1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ক্যানসার দমন

ফাবিয়ান শ্মিট/আরবি১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩

ক্যানসারের কোষগুলি চিকিত্সকদের জন্য এক বিশেষ সমস্যার সৃষ্টি করে৷ কেননা এগুলি সুস্থ কোষগুলির মতই দেখতে৷ সুস্থ কোষের মতই ক্রমানুসারে থাকে এগুলি৷ তাই এগুলিকে শনাক্ত করা সহজ নয়৷

https://p.dw.com/p/17f64
ছবি: DKFZ

মানব শরীরের জন্য প্রয়োজন বিলিয়ন বিলিয়ন তাজা সেল বা কোষ৷ এ কারণে দ্রুত বিভক্ত হয়ে নতুন নতুন কোষ তৈরি হয় দেহে৷ হাইডেলব্যার্গের ক্যানসার গবেষণা কেন্দ্রের স্টেমসেল বিভাগের প্রধান আন্দ্রেয়াস ট্রুম্প এ প্রসঙ্গে জানান, ‘‘ স্টেমসেলগুলি অগ্রগামী সেল তৈরি করে, যা অবিশ্বাস্য দ্রুত গতিতে বিভক্ত হয়৷''

এই সময় তারা শরীরের বিশেষ বিশেষ সেলে পরিণত হওয়ার জন্য তৈরি হতে থাকে৷ যেমন কেশ, ত্বক বা অন্ত্রের জন্য৷ দ্রুত বিভক্ত হওয়া অগ্রগামী কোষগুলি টিউমার সেলও তৈরি করে৷

কেমোথেরাপির মাধ্যমে দ্রুত বিভক্ত হওয়া সেলগুলিকে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করা হয়৷ এ ক্ষেত্রে সমস্যা হল, ‘‘এই থেরাপিতে শুধু অসুস্থ কোষ নয়, সুস্থ কোষগুলিও মরে যায়৷ রোগীর চুল পড়ে যায়, ডায়রিয়া ও রক্তাল্পতায় ভোগেন তাঁরা৷''

তবে দ্রুত বিভক্ত হয় না বলে কেমোথেরাপি দিলেও স্টেমসেলগুলি বিনষ্ট হয় না৷ তাই থেরাপি বন্ধ হলে রোগীর মাথায় আবার চুল গজায়, রক্তাল্পতাও দূর হয়৷

সমস্যা হল ক্যানসারেরও নিজস্ব স্টেমসেল রয়েছে৷ সেগুলিও সুস্থ সেলের মত কেমোথেরাপির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারে৷ এ গুলি চাঙা হয়ে উঠলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সারা শরীরে চলে যায় এবং বিভিন্ন জায়গায় মেটাস্ট্যাসিস তৈরি করে৷ ক্যানসার জয় করতে হলে ক্যানসারের স্টেমসেলকে ধ্বংস করতে হবে৷ এজন্য কয়েকটি পদ্ধতির কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে৷ যেমন ক্যানসারের স্টেমসেলগুলিকে প্রথমে চাঙা করে তারপর কেমোথেরাপি দিয়ে ধ্বংস করা ৷
 

আরেক পদ্ধতি হোল, ক্যানসারের স্টেম সেলকে অকেজো করে দেওয়া৷ এই সেলগুলি বিশেষ ধরনের পারিপার্শ্বিকতার ওপর নির্ভরশীল৷ টিস্যু সেলের সঙ্গে এক মিথষ্ক্রিয়ার মাধ্যমে এগুলি জেগে ওঠে৷ অ্যান্টিবডির সাহায্যে এই মিথষ্ক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া যায়৷ গবেষক ট্রুম্প-এর ভাষায়, ‘‘এর ফলে ক্যানসারের স্টেমসেলগুলি সাধারণ ক্যানসারের সেলে পরিণত হয়, যেগুলি কম বিপজ্জনক৷ কেমোথেরাপি দিয়ে সহজে আয়ত্তে আনা যায় এই সেলগুলিকে৷

ক্যানসার দমনে আরেকটি পদ্ধতি হলো, শরীরের প্রতিরোধ বা ইমিউন শক্তিকে এমনভাবে উজ্জীবিত করা, যাতে তা ক্যানসারের সেলকে দমন করতে পারে৷ এই কাজটা হাতে নিতে পারে তথাকথিত টি-সেল৷ হাইডেলব্যার্গের ন্যাশানাল সেন্টার ফর টিউমার ডিজিসেস-এর অংকোলজি বিভাগের প্রধান ডিয়র্ক ইয়েগার এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এই টি-সেলগুলি টিউমারের প্রোটিনকে চিনতে পারে এবং ধ্বংসও করতে পারে৷''

ক্যানসার রোগীদের ইমিউন সিস্টেম তেমন শক্তিশালী নয় বলে টি-সেলকে উজ্জীবিত করা হয়৷ তবে টিউমার সেলগুলি আত্মরক্ষার কৌশল খুঁজতে চেষ্টা করে, চেষ্টা করে টি-সেলকে পাশ কাটাতে৷ কিংবা ধারণ করে ছদ্মবেশ৷ এর ফলে এই মারাত্মক কোষগুলিকে চেনা সহজ হয় না৷

Screenshots Futurando 8 Stammzellen
স্টেমসেল নিয়ে দুনিয়া জুড়ে গবেষণা চলেছেছবি: DW

গবেষকরাও পিছিয়ে নেই৷ তাঁরা টি-সেলকে জিনগত দিক দিয়ে এমনভবে পরিবর্তন করাতে পেরেছেন, যাতে তা ছদ্মবেশ সত্ত্বেও ক্যানসারের সেলকে চিনতে পারে৷

ইমিউন থেরাপির আর একটি ইতিবাচক দিক রয়েছে৷ টি সেল একবার টিউমার সেলের সংস্পর্শে এলে সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ এর ফলে চেনের মত একটা প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়৷ শুধু একবার নয়, পেছনে থাকা টিউমার সেলগুলিকেও ধ্বংস করতে পারে এটি৷ এই প্রক্রিয়ার সময় টি-সেলগুলি ‘ডটার সেল' বা অপত্য কোষ সৃষ্টি করে, যেগুলি আবার নিজের নিজের জায়গায় সক্রিয় হয়ে ওঠে৷ গবেষকদের ধারণা, কেমোথেরাপি ও ইমিউন থেরাপি একে অপরের পরিপূরক হতে পারে৷

ক্যানসার গবেষক ব্যারটল্ড ক্রেফট মনে করেন, কেমোথেরাপিকে আরো কার্যকরী করে তুলতে আর একটা কাজ করা যায়৷ আর তা হলো, কেমোর বিষাক্ত মলিকিউলকে বিশেষ অ্যান্টিবডির সঙ্গে যুক্ত করে টিউমার সেলকে আক্রমণ করা৷

রোগীদের জন্য এই চিকিত্সা তেমন কষ্টকর নয়৷ কেননা এই পদ্ধতিতে দেয়া কেমোথেরাপি শুধু টিউমারকে আক্রমণ করে৷ সুস্থ সেলগুলি আক্রান্ত হয় না৷

ক্যানসার দমনে আশাব্যঞ্জক অনেক ধরনের পদ্ধতি রয়েছে৷ প্রায় সবগুলিই এখন ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা নিরীক্ষার পর্যায়ে৷ এক্ষেত্রে নতুন কোনো ওষুধ বাজারে আসতে আরো কয়েক বছর গড়িয়ে যেতে পারে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য