1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কিশোরীদের হিজাব নিষিদ্ধে নারীবাদীদের ক্যাম্পেইন

২৪ আগস্ট ২০১৮

জার্মানির স্কুল ও ডে কেয়ার সেন্টারে ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়েদের হিজার পরার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞার দাবিতে একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে টেরস ডে ফেমস নামের একটি নারীবাদী সংগঠন৷

https://p.dw.com/p/33h5J
ছবি: picture-alliance/dpa/F. Gentsch

টেরেস ডে ফেমেস নামের সংগঠনটি মনে করে ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়েদের হিজাব পরতে দেয়া নৈতিকতারোধী৷ ১৮ বছরের কম বয়স থেকে হিজাব পরায় অভ্যস্ত হওয়া মেয়েরা পরবর্তী জীবনে এ বিষয়ে কোনো স্বাধীন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না বলে দাবি এ সংগঠনটির৷

হিজাবকে শুধু ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে দেখছেন না এ নারীবাদীরা৷ তাঁরা বলছেন, হিজাব পরানোর মধ্য দিয়ে সমাজে ‘বৈষম্য ও যৌন বিভাজন' তৈরি করা হচ্ছে৷ ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়েদের হিজাব পরানো শিশু অধিকার লংঘনের শামিল বলেও মন্তব্য করেন টেরেস ডে ফেমেসের পরিচালক ক্রিস্টিয়া স্টলে৷ 

স্বাক্ষর সংগ্রহ

নারীবাদীদের এ ক্যাম্পেইন সমর্থন করে রাজনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকারকর্মীসহ অনেকেই ইতিমধ্যে স্বাক্ষর করেছেন৷ সাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন মানবাধিকারকর্মী এলিস স্ভারজার, জার্মানির টুরিংগেন শহরের মেয়র বরিস পালমার ও ইসলাম ধর্ম বিশেষজ্ঞ আহমেদ মনসুর৷ সংগঠনটির পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী অক্টোবর মাস নাগাদ এক লক্ষ সমর্থনকারীর সাক্ষর সংগ্রহ শেষে এটি্ জার্মানির আইনমন্ত্রী কাটারিনা বারলে'র কাছে জমা দেয়া হবে৷ এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার স্বাক্ষর সংগ্রহ হয়েছে বলে জানা গেছে৷

হিজাব, কিপা কি বৈষম্য, না অধিকার?

হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা নিয়ে জার্মানিতে দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্ক চলছে৷ আদালতের এক রায়ে সম্প্রতি শ্রেণিকক্ষে হিজাব পরার বিষয়ে নিষাধাজ্ঞা জারি করা হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় দেশটিতে বসবাসরত মুসলমানদের মধ্যে৷ ইয়াসমিন অকোটানসয় নামে ইসলামিক স্টাডিজের এক শিক্ষিকা ডয়চে ভেলেকে বলেন, হিজাব পরে শ্রেণিকক্ষে আসা ছাত্রীদের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে৷ নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন ‘‘অনেক ছাত্রী আছেন, যাদের মায়েরা হিজাব না পরলেও তাঁরা হিজাব পরছেন৷'' এতে বোঝা যায় ছাত্রীরা নিজেদের ইচ্ছায় হিজাব পরছেন৷'' তিনি আরো বলেন,‘‘কেউ যদি হিজাব পরে ক্লাসে আসে, এতে আমার কোনো অসুবিধা নেই৷ স্বাধীনভাবে ধর্মীয় বিশ্বাস লালন ও চর্চা করার অধিকার সবার আছে৷'' 

একই মত ব্যাক্ত করেছেন জার্মানির বৈষম্যবিরোধী দপ্তরের পরিচালক বের্নহার্ড ফ্রাংকে৷ তিনি মনে করেন, হিজাব নিষিদ্ধ করা হলে এ বিষয়ক সমস্যাটি কমবে না, বরং বাড়বে৷ ফ্রাংকে বলেন, হিজাব নিষিদ্ধ করার কথা যাঁরা বলছেন, তাঁরা স্কুলছাত্রীদের ধর্মীয় অনুভূতিকে বিবেচনায়  নিচ্ছেন না৷এর মধ্য দিয়ে বৈষম্য আরো বাড়বে৷

এদিকে স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে হিজাব নিষিদ্ধের বিষয়টি জার্মান সংবিধানে দেয়া ‘সকলের সমান অধিকারের' ধারার সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করেন তিনি৷ তিনি বলেন, স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনে হিজাব নিষিদ্ধের বিষয়টি অত্যন্ত জটিল, কেননা এটি স্কুলে মুসলিম ছাত্র-ছত্রীদের সমান অধিকার ভোগ করার বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে৷

আবার স্কুলে মেয়েদের হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তা স্বাধীনভাবে ধর্ম পালন করার বিষয়ে জার্মান সংবিধানে প্রদত্ত মৌলিক অধিকারের সাথেও সাংঘর্ষিক হবে বলে মনে করেন তিনি৷

তবে হিজাব নিষিদ্ধের দাবি আদায়ের বিষয়টি এতটা সহজ হবে না বলে মনে করে টেরেস ডে ফেমেস৷ সংগঠনটির পরিচালক ক্রিস্টিয়া স্টলে বলেন, হিজাব নিষিদ্ধ করার দাবির বিষয়টিতে অনেকেই নিজেদেরকে জড়াতে চান না৷ কেননা, এতে করে তাঁদের গায়ে বর্ণবাদী তকমা লাগার আশঙ্কা রয়েছে৷

প্রতিবেদন: জেনিফার ভাগনার/আরআর