1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোনো দলই প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারছে না

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
২৮ নভেম্বর ২০১৮

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিনেও কোনো দল বা জোটই প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করতে পারেনি৷ তাই এক আসনে একই দলের একাধিক প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন৷ প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হবে আগামী ৯ ডিসেম্বর৷

https://p.dw.com/p/394QY
Bangladesch - Neues Bürogebäude zur Wahlkomission
ছবি: bdnews24.com

৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন৷ ওই দিন দল ও জোট থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে তাদের প্রার্থী নিশ্চিত করা হবে৷ বাকিরা বাদ পড়বে৷ এই বাদ পড়ার আশঙ্কায় কেউ কেউ স্বতন্ত্র হিসেবে বুধবার মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন৷ দল যদি মনোনয়ন চূড়ান্ত না করে, তাহলে তাঁরা শেষ পর্যন্ত বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করবেন৷ কিন্তু ভয়ের বিষয় হলো, এই সময়ে দল বা জোট থেকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করতে অনেক প্রার্থী তাঁদের শক্তি প্রদর্শন করতে পারেন৷ আর তাতে সংঘাত-সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে৷

এবার জোটের অন্যান্য শরিক দলের জন্য ৭০টি আসন রেখে বাকি ২৩০ আসনে ২৫০ জনকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ৷ ২০টি আসনে দুই জন করে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে৷ আর বিএনপি ৩০০ আসনে মনোনয়ন দিয়েছে ৮০০'রও বেশি প্রার্থীকে৷ কোনো কোনো আসনে তারা ৪-৫ জনকেও মনোনয়ন দিয়েছে৷ এর মধ্যে কিছু মনোনয়ন দেয়া হয়েছে মামলার চিন্তা মাথায় রেখে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে৷ তবে বিদ্রোহ ঠেকাতে অথবা সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় অধিকাংশ আসনেই একাধিক প্রার্থী দেয়া হয়েছে৷ আওয়ামী লীগও যেসব আসনে প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি সেসব আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে৷

‘দু’টি বড় দলই কৌশল হিসেবে একই আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে’

কিন্তু সংকট আরো বড় হয়েছে জোট নিয়ে৷ কারণ, আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কেউই তাদের জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত করতে পারেনি৷ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দল ছাড়াও আছে এরশাদের জাতীয় পার্টি, বিকল্প ধারা, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি এবং কিছু ইসলামি দল ও জোট৷ তারা তাদের মতো মনোনয়ন দিয়েছে এবং শেষ দিনে তারা মনোনয়ন পত্র দাখিলও করেছে৷ যেমন, ওয়াকার্স পার্টিকে মোট ৫ টি আসন দেয়া হবে৷ তাদের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে ৩৪ জন৷ জাসদকে দেয়া হতে পারে ২টি আসন৷ তাদের হয়ে মনোনয়ন পত্র দাখিল করেছেন ৫ জন৷ জাতীয় পার্টি কতটি আসন পাবে তা এখনো নিশ্চিত নয়৷ তবে তারা মনোনয়ন দিয়েছে ১১০ জনকে৷

এদিকে বিএনপি বলছে, জোটের শরিকদের আসন তারা পরে ছেড়ে দেবে৷ তাদের আট শতাধিক প্রার্থী ৩০০ আসনেই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছে৷ তবে ২০ দলের সঙ্গে তারা আসন বন্টন প্রায় চূড়ান্ত করেছে, কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট-এর গণফোরাম, নাগরিক ঐক্যসহ বাকি শরিকদের সঙ্গে আসন চূড়ান্ত হয়নি৷ জামায়াত শেষ পর্যন্ত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ জামায়াতকে ২৫টি আসন দিতে চাইলেও তারা আরো বেশি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে৷ নাগরিক ঐক্য আসন পেতে পারে ২টি, কিন্তু তারা মনোনয়ন জমা দিয়েছে ৮টি আসনে৷

এদিকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন বা তাঁর মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না৷ আর বিকল্পধারার ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী আগেই নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ ফেনীর একটি এবং বগুড়ার ২টি আসনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দেয়া হলেও তিনি যে প্রার্থী হতে পারছেন না তা সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের রায়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে৷ তিনটি আসনেই বিকল্প প্রার্থী আছে৷ আর বিএনপি'র পাঁচ নেতা আমানউল্লাহ আমান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ওয়াদুদ ভূঁইয়া, মো. মশিউর রহমান এবং মো. আব্দুল ওহাব প্রার্থী হতে পারছেন না৷ তাঁদের আসনগুলোতেও একাধিক বিকল্প প্রার্থী আছে বিএনপি'র৷

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শান্তনূ মজুমদার বলেন,‘‘দু'টি বড় দলই কৌশল হিসেবে একই আসনে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দিয়েছে৷ আসলে তারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিশ্চিত হতে চাইছে৷ বিএনপি চাইছে, তারা যদি নির্বাচন থেকে বেরিয়ে আসতে চায়, তাহলে যেন বেরিয়ে আসতে পারে৷ আর আওয়ামী লীগও চাইছে ভালো অবস্থানে থাকতে৷ তবে এতে করে সমস্যা হবেই৷ যাঁরা দলের হয়ে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন, তাঁদের মধ্যে যাঁরা শেষ পর্যন্ত পাবেন না, তাঁরা হতাশ হবেন৷ তাঁরা তো একটা সমস্যার সৃষ্টি করবেনই৷''

‘বিএনপি'র এত বেশি প্রার্থী হওয়ার কারণ তাদের ঝুঁকি আছে, মামলা আছে’

আর সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজন-এর প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার মনে করেন,‘‘যেখানে একাধিক প্রার্থীর সমর্থন কাছাকাছি, সেখানে চূড়ান্ত মনোনয়ন পেতে তাঁরা শক্তি প্রদর্শন করতে পারেন, দ্বন্দ্ব-সংঘাত হতে পারে৷ আর যেখানে বিদ্রোহী প্রার্থী আছে, সেখানে ঝুঁকি আরো বেশি৷বিএনপি'র এত বেশি প্রার্থী হওয়ার কারণ তাদের ঝুঁকি আছে, মামলা আছে৷ ফলে যাতে বাতিল হলেও শেষ পর্যন্ত প্রার্থী থাকে৷ আওয়ামী লীগও ঝুঁকি বিচেনায় কিছু আসনে একাধিক প্রার্থী দিয়েছে৷ আরেকটি কারণ, যাতে বিদ্রোহী প্রার্থী না হতে পারে৷ কারণ, দলের মনোনয়ন নিয়ে যাঁরা মনোনয়পত্র দাখিল করেছেন, তাঁরা কিন্তু আর বিদ্রোহী প্রার্থী হতে পারবেন না৷ প্রত্যাহারের শেষ দিনে দল যাঁকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দেবে, তিনিই প্রার্থী হবেন৷ বাকিদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যাবে৷''

 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য