1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

গুগল-ফেসবুকের দৌলতে ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীদের পোয়াবারো

১৭ জুলাই ২০১১

রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়৷ তবে এই বেলাতে উলুখাগড়ার প্রাণ যাচ্ছে না, বরং লাভই হচ্ছে৷ বলছি ইন্টারনেট জগতের দুই রাজা গুগল আর ফেসবুকের কথা৷ কিছুদিন ধরে এই দুই কোম্পানি চেষ্টা করছে পরস্পরকে টেক্কা দিতে৷

https://p.dw.com/p/11wtz
ছবি: dapd

ইন্টারনেট জগতে এখন ক্লিকই সব৷ কোন ওয়েবপেজটি কত মাউস ক্লিক পাচ্ছে সেটি দিয়েই এখন যাচাই করা হয় কার রাজত্ব কত বড়৷ আর তা নিয়ে এখন জোর লড়াই চলছে গুগল আর ফেসবুকের মধ্যে৷ একটি সার্চ ইঞ্জিন অন্যটি সামাজিক নেটওয়ার্ক৷ ক্লিকের জগতে এতদিন ধরে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে এসেছে সার্চ ইঞ্জিন গুগল৷ গত মে মাসেই এক বিলিয়নের বেশি ক্লিক পেয়েছে গুগল৷ অন্যদিকে সামাজিক নেটওয়ার্ক ইন্টারনেটের জগতে ক্রমশ তার আগ্রাসন বাড়িয়ে চলেছে৷ আর এই ক্ষেত্রে অগ্রপথিক ফেসবুক, যার বর্তমান ব্যবহারকারীর সংখ্যা সাড়ে সাতশ মিলিয়ন৷ প্রতিদিন চার বিলিয়ন ফটো, ভিডি সহ নানা কিছু শেয়ার করা হয় এই ফেসবুকে৷

সামাজিক নেটওয়ার্কের এই আগ্রাসন এখন ক্রমেই হুমকির মুখে ফেলেছে গুগলের একচ্ছত্র আধিপত্যকে৷ কারণ ক্লিকের সংখ্যায় তারা ফেসবুক থেকে অনেক এগিয়ে থাকলেও একজন ভিজিটর গুগলের চেয়ে ফেসবুকে অনেক বেশি সময় কাটায়৷ ফেসবুককে টেক্কা দিতে তাই গুগল কিছুদিন আগে ছেড়েছে তাদের সামাজিক নেটওয়ার্কের একটি সংস্করণ, যার নাম গুগল প্লাস৷ অন্যদিকে এই গুগল প্লাসকে টেক্কা দিতে আবার ফেসবুক গাঁটছড়া বাধলো স্কাইপের সঙ্গে৷

সার্চ ইঞ্জিন গুগলের এই নতুন প্যাকেজের নাম গুগল প্লাস৷ যদিও আড়ালে আবডালে অনেকে একে গুগবুক বলে ডাকছেন৷ এই নতুন গুগল প্লাসে আছে ভিডিও চ্যাটের ব্যবস্থা৷ জিমেইলে চ্যাটের ব্যবস্থা অনেক আগে থেকেই ছিলো৷ এই গুগল প্লাসে যেটি নতুন যোগ হয়েছে সেটি হলো একসঙ্গে ১০ জন ভিডিও চ্যাট করতে পারবে৷ ভিডিও কনফারেন্সের জন্য এর চেয়ে ভালো সুযোগ আর হয় না৷ এদিক থেকে অনেককে টেক্কা দিলো গুগল প্লাস৷

Goolge Plus vs. Facebook Symbolbild NO FLASH
কিলিকেই ঝিলিক!ছবি: dapd

ইন্টারনেটে নিজের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষা খুবই প্রয়োজনীয়৷ এই ব্যাপারে ফেসবুক সহ সামাজিক নেটওয়ার্কগুলোকে নিয়ে সমালোচনা রয়েছে৷ আপনি যাই করেন না কেন সকলে তা দেখছে, এই অস্বস্তি দূর করতে গুগল প্লাসে যোগ হয়েছে নানা ধরণের ‘সার্কেল'৷ অর্থাৎ আপনি আপনার পরিচিতজনদের নানা ক্যাটেগরিতে ভাগ করতে পারবেন এবং কোন ক্যাটেগরির বন্ধুদের প্রবেশাধিকার কতটুকু থাকবে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন৷ এই ক্ষেত্রে পরিবার সদস্য, সহকর্মী, কলেজ বন্ধু সহ নানা ‘সার্কেল' তৈরির সুযোগ থাকছে গুগল প্লাস এ৷ ফেসবুকের মত গুগল প্লাসেও অন্যদের সঙ্গে চ্যাট করা যাবে, শেয়ার করা যাবে ছবি এবং ভিডিও৷ আর ভিডিও চ্যাটের ব্যবস্থা তো রয়েছেই৷

গুগল প্লাসের এই চ্যালেঞ্জকে বেশ ভালোভাবে নিয়েছে ফেসবুক৷ তাই সপ্তাহ যেতে না যেতেই তারাও নতুন সেবা চালু করলো৷ এই ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গী হয়েছে স্কাইপ৷ বিনা পয়সায় বিদেশ থেকে দেশে ফোন করার জন্য এটি দারুণ একটি মাধ্যম৷ তো এই স্কাইপকে সঙ্গে নিয়ে ফেসবুক চালু করলো ভিডিও চ্যাটের সুবিধা৷ মূলত গুগল প্লাসের ভিডিও চ্যাটকে টেক্কা দিতে তারা এই সেবা চালু করলো, তবে মুখ ফুটে কিন্তু ফেসবুকের কর্তারা তা বলছেন না৷

নতুন এই পরিষেবায় এক সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে চ্যাট করা যাবে৷ চ্যাট করার সময় ইচ্ছা হলো কারো সঙ্গে ভিডিওতে কথা বলার, কেবল একটি ক্লিক করলেই ওই ব্যক্তির সঙ্গে ভিডিও চ্যাট শুরু হয়ে যাবে৷ তবে গুগল প্লাসে যেমন একসঙ্গে অনেকের সাথে ভিডিও চ্যাট করা যায়, ফেসবুকের নতুন এই সেবাটিতে তার সুযোগ নেই৷ এই ব্যাপারে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ অবশ্য বলেছেন, ভিডিও চ্যাটের বেশিরভাগ আসলে ওয়ান টু ওয়ান হয় বলেই তারা আপাতত একজনের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটের সুবিধাটি ছেড়েছেন৷

ইন্টারনেট জগতের এই রাজত্ব দখলের লড়াইয়ে লাভ হচ্ছে সাধারণ ব্যবহারকারীদের৷ তারা পাচ্ছেন নিত্য নতুন সুযোগ সুবিধা, যা ইন্টারনেটকে প্রতিদিনের জীবনের অপরিহার্য অংশ করে তুলেছে৷

প্রতিবেদন: রিয়াজুল ইসলাম

সম্পাদনা: আবদুল্লাহ আল-ফারূক