1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাবেস আবার চিকিৎসা করাতে গেলেন কিউবায়

১৭ জুলাই ২০১১

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট উগো চাবেস ফের চিকিৎসার জন্য কিউবায়৷ তাঁর ক্যান্সারের আরেকপ্রস্থ চিকিৎসা প্রয়োজন৷ এদিকে বিরোধীরা এই সুযোগে মাথা তুলতে চাইছে৷

https://p.dw.com/p/11x58
ছবি: picture alliance / dpa

কিউবায় আবার চাবেস৷ কারণ, তাঁর ক্যান্সারের চিকিৎসা সম্পূর্ণ হয়নি৷ রবিবার থেকে কিউবায় চাবেসের কেমোথেরাপি বা বিশেষ এক ধরণের রাসায়নিক চিকিৎসা শুরু হয়েছে৷ তিনি দেশত্যাগ করার আগে স্বয়ং জানিয়ে গেছেন একথা৷ চাবেসের চিকিৎসকদের অভিমত, চাবেসের শরীরে যে টিউমার বাসা বেঁধেছিল, তা পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আগের শল্যচিকিৎসার পর তাঁর শরীরে নতুন করে কোন ম্যালিগন্যান্ট সেল মেলেনি৷

রবিবার ভেনেজুয়েলার রাজধানী কারাকাস থেকে বিমানে ওঠার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের চাবেস বলেন, এখনই মৃত্যুর সময় নয়৷ এখন বহু কাজ বাকি. তাই এখন বাঁচার সময়৷

তবে চাবেস এমন ইতিবাচক মন্তব্য করলেও, দেশের অভ্যন্তরে বিরোধীরা কিন্তু তাঁকে শূলবিদ্ধ করতে ছাড়েনি৷ শনিবার রাজধানী কারাকাসে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির বৈঠকে চাবেস তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতে নিজের কিছু দায়িত্ব তুলে দেন৷ সেইসঙ্গে অন্য কিছু দায়িত্ব কয়েকজন মন্ত্রীকে বন্টন করেন৷ সেই বৈঠকেই ধ্বনিভোটে তাঁর কিউবা যাত্রা এবং সেদেশে তাঁর চিকিৎসার বিষয়ে ঐকমত্য শোনা যায়৷ বিরোধীরা কিন্তু এই বৈঠকেই জোর দাবি তুলতে থাকে, চাবেস তাঁর যাবতীয় ক্ষমতা হস্তান্তর করুন৷ তাদের দাবি ছিল, ভাইস প্রেসিডেন্টের হাতেই দেশের সর্বময় কর্তৃত্ব তুলে দিতে হবে চাবেসকে৷

চাবেসের কাছে এই দাবি নিয়ে শনিবারের বৈঠকে ব্যাপক শোরগোল তুললেও চাবেস কিন্তু নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরেন নি৷ বারংবার তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ঠিক কতদিনের জন্য কিউবা চললেন তিনি৷ একথারও কোন উত্তর শোনা যায়নি প্রেসিডেন্টের মুখে৷ তিনি শুধু জানিয়েছেন, কিছুদিনের জন্য তিনি কিউবা যাচ্ছেন৷ ক্যান্সারের মত দুরূহ এবং কঠিন রোগের চিকিৎসায় তাঁর ঠিক কতটা সময় লাগবে তার জবাব তিনি দিতে চাননা বলেই ইঙ্গিত দিয়েছেন চাবেস স্বয়ং৷ তারপরেও বিরোধীদের প্রশ্ন করা থামেনি৷ রীতিমত উত্তপ্ত আলোচনার মধ্যে চাবেস দাবি করেছেন, বর্তমানে তিনি যে ধরণের স্বাস্থ্যের অধিকারী, তার চেয়ে অনেক ভালো স্বাস্থ্য নিয়েই তিনি ফিরে আসবেন৷

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হিসাবে উগো চাবেজ দায়িত্বপালন করছেন গত বারো বছর যাবৎ৷ এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে এই প্রথমবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভারের কিছুটা তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট আর অর্থমন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন৷ টেলিভিশনে প্রচারিত এক ভাষণে তিনি বলেছেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট এলিয়াস জুয়ার ওপর বাজেট সংক্রান্ত কিছু দায়িত্ব এবং বাণিজ্যের দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে৷ অর্থমন্ত্রী জর্জ জিওরদানির ওপর ন্যস্ত হয়েছে, নিজের দপ্তর ছাড়াও আরও কিছু অতিরিক্ত কাজ৷ এর বাইরে নিজের সম্পূর্ণ ক্ষমতা তিনি নিজের হাতেই রেখে দেবেন বলে বোঝা গেছে উগো চাবেসের ভাষণ থেকে৷

ল্যাটিন অ্যামেরিকার তৈলসমৃদ্ধ দেশ ভেনেজুয়েলার ডাকাবুকো প্রেসিডেন্ট চাবেসের স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনাকল্পনার সূত্রপাত চলতি জুলাইয়ের গোড়া থেকে৷ যখন তিনি প্রথমবার কিউবায় চিকিৎসা করাতে যান৷ শরীরের কোথায় টিউমার হয়েছে তা জানা না গেলেও, বিভিন্ন সূত্রের দাবি, তলপেটের কোথাও টিউমার হয়েছে চাবেসের৷ এরপর থেকে তিনি কাজের চাপ কিছুটা কম নিচ্ছেন৷ রাতবিরেতের টিভি ভাষণে তিনি থাকছেন না, আর এসবই ডাক্তারদের পরামর্শেই৷ সর্বশেষ খবর, চাবেস কিন্তু ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ফের প্রতিদ্বন্দিতা করবেন বলে দাবি করেছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল৷ সুতরাং এখনই হাল ছেড়ে দিতে রাজি নন কিউবার ৫৬ বছর বয়সী জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দোপাধ্যায়

সম্পাদনা: অরুণ শঙ্কর চৌধুরী