1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘ক্রেতারা যোগাযোগ করতে শুরু করেছে’

২৭ মার্চ ২০২০

বাংলাদেশ পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ জানিয়েছে, করোনার প্রাদুর্ভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়া তৈরি পোশাকখাতকে সহযোগিতার আহ্বানে সাড়া দিতে শুরু করেছে ক্রেতারা৷ 

https://p.dw.com/p/3a8d7
ছবি: JEWEL SAMAD/AFP/Getty Images

‘‘ব্র্যান্ডগুলো যোগাযোগ করতে শুরু করেছে,'' ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু প্রস্তাব পাঠিয়েছি৷''

এর আগে গত কিছুদিন ধরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে একের পর এক অর্ডার বাতিল হতে থাকে৷ বিজিএমইএর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৯৩৬টি কারখানার অর্ডার বাতিল হতে থাকে, টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২.৫৮ বিলিয়ন ডলার বা প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা৷ 

এ অবস্থায় বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর কাছে খোলাখুলিভাবে আবেদন জানান৷ তিনি বলেন, এ রকম সংকটময় পরিস্থিতিতে ব্র্যান্ডগুলো যদি হাত তুলে নেয়, তাহলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত প্রায় ৪১ লাখ শ্রমিককে না খেয়ে মরতে হবে৷

তিনি অভিযোগ করেন, অনেক কোম্পানি এরইমধ্যে অর্ডার করা পণ্য তৈরির মাঝামাঝি থাকা অবস্থায়, তৈরি হয়ে যাবার পর এমনকি তৈরি পণ্য পাঠিয়ে দেবার পরও অর্ডার বাতিল হয়েছে, যেটা অনুচিত৷

তিনি এ অবস্থার উত্তরণে কিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন৷ সেসব প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে এরই মধ্যে অনেকে যোগাযোগ করেছে বলে জানান তিনি৷

বিজিএমইএর প্রস্তাব

বিজিএমইএ পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে৷ প্রথমত, আগে অর্ডার করা যেসব পণ্য এরই মধ্যে উৎপাদনে চলে গেছে কিংবা উৎপাদিত হয়ে সরবরাহের অপেক্ষায় আছে, সব পণ্যের মূল্য সাধারণ নিয়মে পরিশোধ নিতে হবে৷ দ্বিতীয়ত, যদি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে আনকাট ফেব্রিক থাকে, তাহলে হয় এর শিপমেন্ট নিতে হবে, অথবা এর ‘কাট অ্যান্ড মেক' বা শ্রমের খরচটুকু দিতে হবে, যেন শ্রমিকদের বেতন দেয়া যায়৷ তৃতীয়ত, অব্যবহৃত ফেব্রিকের দাম পরিশোধের ক্ষেত্রে ১৭০ দিন সময় নিতে পারে ক্রেতারা৷ চতুর্থত, ক্রেতা চাইলে উৎপাদনকারী বা বিক্রেতা এই পণ্য আপাতত মজুদ করেও রাখতে পারে, কিন্তু তা উৎপাদন এলাকা ছাড়লেই সরবরাহকৃত বলে বিবেচিত হবে৷ পঞ্চমত, যদি কোনো বিশেষ কারণে শিপমেন্ট বাতিল হয় তাহলে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে৷

জার্মানির কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া

বিজিএমইএ জার্মানির উন্নয়ন সহযোগী মন্ত্রী গার্ড ম্যুলারের কাছেও সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছিল৷ জবাবে ম্যুলার বলেন, যেহেতু এত লোক এই খাতে কাজ করেন, তাই বাংলাদেশের পোশাক শিল্প ও এর সঙ্গে জড়িতদের সহযোগিতার একটি উপায় বের করা হবে৷

 ‘‘আমরা জার্মান মন্ত্রীর কাছে বলেছি যেন জার্মান ব্র্যান্ডগুলো তাদের অর্ডার বাতিল না করে, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে,'' ডয়চে ভেলেকে বলেন রুবানা৷ ‘‘কোভিড পরবর্তী সময়ে আমাদের ঘুরে দাঁড়াবার সময়টুকুতেও তারা যেন আমাদের পাশে থাকেন, সেটি বলেছি৷''

রুবানা জানান, বাংলাদেশের পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক হলো জার্মানি৷ মোট রপ্তানির ১৮ ভাগ করা হয় এই দেশটিতে৷ সবমিলিয়ে ইউরোপে ৬০ ভাগ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ৷ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ তিন হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা মোট রপ্তানির ৮০ ভাগেরও বেশি৷

গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রমিকদের বেতন ভাতা দেবার জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল ঘোষণা করেছেন৷ উৎপাদন খাতগুলোর জন্য এই তহবিল সাময়িক কিছুটা স্বস্তি দিলেও দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানান রুবানা৷

‘‘আমরা মাসে শ্রমিকদের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা বেতন দেই৷ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা আমাদের স্বস্তি দিয়েছে৷ তবে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোকে সামনে আসতে হবে এবং দায়িত্ব নিতে হবে,'' বলেন তিনি৷