1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

চীনের উপর চাপ বাড়াতে কোপ বসালেন ট্রাম্প

১৬ মে ২০১৯

ওয়াশিংটন-বেইজিং বাণিজ্য যুদ্ধের মাঝে চীনের হুয়াওয়েই কোম্পানির উপর আনুষ্ঠানিক নিষেধাজ্ঞা চাপালো ট্রাম্প প্রশাসন৷ তা সত্ত্বেও চীনের সঙ্গে সার্বিক বোঝাপড়ার আশা প্রকাশ করছেন ট্রাম্প৷

https://p.dw.com/p/3IZrQ
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: picture-alliance/dpa

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের ক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রশাসন এতকাল শাস্তিমূলক শুল্ককে বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগিয়ে এসেছে৷ সেইসঙ্গে চীনের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি হুয়াওয়েই-এর কার্যকলাপে রাশ টানতে ওয়াশিংটন একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে৷ ক্যানাডায় সেই কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার গ্রেফতার ও তাঁর প্রত্যর্পণের প্রচেষ্টা থেকে শুরু করে গোটা বিশ্বে উন্নত ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করার ক্ষেত্রে হুয়াওয়েই-কে দূরে রাখতে চাপ সৃষ্টি করে চলেছে ট্রাম্প প্রশাসন৷ ওয়াশিংটনের দাবি, চীনা রাষ্ট্রের হয়ে গোটা বিশ্বে নজরদারি চালাতে চায় এই কোম্পানি৷ তাই জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে তাদের সরঞ্জাম ব্যবহার করা বিপজ্জনক৷

বুধবার সেই নীতিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেল ট্রাম্প প্রশাসন৷ মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হুয়াওয়েই কোম্পানির উপর আনুষ্ঠানিকভাবে জোরালো নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে৷ ফলে সরকারি অনুমতি ছাড়া চীনের এই কোম্পানি ও তাদের প্রায় ৭০টি সহযোগী কোম্পানির কোনো সরঞ্জাম বা প্রযুক্তি কেনা বেআইনি হয়ে গেল৷ মার্কিন জাতীয় স্বার্থ ও পররাষ্ট্র নীতির স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী উইলবার রস৷

বুধবারই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প টেলিকমিউনিকেশনস ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন৷ তার আওতায় অ্যামেরিকার কোনো কোম্পানি এমন কোনো টেলিকমিউনিকেশন সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারবে না, যা মার্কিন জাতীয় স্বার্থ খর্ব করে৷

কোণঠাসা হুয়াওয়েই কোম্পানি অবশ্য গুপ্তচরবৃত্তির যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে চলেছে৷ এমনকি মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ সৃষ্টি করারও প্রস্তাব দিয়েছে তারা৷ তাছাড়া ৫জি প্রযুক্তি চালু করার ক্ষেত্রে তারা যে সস্তার অবকাঠামো গড়ে দিতে পারে, অন্য কোম্পানিগুলির সেই ক্ষমতা নেই বলেও দাবি করেছে হুয়াওয়েই৷ ফলে আখেরে মার্কিন কোম্পানি ও ভোক্তাদেরই ক্ষতি হবে৷

ট্রাম্প প্রশাসন এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে চীনের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করতে সমর্থ হলো৷ বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বোঝাপড়ার লক্ষ্যে দুই পক্ষের মধ্যে যে আলোচনা প্রক্রিয়া চলছে, অ্যামেরিকা তাকে এখনো গঠনমূলক হিসেবে তুলে ধরছে৷ এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলে বাণিজ্যমন্ত্রী স্টিভ মেনুচিন চীন সফরের ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে তাঁর ‘বন্ধুত্ব' তুলে ধরে সে দেশের সঙ্গে বোঝাপড়ার আশা প্রকাশ করেছেন৷

চীনের প্রতি এমন ‘নরম-গরম' নীতির মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসন একাধিক লক্ষ্য পূরণ করতে চাইছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ একদিকে চীনের বাজারে মার্কিন কোম্পানিগুলির স্বার্থ রক্ষা করতে বেশ কিছু বৈষম্যমূলক নীতি বদলাতে সে দেশকে বাধ্য করতে চান ট্রাম্প৷ সেইসঙ্গে চীনকে অ্যামেরিকা থেকে আরও কৃষিপণ্য আমদানির জন্য চাপ দিচ্ছেন ট্রাম্প৷ বর্তমান সংকটের ফলে সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যা ও মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাঁর ‘অ্যামেরিকা ফার্স্ট' নীতির আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহ দিচ্ছেন৷ তবে চীন সেই হিসেব বানচাল করে দিতে পারে, এমন আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷

এসবি/এসিবি (রয়টার্স, ডিপিএ)