1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

কোটা সংস্কার: প্রতিবন্ধীদের স্বার্থ বিবেচনা করে ব্যবস্থা

সমীর কুমার দে ঢাকা
১৪ এপ্রিল ২০১৮

কোটা পদ্ধতি বাতিল ঘোষণা করলেও প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর যাতে স্বার্থ সংরক্ষিত হয় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেছেন৷ এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা৷

https://p.dw.com/p/2w3Lg
ছবি: bdnews24.com

কোটা সংস্কার আন্দোলন থামলেও সেই ঘটনার রেশ থামছে না৷ একদিকে, আন্দোলন চলাকালে বিভিন্ন ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে৷ অন্যদিকে, আন্দোলনকারীরা অপেক্ষায় আছেন কোটা নিয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপনে আসলে কি থাকবে তা জানার আশায়৷ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক শাহিদ নিলয় ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আমরা কোটা বাতিল করার দাবি জানাইনি৷ আমাদের দাবি ছিল ১০ ভাগ কোটা রেখে তা সংস্কার করা৷''

শুক্রবার নারায়ণগঞ্জে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থায় একটা সমাধান আসবে৷ তিনি বলেছেন, ‘‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে এদেশের রাজনৈতিক একটি মহলের ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপি এখন নিদারুণভাবে হতাশ৷ এ আন্দোলনকে রাজনৈতিক আন্দোলনে রূপ দিয়ে, বিএনপির এতদিনের ব্যর্থতার পর ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের যে অপচেষ্টা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সময়োচিত ঘোষণায় সেটা ব্যর্থ হয়েছে৷ কোটার বিষয়ে নতুন কিছু করতে হলে বিদ্যমান যে ব্যবস্থা তা বাতিল করাই ছিল সময়োপযোগী পদক্ষেপ৷ প্রধানমন্ত্রী সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করেছেন৷''

‘আমাদের দাবি ছিল ১০ ভাগ কোটা রেখে তা সংস্কার করা’

ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, ‘‘নতুন করে এই ব্যবস্থার বিকাশ করতে হলে এটাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে কেবিনেট সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি৷ পরীক্ষা-নিরীক্ষা যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ন্যায়ভিত্তিক, যুক্তিভিত্তিক একটি সমাধান আসবে৷''

আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ‘‘এই যে কোটাগুলো আছে সেগুলো ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে এনেছিলেন৷ এখন যেভাবেই সংস্কার হোক সংবিধানের আলোকেই করতে হবে৷ সংবিধান সংশোধন করতে হবে৷ এই কারণে কেবিনেট সেক্রেটারিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে৷ তার নেতৃত্বে একটা টিম ওই কাজটা করবে৷ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী, ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠী এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর স্বার্থও কীভাবে রক্ষা করা যায় তা দেখতে হবে৷''

এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে উস্কানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা, ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোসহ অনেক অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে৷

‘যেভাবেই সংস্কার হোক সংবিধানের আলোকেই করতে হবে’

কোটা সংস্কারের এই আন্দোলন ঘিরে ফেসবুকে অপপ্রচার চালানো দুই শতাধিক অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করেছে পুলিশ৷ পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের সাইবার ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মিশুক চাকমা জানান, ‘‘আমরা কিছু অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছি, যেগুলো থেকে গুজব ছড়ানো হয়েছিল৷ তবে যে ব্যক্তির নাম আছে, তিনি ওই পেইজ নাও খুলতে পারেন৷ এ কারণে তদন্ত চলছে৷  সঠিক তথ্য জানতে সময় লাগবে৷ পাশাপাশি ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে এদের ব্যাপারে তথ্য পেতে৷ তবে তারা তথ্য দেবে কিনা এটা তাদের ব্যাপার৷''

কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েক মাস ধরে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত রবিবার আন্দোলনকারীরা শাহবাগে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের মারধোর করে তুলে দেয়৷ এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতভর পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ হয়৷ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার শেল ও জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ৷ এ সময় সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশী আন্দোলনকারী আহত হন৷

‘যে ব্যক্তির নাম আছে, তিনি ওই পেইজ নাও খুলতে পারেন’

ওই রাতেই সংঘর্ষে ‘শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে' বলে ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে পড়ে৷ এক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত৷ এজন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে জাতীয় সংসদে৷ টানা ওই আন্দোলনের চতুর্থ দিন বুধবার সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেও ফেসবুকে ছাত্র নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়ে আন্দোলনে ‘উস্কানি দেওয়ার' কথা উঠে আসে৷ উস্কানিদাতাদের আইনের আওতায় আনা কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী৷

যারা মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে ছড়িয়েছে এবং ভিসির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে, তাদের বিচার চেয়েছেন আন্দোলনকারীরাও৷ বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক শাহিদ নিলয় বলেন, ‘‘আমরা তো শুরু থেকেই সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান চেয়েছি৷ আমরা কখনই সহিংস আন্দোলনের পথে যাইনি৷''

ভিসির বাড়িতে হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমরা শেষ সংবাদ সম্মেলনেও বলেছি, উপাচার্যের বাসভবনে যারা হামলা চালিয়েছে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক৷ কেউ অপরাধ করলে তার শাস্তি হওয়া উচিত৷''

আপনার মতামত লিখুন নীচে মন্তব্যের ঘরে৷