1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চাষিদের জন্য খরার ভবিষ্যদ্বাণী

২ মে ২০১৮

আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে বড় শত্রু সম্ভবত খরা৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গবেষণা প্রকল্পে খরার আগাম সতর্কতা সংকেত ও পানিসম্পদের উন্নততর ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ চলেছে৷

https://p.dw.com/p/2wzPO
ছবি: picture-alliance/Photoshot/L. Xiaopeng

আফ্রিকাতে সারা বছর প্রতি মরসুমে খরার বিপদ৷ পানির আকালের ফলে স্থানীয় পরিবেশ প্রণালী বিপন্ন হয়ে পড়ে, যার ফলে কৃষিপ্রধান এলাকাগুলির বিপদ বাড়ে৷ জলবায়ু পরিবর্তন থেমে নেই, কাজেই আফ্রিকায় আরো ঘন ঘন খরা হবে ও সেই খরা তীব্রতর হবে বলে গবেষকদের আশঙ্কা৷

দক্ষিণ আফ্রিকার লিম্পোপো প্রদেশে এই ছোট্ট দুগ্ধ সমবায়টি স্থানীয় গ্রামবাসীদের জন্য দুধ উৎপাদন করে থাকে৷ সমবায় সভাপতি স্টিফেন লেবোৎসা বললেন,‘‘খরা হলে ছোট খামারগুলো ধসে পড়বে, কাজ করতে পারবে না,কোনোরকম লাভ করতে পারবে না৷ আমি যদি খরার ব্যাপারে আগে থেকে সতর্কবার্তা পেতাম, তাহলে আমি আমার গরুবাছুরদের জন্য কিছুটা খাদ্যের ব্যবস্থা করতে পারতাম; দেখতে পারতাম, আমার বাঁধটা ঠিক রয়েছে কিনা, তাতে যথেষ্ট পানি আছে কিনা৷''

একদল ইউরোপীয় ও আফ্রিকান বিজ্ঞানীরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গবেষণা প্রকল্পে লিম্পোপোয় এসেছেন ও ঘুরে দেখছেন, খরার প্রস্তুতির জন্য স্থানীয় চাষিদের কী ধরনের সাহায্য দেওয়া যেতে পারে৷

খরার ঝুঁকি

গবেষণা সমন্বয়কারী জঁ-মারি ওনেমা জানালেন, ‘‘স্বভাবতই খরা জনগণের সবচেয়ে দুর্বল অংশের উপর আঘাত হানে, তাদের খাদ্য নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য, এমনকি স্বাস্থ্যবিধানে সমস্যার সৃষ্টি করে৷ গোটা আফ্রিকা মহাদেশেই তা পরিলক্ষিত হয়৷ আমাদের প্রকল্পের লক্ষ্য হল, আফ্রিকায় খরা জনিত ঝুঁকিগুলি কমানো বা নির্মূল করা৷''

কৃষকরা প্রধানত টেলিভিশনে স্বল্পমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাসের উপর নির্ভর করেন৷ স্যাটেলাইট এবং ভূপৃষ্ঠ থেকে সংগৃহীত তথ্যভিত্তিক মাঝারি বা দীর্ঘমেয়াদি মডেলগুলি এতোই জটিল যে, সাধারণ মানুষদের পক্ষে তা বোধগম্য নয়৷

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ মিশা ভ্যার্নার বললেন, ‘‘এসব অবশ্যই খুব টেকনিক্যাল তথ্য, যা একজন খামারচাষির পক্ষে সহজে বোঝা সম্ভব নয় – আর বোঝার প্রয়োজনও নেই বলে আমি মনে করি৷ চাষিরা কীভাবে চাষ করবেন, গাইবাছুরকে কী খাদ্য দেবেন, এই সব সিদ্ধান্ত নেন এবং এমন সব মানদণ্ড ব্যবহার করেন, যার সঙ্গে এই সব মানচিত্রের সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই৷ ওরা বোঝেন, ওদের খামার কীভাবে চলে; সেটা ওদের বলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই৷ তবে আমরা ওদের কিছু বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ খবরাখবর দিতে পারি, যার সাহায্যে ওরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, খরার ক্ষেত্রে আরো সহজে স্বাভাবিক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন৷''

সুলভ সতর্কতা

গবেষকরা একটি আগাম সতর্কসংকেত প্রণালী নিয়োগ করার প্রস্তাব দিচ্ছেন, যা যাবতীয় লভ্য তথ্যের ভিত্তিতে কিছু সহজ সুপারিশ করতে পারবে৷ বিজ্ঞানীরা, কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় মানুষজন মিলে সেই খরা সতর্কতা প্রণালীকে নির্ভরযোগ্য ও কর্মক্ষম করে তুলবেন৷

যুগ্ম গবেষণা কেন্দ্রের খরা গোষ্ঠীর প্রধান ইয়ুর্গেন ফোগ্ট বললেন, ‘‘ইউরোপীয় পর্যায়ে আমরা নানা ধরনের ডাটা দিতে পারি, যেমন আবহাওয়া সংক্রান্ত ডাটা – মনিটরিং ডাটা অথবা অন্তত আগামী কয়েকদিনের জন্য ডাটা ফোরকাস্ট বা আবহাওয়ার পূর্বাভাস৷ কাজেই যুগ্ম গবেষণা কেন্দ্রে আমাদের একটি কাজ হল নানা ধরনের ‘ইন্ডিকেটর' নির্দেশ করা, যেগুলি মহাদেশ পর্যায়ে বা আঞ্চলিক পর্যায়ে, এমনকি স্থানীয় পর্যায়েও অঙ্ক কষে বার করা সম্ভব৷''

গবেষকরা গোটা আফ্রিকা মহাদেশ জুড়ে পানিসম্পদের ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষণ করে দেখছেন; দেখছেন কীভাবে আফ্রিকার বিভিন্ন অঞ্চলগুলিতে প্রশাসন ও সহযোগিতার উন্নতি ঘটানো সম্ভব৷

দক্ষিণ আফ্রিকার পানি বিভাগের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক জ্যাকি ভেন্টার বললেন, ‘‘পরিস্থিতি হল এই যে, দক্ষিণ আফ্রিকায় পর্যাপ্ত পানি নেই৷ বর্ষাকালটা ছোট এবং দীর্ঘ শীতে নদীনালায় পানি কমে আসে৷ কাজেই পানিসম্পদের উন্নততর ব্যবস্থাপনা নিয়ে আরো গবেষণার প্রয়োজন৷''

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য