1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘চুক্তি ছাড়া’ ব্রেক্সিট?

২১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ব্রেক্সিটের পর আয়ারল্যান্ড সীমান্ত ও ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে, তা নিয়ে মতৈক্যে পৌঁছাতে পারছে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য৷ সেক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত চুক্তি না হলে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া যাবে সে প্রস্তুতিও নিচ্ছে ইইউ৷

https://p.dw.com/p/35I3R
ছবি: picture-alliance

ব্রিটেনের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ড সীমান্ত ব্যবস্থাপনা নিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকার অভিযোগ করছে ইইউ৷ যুক্তরাজ্যের অংশ হয়ে থাকা নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার সীমান্ত কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে তা নিয়েই চলছে মতবিরোধ৷

অস্ট্রিয়ার সালসবুর্গ শহরে বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের নেতাদের বৈঠকে আন্তরিক পরিবেশ দেখা গেলেও সমঝোতার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে অগ্রগতি হয়নি৷

অনানুষ্ঠানিক এই বৈঠকে তাই উদ্বেগ দেখা দেয় যে, ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ যে সময়সীমা রয়েছে, তার মধ্যে ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি এবং এই জোট থেকে মসৃনভাবে তাদের বিদায়ের প্রস্তুতি না-ও হতে পারে৷

ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক বলেন, ‘‘সবাই যে মতামত দিয়েছে তাতে দেখা যায়, যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবে ইতিবাচক উপাদান থাকলেও সেখানে বর্ণিত অর্থনৈতিক সহযোগিতার রূপরেখা কাজে আসবে না৷ কারণ, এতে একক বাজার দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়৷''

এর পরপরই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে বলেন, আলোচনার টেবিলে একমাত্র তার প্রস্তাবই ‘চিন্তা করার মতো ও গ্রহণযোগ্য’৷

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মে'র পক্ষ থেকে এই ধরনেরই বার্তা আসছে৷ এ প্রেক্ষাপটে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে বলেন, চুক্তি না হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে ‘আরো প্রস্তুতি’ নিয়েছে ইইউ৷

আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারও বলেছেন, ‘নো ডিল ব্রেক্সিট’ পরিস্থিতির জন্য তাঁর সরকারও ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে৷

আয়ারল্যান্ড ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে কঠোর সীমান্ত ব্যবস্থাপনা এই দ্বীপে শান্তির জন্য হুমকি তৈরি করবে বলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের আশঙ্কা৷ কিন্তু টেরেসা মে জানিয়েছেন, তিনি কোনোভাবেই যুক্তরাজ্যকে ‘দুটি ভিন্ন রীতি-নীতির সীমান্তে বিভাজনের’ বিষয়টি মেনে নিতে পারেন না৷

আইরিশ সীমান্ত নিয়ে শিগগিরই নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি৷ এখন যে প্রস্তাব টেবিলে আছে, তার বাস্তবায়ন ব্রেক্সিট নিয়ে চূড়ান্ত চুক্তি না হলেই হতে পারে৷ এই সংকট সমাধানে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে উভয়পক্ষ৷

বাণিজ্যের ক্ষেত্রে দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে সামান্যই৷ ব্রেক্সিটের পরেও অবাধে পণ্য আনা-নেওয়ার সুযোগ চাইছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী৷ তবে তাদের জন্য শুধু সুবিধাজনক শর্ত মেনে নিতে নারাজ ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ বলেছেন, ‘‘ইউরোপ একটা লা কার্টে (শুধু পছন্দমতো জিনিস নেওয়ার) মেনু নয়৷’’

ব্রেক্সিট নিয়ে সমঝোতা আলোচনার জন্য আগামী ১৮ অক্টোবর মিলিত হবেন দুই পক্ষের নেতারা৷ ওই দিনকেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সমঝোতায় পৌঁছানোর শেষ সুযোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে৷ ব্রেক্সিট চুক্তি হয়ে গেলে আগামী বছর ১ এপ্রিল থেকে তা কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে৷ চুক্তি হলে তা বাস্তবায়নের আগে ইইউ পার্লামেন্টের পাশাপাশি সব সদস্য দেশের পার্লামেন্ট ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তার অনুসমর্থন হতে হবে৷

নেতারা এখন চূড়ান্ত চুক্তির জন্য সময়সীমা আরেকটু বাড়িয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷

জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল বলেছেন, ‘‘আজ এটা স্পষ্ট যে, অক্টোবরের মধ্যে আমাদের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দরকার এবং তারপর নভেম্বরের মধ্যে সবকিছু চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে৷’’

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবে অনেক বিষয়ে অভিন্ন অবস্থান রয়েছে৷ বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, বিদেশি সহযোগিতার বিষয়ে৷

‘‘তবে ভবিষ্যৎ বাণিজ্য সম্পর্ক কেমন হবে এ প্রশ্নে এখনো অনেক কাজ করতে হবে৷’’

এএইচ/এসিবি (এপি/এএফপি/রয়টার্স)