1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

এর্দোয়ান বিতর্কে ও্যজিল, গুনডোয়ান

১৫ মে ২০১৮

জার্মান জাতীয় দলের দুই ফুটবল তারকা মেসুট ও্যজিল ও ইলকায় গুনডোয়ান রবিবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইয়্যেপ এর্দোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন৷ এই সময় তাঁরা তুর্কি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ছবি তুলে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন৷

https://p.dw.com/p/2xjpy
ছবি: picture-alliance/dpa/Uncredited/Presdential Press Service

জার্মান ফুটবল ফেডারেশন, ডিএফবির প্রেসিডেন্ট রাইনহার্ড গ্রিন্ডেল টুইটারে লিখেছেন, ‘‘ফুটবল এবং ডিএফবি যেসব মূল্যবোধ ধারণ করে, জনাব এর্দোয়ান সেগুলো পুরোপুরি গ্রহণ করেননি৷ ফলে আন্তর্জাতিক ফুটবলারদের তাঁর (এর্দোয়ানের) নির্বাচনি প্রচারণায় নিজেদের ব্যবহৃত হতে দেয়ার বিষয়টি ঠিক নয়৷ এই কাজটি করে আমাদের খেলোয়াড়রা ইন্টিগ্রেশন বিষয়ে ডিএফবির করা কাজে সহায়তা করেননি৷’’

উল্লেখ্য, ও্যজিল ও গুনডোয়ান দুজনই জার্মানির গেলসেনকির্শেন শহরে জন্মগ্রহণ করেছেন৷ তবে তাঁরা দুজনই তুর্কি বংশোদ্ভূত৷ বৈঠকে তাঁদের সঙ্গে আরও ছিলেন এভারটনের ফুটবলার জেংক টসুন৷ তিনিও জার্মানিতে জন্মগ্রহণ করেছেন৷ তবে জাতীয় দল হিসেবে তুরস্ককে বেছে নিয়েছেন তিনি৷

আগামী ২৪ জুন তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে৷ এর্দোয়ান তাতে অংশ নেবেন৷ গত ১৫ বছর ধরে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে তুরস্কে ক্ষমতায় আছেন৷ গতবছর এপ্রিলে গণভোটের মাধ্যমে তুরস্কে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে৷ ২৪ জুনের নির্বাচনে জিতে এর্দোয়ান সেই ক্ষমতা ভোগ করার আশা করছেন৷ বিরোধীরা বলছেন, এর মাধ্যমে এর্দোয়ান স্বৈরাচারী ক্ষমতার অধিকারী হয়ে উঠবেন৷

২৪ জুনের নির্বাচন নিয়ে এর্দোয়ানের জার্মানিতে প্রচারণা চালানোর অনুমতি নেই৷ উল্লেখ্য, জার্মানিতে তুরস্কের অনেক ভোটার বাস করেন৷

রবিবার এর্দোয়ানের সঙ্গে লন্ডনের এক হোটেলে সাক্ষাৎ করেন ও্যজিল ও গুনডোয়ান৷ ইংল্যান্ডে এখন সরকারি সফরে আছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট৷ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ও প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে'র সঙ্গে আজ তাঁর সাক্ষাতের কথা রয়েছে৷

বৈঠকের সময় ও্যজিল ও গুনডোয়ান তুর্কি প্রেসিডেন্টকে তাঁদের সাক্ষর করা আর্সেনাল ও ম্যানচেষ্টার সিটির জার্সি উপহার দেন৷ গুনডোয়ান জার্সির পেছনে লিখেছেন ‘আমার প্রেসিডেন্টের জন্য অগাধ শ্রদ্ধা’৷

Erdogan mit Gündogan
ছবি: picture-alliance/dpa/Uncredited/Presdential Press Service

এর্দোয়ানের নির্বাচনি প্রচারণা দল আলোচিত এই বৈঠকের ছবি শেয়ার করেছে৷

এরপরই ও্যজিল ও গুনডোয়ানের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে৷ জার্মানির গ্রিন পার্টির সাবেক নেতা চেম ও্যজদেমির, যিনি নিজেও একজন তুর্কি বংশোদ্ভূত, এএফপির সাবসিডিয়ারি এসআইডিকে বলেন, ‘‘একজন জার্মান আন্তর্জাতিক ফুটবলারের প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন ফ্রাংক-ভাল্টার স্টাইনমায়ার, তাঁর চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল আর তাঁর সংসদ বুন্ডেসটাগ, যার সদরদপ্তর বার্লিনে, আংকারায় নয়৷’’

শরণার্থীবিরোধী দল এএফডির রাজনীতিবিদ বেয়াট্রিক্স ফন স্টোর্শ বলেছেন, ‘‘গুনডোয়ান কেন জার্মান জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন, যখন তিনি এর্দোয়ানকে তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাবেন?’’

এসব সমালোচনার জবাবে গুনডোয়ান বলেছেন, এই ছবির মাধ্যমে তিনি ‘‘কোনো রাজনৈতিক বিবৃতি দিতে চাননি, তাঁর (এর্দোয়ান) নির্বাচনি প্রচারণার বিষয়টি এখানে আরও গৌণ৷

‘‘জার্মান জাতীয় দলের খেলোয়াড় হিসেবে আমরা ডিএফবির মূল্যবোধ মেনে চলি এবং আমরা আমাদের দায়িত্বের ব্যাপারে সচেতন,’’ বলেন তিনি৷

Erdogan mit Özil
ছবি: picture-alliance/dpa/Presidential Press Service

জার্মান জাতীয় দলের ম্যানেজার অলিভার বিয়েরহোফ জানিয়েছেন, তিনি ঐ দুই খেলোয়াড়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করবেন৷ তবে তিনি বলেন, ‘‘মেসুট ও ইলকায়ের জার্মানির হয়ে খেলা ও আমাদের মূল্যবোধ ধারণের ব্যাপারে আগ্রহ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই৷ তাঁদের কেউই এই ছবির প্রতীকী গুরুত্বের ব্যাপারে সচেতন ছিল না৷ তবে এটা ঠিক হয়নি এবং আমরা বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো৷’’

এদিকে, তুরস্কের ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সের্ভেট ইয়ার্দমিচি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান ফুটবলারদের সঙ্গে ফুটবল নিয়ে কথা বলেছেন৷ ‘‘আমাদের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান ইংল্যান্ড সফর করছেন৷ তিনি ফুটবল খেলতেন এবং তুর্কি ফুটবলারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পছন্দ করেন৷ সেজন্য তিনি রবিবার তাঁদের (ও্যজিল, গুনডোয়ান) সঙ্গে দেখা করে জানতে চেয়েছেন তাঁরা কতগুলো গোল করেছে ইত্যাদি৷’’

এর্দোয়ানের সঙ্গে ও্যজিল, গুনডোয়ানের বৈঠক নিয়ে আরেকটি কারণে বিতর্ক হচ্ছে৷ ২০২৪ সালে ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন করতে চায় জার্মানি ও তুরস্ক৷ তবে তুর্কি ফুটবল ফেডারেশনের সের্ভেট ইয়ার্দমিচি বলছেন, ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজনের সুযোগ পেতে চালানো প্রচারণায় ও্যজিল আর গুনডোয়ানকে কাজে লাগানো হবে না৷

আগামী সেপ্টেম্বরে আয়োজক দেশের নাম ঘোষণা করবে উয়েফা৷

জেডএইচ/এসিবি (এএফপি, ডিপিএ)