1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

মার্কিন কংগ্রেসে ভাষণ

২৬ এপ্রিল ২০১৮

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কয়েক দিন ধরে পারস্পরিক উষ্ণতা প্রদর্শন করলেও শেষ লগ্নে মাক্রোঁ বুঝিয়ে দিলেন যে, তাঁদের মধ্যে মতপার্থক্য থেকেই গেছে৷ মার্কিন জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক করে দিলেন তিনি৷

https://p.dw.com/p/2wgvY
মার্কিন কংগ্রেসে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ
ছবি: Getty Images/C. Somodevilla

ব্যক্তিগত স্তরে উষ্ণতা বজায় রেখেও আদর্শের প্রশ্নে কীভাবে অনড় থাকা যায়, তা দেখিয়ে দিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রীয় সফরের শেষ পর্যায়ে কংগ্রেসে এক ভাষণে তিনি সুমধুর ভাষার মোড়কে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অনেক নীতির খোলামেলা বিরোধিতা করলেন৷ ফরাসির বদলে ইংরেজি ভাষায় ভাষণ দিয়ে তিনি সরাসরি মার্কিন জনগণের কাছেও পৌঁছনোর চেষ্টা করলেন৷ উদারপন্থি শিবিরের নেতা হিসেবে বিশ্বে নিজের অবস্থান অনেকটা পাকা করে নিলেন তিনি৷ 

মার্কিন জনপ্রতিনিধিদের সামনে তাঁর ভাষণে মাক্রোঁ বলেন, অ্যামেরিকার সামনে দুটি পথ খোলা আছে৷ বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিয়ে সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদের পথে এগিয়ে চলা যেতে পারে৷ এর মাধ্যমে ভয়ভীতি থেকে সাময়িক রেহাই পাওয়া যাবে৷ কিন্তু বাকি বিশ্বের জন্য দ্বার বন্ধ করে দিলে বিশ্বে বিবর্তন বন্ধ হয়ে যাবে না৷ তখন মানুষের ভয় কমার বদলে আরও বেড়ে যাবে, বলেন মাক্রোঁ৷ এমন প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে মাক্রোঁ বলেন, চরম জাতীয়তাবাদ গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে, যার ফলে বিশ্বে আরও সমৃদ্ধি বাড়ানোর আশা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷

মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির বর্তমান গতিপ্রকৃতিরও তুমুল সমালোচনা করেন মাক্রোঁ৷ বিশেষ করে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করতে ট্রাম্প যেভাবে উঠেপড়ে লেগেছেন, সেই পথ ভুল বলে মনে করেন তিনি৷ মার্কিন সংসদ সদস্যদের তিনি মনে করিয়ে দেন যে, অ্যামেরিকার উদ্যোগেই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল৷ ফ্রান্সও তাতে স্বাক্ষর করেছিল৷ এখন সেটি বাতিল করে দেওয়ার কথা বললে চলবে না৷ পরে তিনি অবশ্য বলেছেন যে, ট্রাম্প এ বিষয়ে সম্ভবত নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকবেন৷

জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ মাক্রোঁ এই সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করে বলেন, মানুষই এই গ্রহকে তিলে তিলে হত্যা করছে৷ সবার মনে রাখতে হবে যে, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার এই পরিকল্পনার কোনো বিকল্প নেই৷ মুক্ত বাণিজ্যের কাঠামোরও কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করিয়ে দেন তিনি৷ সংঘাতের বদলে সংলাপের মাধ্যমে বর্তমান বিবাদ মেটানোর পরামর্শ দিয়েছেন মাক্রোঁ৷

গোটা ভাষণে মাক্রোঁ পরোক্ষভাবে স্পষ্ট করে দিলেন যে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট'-এর মতো সংকীর্ণ নীতির পরিবর্তনের আশা না করলেও ভবিষ্যতে অ্যামেরিকা অবশ্যই ‘সঠিক' পথে ফিরে আসবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন৷ কংগ্রেসে ভাষণ দেবার পর মাক্রোঁ জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সামনেও এক ভাষণ দেন৷ তিনি অ্যামেরিকার তরুণ প্রজন্মের সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জের উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে শেষ পর্যন্ত তাদেরই সিদ্ধান্ত নিতে হবে৷

এসবি/এসিবি (এপি, এএফপি)