1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কর্মীর দেহ নিয়ে তুলকালাম, হোমগার্ডকে চড়

১০ সেপ্টেম্বর ২০২১

রাজনৈতিক সহিংসতার বলি এক কর্মীর মরদেহ হাসপাতাল থেকে আনতে গিয়ে হোমগার্ডকে চড় মারলেন এক বিজেপি নেতা। তুমুল বিতর্ক।

https://p.dw.com/p/409Pp
প্রতীকী ছবি। ছবি: Syamantak Ghosh/DW

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর খুন হন বিজেপি কর্মী অভিজিৎ সরকার। কলকাতার কাঁকুড়গাছির এই রাজনৈতিক কর্মী খুন নিয়ে হইচই কম হয়নি। বিজেপি-র দাবি, তৃণমূল তাকে খুন করেছে। অস্বীকার করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। এখন সিবিআই এই খুনের ঘটনা নিয়েও তদন্ত করছে। তার দেহ এতদিন মর্গে ছিল। কারণ, প্রথমে পুলিশ তার দেহ ময়নাতদন্ত করে। তারপর এই খুন নিয়ে হাইকোর্টে যায় তার আত্মীয়রা। হাইকোর্ট আবার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিতে পারে ভেবে তার দেহ মর্গে রাখা ছিল। সিবিআই সম্প্রতি তার দেহ আবার ময়নাতদন্ত করে। তারপর তারা আদালতে জানায়, দেহ শেষকৃত্যের জন্য দেয়া যেতে পারে।

সেইমতো মাস চারেক পর বিজেপি নেতারা বৃহস্পতিবার তার দেহ আনতে গিয়েছিলেন। সেখানেই গোলমাল। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ থেকে দেহ বের করার সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং, যুব মোর্চার নেত্রী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল, রাজ্য নেতা সজল ঘোষরা হাসপাতালে যান। এই প্রিয়ঙ্কাকেই ভবানীপুরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী করেছে বিজেপি। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, তাদের ঢুকতে বাধা দেয়া হয়। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, প্রক্রিয়াগত কারণে কিছুটা দেরি হচ্ছিল। সেটা নিয়ে বিজেপি নেতারা হইচই শুরু করেন। বিজেপি নেতা দেবদত্ত মাঝি সেখানে কর্তব্যরত হোমগার্ড জিতেন্দ্র শর্মাকে চড় মারেন। পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়।

জিতেন্দ্র উল্টোডাঙ্গা থানার হোমগার্ড। তার এনআরএসে ডিউটি পড়েছিল। জিতেন্দ্রর অভিযোগ, তার কানে ও বুকে আঘাত লেগেছে। তার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাও শুরু হয়েছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ চড় মারার ঘটনাকে সমর্থন করে বলেছেন, ‘‘হোমগার্ডকে মেরেছে, ঠিক করেছে! আমার কর্মীর গায়ে হাত দিলে বুকে পা তুলে দেব!'' দেবদত্তের বক্তব্য, ''ইচ্ছে করে মারা হয়নি। পুলিশ ওখানে দুর্ব্যবহার করছিল। আমাদের আবেগ নিয়ে খেলা করছিল। তাই এই ঘটনা ঘটেছে।'' তারপর প্রশ্ন উঠেছে, আইন নিজের হাতে নেয়ার অধিকার কি এদের আছে?

পুলিশের সাবেক কর্তা সলিল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''রাজনৈতিক দলের কর্মীদের পুলিশকে মারা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক দলের কর্মীরা মনে করে, পুলিশ পেটাতে পারলে রাজনীতিতে উন্নতি হবে। সেকারণে প্রতিদিন এই ঘটনা বেড়ে চলেছে। আগেও হতো। যত দিন যাচ্ছে বাড়ছে।'' তার প্রস্তাব হলো, ''এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার। শাসক বা বিরোধী দলের কেউ পুলিশের গায়ে হাত দিলেই দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা যাবে না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই ব্যবস্থা নিতে হবে।''

সলিল ভট্টাচার্যের মতে, ''প্রশাসনের একটা কথা মাথায় রাখা দরকার, পুলিশকে মারা মানে কিন্তু প্রশাসনের গায়েও হাত তোলা।''

প্রবীণ সাংবাদিক শরদ গুপ্তা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ''পুলিশকে মারা, সহিংসতা এটা কোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি হতে পারে না। পুলিশেরও যেমন অকারণে কারো গায়ে হাত তোলা উচিত নয়। তেমনই কোনো রাজনৈতিক দলের কর্মী বা সাধারণ মানুষের পুলিশের গায়ে হাত তোলা উচিত নয়। দুর্ভাগ্য যে, এখন দুই ধরনের ঘটনাই বাড়ছে। এটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। পুলিশ, রাজনৈতিক কর্মী বা সাধারণ মানুষ অন্যায়ভাবে কাউকে মারলে কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।''

জিএইচ/এসজি(পিটিআই, আনন্দবাজার)