1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কলেরা নিরাময়ে বাংলাদেশি গবেষকের নতুন উদ্ভাবন

১ নভেম্বর ২০১০

বিশ্বের দেশগুলোতে যে কয়টি রোগ এখনও মানবজাতিকে ভুগিয়ে চলেছে তার মধ্যে কলেরা অন্যতম৷ সম্প্রতি এই রোগের জীবাণু নিয়ে একটি নতুন গবেষণায় সাফল্য দেখিয়েছেন বাংলাদেশের বিজ্ঞানী শাহ এম ফারুক৷

https://p.dw.com/p/PvJP
হাইতির কলেরা আক্রান্তরাছবি: AP

জাতিসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডাব্লিউএইচও-র হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর সারা বিশ্বে ১০ লাখেরও বেশি মানুষ কলেরাতে আক্রান্ত হয়৷ এবং এই রোগে প্রাণ হারায় এক লাখেরও বেশি মানুষ৷ মূলত এশিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোতেই এই রোগের প্রকোপ দেখা যায় বেশি৷ কলেরা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণা করে আসছে বাংলাদেশে অবস্থিত আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা আন্তর্জাতিক কেন্দ্র বা আইসিডিডিআরবি৷ এই গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অন্যতম গবেষখ ড. শাহ এম ফারুক সম্প্রতি তাঁর এক গবেষণায় কলেরা জীবাণু নিয়ে এক নতুন তথ্য হাজির করেছেন৷ এতে তিনি ও তাঁর গবেষক দল দেখিয়েছেন যে কলেরার জীবাণু সব ধরণের পানিতেই থাকে৷

তবে এই জীবানুর সবগুলোই কিন্তু কলেরার জন্য দায়ী নয়৷ এর মধ্যে থাকা কিছু সংখ্যক জীবাণু কলেরার বিস্তার ঘটায়৷ গবেষক দলের প্রধান ড. শাহ এম ফারুক তাঁদের এই গবেষণার ব্যাপারে জানান, ভিব্রিও কলেরি একটি ব্যাকটেরিয়া প্রজাতি যা সব ধরণের পানিতেই থাকে৷ এর মধ্যে অল্প কিছু সংখ্যক আসলে কলেরা রোগটি তৈরি করতে পারে৷ এর বাইরে আরও অনেক ভিব্রিও কলেরি জীবাণু আছে যেগুলো কলেরার জন্য দায়ী না৷ তবে সেগুলোর সঙ্গে অনেক ভাইরাসের বিক্রিয়া ঘটে এবং সেগুলোই রোগ ছড়ানোর জীবাণুতে পরিণত হয়৷ এই ভাইরাসের সংক্রমণের প্রক্রিয়া নিয়েই মূলত গবেষণা করেছেন এবং তাতে সাফল্য পেয়েছেন ড. শাহ এম ফারুক৷

Cholera
কলেরার জীবাণু

ভাইরাস আক্রান্ত ব্যাকটেরিয়া কিভাবে কলেরার আক্রমণ ঘটায় সে ব্যাপারে তিনি আরও বলেন,‘‘যেসব ভিব্রিও কলেরির কথা বললাম এসব ব্যাকটেরিয়া দূষিত পানি পানের মাধ্যমে আমাদের পেটের ভেতর ঢুকে৷ এবং পেটের ভেতর এক ধরণের বিষ তৈরি করে যাকে বলে কলেরা টক্সিন৷ অথচ বেশিরভাগ ভিব্রিও কলেরি এটা পারে না৷ যেগুলো পারে সেগুলোর জন্য ডায়রিয়ার মত অসুখ হয় যা আমরা কলেরা বলি৷''

নতুন এই গবেষণার ফলে যেসব জীবাণু ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়েছে৷ গবেষক ড. ফারুক জানান, যে ভাইরাস ব্যাকটেরিয়াকে আক্রমণ করার পর সেগুলোর মধ্যে কি ধরণের পরিবর্তন আসে, এবং এর ফলে সেটি কিভাবে কলেরার বিস্তার ঘটায় সেই প্রক্রিয়াটা আমরা জানতে পেরেছি৷ ফলে সেই জীবানুর বিরুদ্ধে ভ্যাকসিন তৈরিও এখন আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে৷ এই ব্যাপারে ড. শাহ এম ফারুক আরও বলেন, ‘‘যে রোগের অসুখ, সেই রোগের জীবাণুকেই কিন্তু একটু পরিবর্তন করে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়৷ এখন আমরা যেহেতু জীবানুটা জানি, তাই ভ্যাকসিন তৈরি সহজ হবে৷''

কেবল বাংলাদেশ নয়, ভারত পাকিস্তান সহ অনেক উন্নয়নশীল দেশে কলেরার বিস্তার দেখা যায়৷ যেমন কয়েকদিন আগে পাকিস্তানের বন্যার পর সেখানে কলেরার বিস্তার দেখা দিয়েছিল৷ সেখানেও কলেরা নিয়ে কাজ করেছে আন্তর্জাতিক উদরাময় রোগ গবেষণা আন্তর্জাতিক কেন্দ্র আইসিডিডিআরবি৷ বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের নতুন গবেষণার ফলে এসব উন্নয়নশীল দেশগুলো কলেরা প্রতিরোধে আরও এগিয়ে যেতে সাহস পাবে৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: দেবারতি গুহ