1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাষবাসের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব

মারিয়া লেসার/এসবি২৭ নভেম্বর ২০১৫

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব জানতে আর বিজ্ঞানীদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে না, আমরা সকলেই সেটা টের পাচ্ছি৷ অন্যান্য অনেক বিষয়ের মতো এর ফলে খাদ্য নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে৷ তার প্রভাব মোকাবিলার চেষ্টা চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা৷

https://p.dw.com/p/1HDJE
Deutschland Landwirtschaft Getreidefeld
ছবি: picture-alliance/chromorange

একেবারে ছবির মতো সুন্দর খেত৷ কিন্তু জলবায়ূ পরিবর্তনের ফলে গোটা বিশ্বে তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে এমন দৃশ্য বদলে যেতে পারে বলে মনে করেন ফ্রাংক এভ্যার্ট৷ বন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পরীক্ষামূলক খেতে তাঁর সঙ্গে দেখা৷ অনেক দেশের বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মিলে তিনি গমের ফলনের উপর বাড়তি তাপমাত্রার প্রভাব পরীক্ষা করছেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, অ্যাঙ্গোলা, মিশর, চীন সহ নানা দেশে গম চাষ হয়৷

ফ্রাংক এভ্যার্ট-এর আশঙ্কা, বেড়ে চলা তাপমাত্রার কারণে উৎপাদনের পরিমাণ অনেক কমে যাবে৷ কিছু অঞ্চলে এর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে৷ তিনি বলেন, ‘‘দক্ষিণ ইউরোপ, স্পেন ও অস্ট্রেলিয়ার কিছু অংশের মতো যে সব এলাকায় ইতিমধ্যেই তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, সেখানে ক্ষতির মাত্রা আরও বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷''

Eifel Agrarlandschaft Wiesen Felder Einsamkeit
সুজলা সুফলা পৃথিবী...ছবি: Imago/blickwinkel

একটি গ্রিনহাউসে গবেষকরা বিভিন্ন প্রজাতির গমের উপর তাপমাত্রার প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন৷ গবেষকদের মতে, আরও উন্নত মানের গমের প্রজাতির কারণে তাপমাত্রা বাড়া সত্ত্বেও ফলন এখনো কমে নি৷ ফ্রাংক এভ্যার্ট বলেন, ‘‘এই প্রজাতি প্রায় ৮০ বছর পুরনো৷ জার্মানিতেই এটি সৃষ্টি হয়েছিল৷ এর গোড়ার দিকটা অপেক্ষাকৃত ছোট কিন্তু ঘন৷ ফলনের পরিমাণের দিক থেকে আজকের প্রজাতির তুলনায় সেটি কিন্তু দুর্বল৷ অন্যদিকে আমদের কর্মসূচিতে নতুন একটি প্রজাতি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ এটির গোড়া অনেক বড়, দানার সংখ্যা বেশি এবং দানাগুলির আকারও সম্ভবত বড় হবে৷''

তবে উচ্চমানের প্রজাতির জন্য বিশেষ ধরনের সারের প্রয়োজন৷ সবার পক্ষে তা কেনা সম্ভব নয়৷ অন্যদিকে এই সার ব্যবহার না করলে ফলন বাড়ানোও সম্ভব নয়৷ উত্তাপ গমের কতটা ক্ষতি করে, তা নির্ভর করে গাছ কতটা বড় হয়েছে, তার উপর৷ শস্য প্রস্ফুটিত হওয়ার সময়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে ফলন অনেক কমে যায়৷ ফলনের এক পূর্বাভাষ মডেলের মধ্যেই অনেক তথ্য লুকিয়ে রয়েছে৷ তাপমাত্রা বাড়লে ফলন কতটা কমে যায়, গবেষকরা তা অঙ্ক কষে দেখেছেন৷

তাতে দেখা গেছে, যে পৃথিবীর তাপমাত্রা মাত্র এক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়লে বছরে ৪ কোটি ২০ লক্ষ টন ফলন কমে যাবে৷ ২১০০ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷

কৃষি-অর্থনীতিবিদ ইওয়াখিম ফন ব্রাউন আন্তর্জাতিক পুষ্টি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন৷ বর্তমানে তিনি বন শহরে উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান৷ তিনি এই হিসেবের কথা জানেন৷ তাঁর মতে, এর ফলে সংকট দেখা দেবে৷ তিনি বলেন, ‘‘খাদ্যাভাবের পরিণামের নানা দিক রয়েছে৷ শুধু মানুষের উপর চাপ বাড়বে না, অর্থনীতির উপরেও এর প্রভাব পড়তে বাধ্য৷ রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবের ফলে সমাজ বদলে যাবে, পরবর্তী প্রজন্মের উপর তার ছাপ পড়বে৷''

ফ্রাংক এভ্যার্ট এই সমস্যা সম্পর্কে জানেন৷ তাঁর আশা, এ বিষয়ে সমাজের মনোভাবে পরিবর্তন আসবে৷ তিনি বলেন, ‘‘সমাজে এই বিষয়টি আরও বেশি গুরুত্ব পাবে, এটাই আমার আশা৷ জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটা সমস্যা, যার উপর সমাজ হিসেবে আমাদেরও প্রভাব রয়েছে৷ খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কেও সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে৷''

ফ্রাংক এভ্যার্ট সেই সঙ্গে বিজ্ঞানের উপরেও ভরসা করছেন৷ নতুন ও উন্নত প্রজাতির শস্যের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্ষুধার কিছুটা মোকাবিলার চেষ্টা করতে হবে৷

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান