ্নে! সিইসির ভাগ্নে পরিচয়টি শাহজাদার মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ছিল কিনা– সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করেছিল খ ম জাহাঙ্গীরকে৷ জবাবে তিনি বলেন, ‘এর বাইরে তার কোনো পরিচয় আছে বলে আমার জানা নেই৷' সিইসি মামা'র পরিচয়ের জোরে যদি মনোনয়ন পাওয়া যায়, তাহলে সেটা কি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নিরপেক্ষতার জন্য কিছুটা হলেও ঝুঁকির কারণ হবে না?''

বাংলাভিশনের বার্তা প্রধান মোস্তফা ফিরোজ আওয়ামী লীগ নেতা নানককে মনোনয়ন না দেয়ার বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন, ‘‘নানক ভাই দলের মনোনয়ন না পাওয়ায়আমি দুঃখিত হয়েছি, কেননা, আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তিনি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রনেতা ছিলেন৷ কাছ থেকে দেখেছি তাকে৷ সাবেক এই ছাত্রনেতার কাছ থেকে শেখার আছে দলীয় অন্য নেতা কর্মীদের৷'' এছাড়া গোলাম মাওলা রনি'র বিএনপিতে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, ‘‘আওয়ামী লীগ বলয়ের রাজনীতিকরা এতদিন যাচ্ছিলেন গণফোরামে, কিন্তু গোলাম মাওলা রনি কেন সরাসরি বিএনপিতে?'' 

গোলাম মাওলা রনির বিএনপিতে যোগদান প্রসঙ্গেমাহমুদুল হাসান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘দুইদিন আগে ‘গোলাম মাওলা রনি' তৃতীয় মাত্রায় তারেক জিয়াকে টিটকারি করে বললো ‘লাদেনের মতো গুহা থেকে দল চালায়', আজ সে বিএনপিতে যোগ দিলো শুধুমাত্র একটা এমপি পদের জন্য৷''

একই প্রসঙ্গে মনোয়ার রুবেল লিখেছেন, ‘‘গোলাম মাওলা রনি দীর্ঘদিন ধরে একটা সুযোগ ধরে রেখেছিলেন৷ তিনি কোনো রাখঢাক ছাড়াই জামায়াত নেতাদের প্রতি তার অনুরাগ লেখায় প্রকাশ করতেন৷ যেহেতু তিনি আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত ছিলেন, তবু বিএনপিতে যোগদান নিয়ে কিছু আওয়ামী লীগারের ক্রন্দনের কারণ বুঝলাম না৷''

আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদের ঐক্যফ্রন্টে যোগদান প্রসঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তেমন আলোচনা না হলেও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন সাইয়িদের গণফোরামে যোগদান নিয়ে কোনো ‘মাথাব্যথা নেই'  তাঁদের৷

শামসুদ্দীন হীরা লিখেছেন, ‘‘অনেকের গ্রিন সিগনালও রেড হয়ে যায়! বি. চৌধুরী নৌকায়, সাবেক তথ্যমন্ত্রী আবদুল্লা আবু সাইয়িদ ঐক্যফ্রন্টে! গোলাম মাওলা রনি বিএনপিতে! আরো কত কি দেখবো খোদা!!''

কল্লোল মোস্তফা লিখেছেন রেজা কিবরিয়ার ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়া প্রসঙ্গে, ‘‘সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা শাহ এ এম এস কিবরিয়ার ছেলে অর্থনীতিবিদ রেজা কিবরিয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হতে চান৷ তিনি হবিগঞ্জ-১ (নবীগঞ্জ-বাহুবল) আসনে প্রার্থী হতে গণফোরামে যোগ দিয়েছেন৷  আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছেড়ে তিনি ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী কেন হলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে রেজা কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেছিন, আওয়ামী লীগ বিগত ১০ বছর ধরে যেভাবে দেশ পরিচালনা করছে, তার সঙ্গে তিনি একমত নন৷ তাঁর আদর্শের সঙ্গে মিল নেই৷''

তবে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার সময় রেজা কিবরিয়া আরো বলেছেন,  তিনি মনে করেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারবেন কামাল হোসেন এবং তরুণ প্রজন্মের কাছে আদর্শের বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন তিনি৷

নিজের বাবার দলআওয়ামী লীগেযোগ না দিয়ে ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বাবার মতো তিনিও দলের চেয়ে দেশের স্বার্থে কাজ করতে চান৷

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে শাহ এ এম এস কিবরিয়া গ্রেনেড হামলায় নিহত হন৷ সেই হত্যাকাণ্ডের আসামি বিএনপির নেতা-কর্মীরা৷ ঐক্যফ্রন্টও এবার বিএনপির মার্কা ধানের শীষ নিয়েই লড়বে৷ বাবার খুনিদের প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে রেজা কিবরিয়া বলেছেন, ‘‘খুনিরা কোনো দলের হয় না৷'' বাবার হত্যার জন্য কোনো দলকে দায়ী করতে চান না জানিয়ে খুনি সন্ত্রাসীদের বিচারও চেয়েছেন রেজা কিবরিয়া৷ সেই সময় আক্ষেপ করে তিনি আরো বলেন, তাঁর বাবার হত্যার বিচার করার দায়িত্ব ছিল সরকারের, কিন্তু বিএনপি দুই বছরও আওয়ামী লীগ ১০ বছর ক্ষমতায় থেকেও বিচার করেনি৷

সংকলন: অমৃতা পারভেজ

সম্পাদনা: আশীষ চক্রবর্ত্তী

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য