1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘জলবায়ু-ন্যায়বিচার পতাকা’ উড়ছে কেওক্রাডং-এ, প্রতীকী আদালত ঢাকায়

১২ নভেম্বর ২০১০

বান্দরবানের কেওক্রাডং-কে এক সময় বলা হতো বাংলাদেশের সুউচ্চ পর্বত৷ আর এই পর্বতের চূড়োয় উড়ছে ‘জলবায়ু-ন্যায়বিচার পতাকা’৷ অন্যদিকে, বাংলাদেশে বসেছিল বিশ্বের প্রথম প্রতীকী জলবায়ু আদালত৷

https://p.dw.com/p/Q6hI
ছবি: AP

জলবায়ু-ন্যায়বিচারের দাবিতে দেশের অন্যতম উচ্চ পর্বতশৃঙ্গ কেওক্রাডংয়ে পতাকা উড়িয়েছে একদল তরুণ৷ অতিসম্প্রতি ১০ তরুণ দুর্গম পাহাড়ে পতাকা ওড়ায়৷ কিন্তু কেন এই আহ্বান? প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের মতো যে সকল দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তারা কি তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ পাবে? এই প্রশ্ন সকলের মধ্যে৷ আর এ জন্য প্রয়োজন ন্যায়বিচার৷

বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ১০ তরুণের অভিযান শুরু হয় ৭ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের 'অপরাজেয় বাংলা' ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে৷ প্রতিকূল আবহাওয়া, বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত পাহাড়ি পথ বেয়ে পাহাড়ে আরোহণ করে পতাকা উড়িয়েছেন তারা৷ ১০ তরুণ অভিযাত্রীর বক্তব্য, ‘শুধু জলবায়ু-ন্যায়বিচারের জন্যই তাদের এ অভিযান৷' তারা বলেন, ২০০৯ সালের ডিসেম্বরে কোপেনহেগেন সম্মেলনে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির মত অবিচারের শিকার মানুষেরা অনেক ফাঁকা প্রতিশ্রুতি শুনেছেন৷ ২০১০ সালের আসন্ন কানকুন সম্মেলনে আমরা ফাঁকা কথা নয়, চাই প্রকৃত কাজের ত্বরিত পদক্ষেপ৷ এ জন্যই এ পতাকা উত্তোলন৷

জলবায়ু নিয়ে নানা কর্মসূচির মধ্যে আরেকটি কর্মসূচি সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো৷ যা বেশ সাড়া জাগিয়েছে৷ ঢাকায় স্থাপিত হলো বিশ্বের প্রথম প্রতীকী জলবায়ু আদালত৷

Landscape of Chittagong Hill Tracts Region, Bangladesh
ছবি: DW / Golam Mustofa Sarowar

সেই আদালতে দেয়া রায়ে বলা হলো, আন্তর্জাতিক জলবায়ু আদালত গঠন করার৷ পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী উন্নত দেশগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ধারা যুক্ত করতে বলেছেন প্রতিকী আদালতের বিচারকরা৷ রায় ঘোষণা করেন পাঁচ সদস্যের জলবায়ু আদালতের প্রধান বিচারক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান৷ রায়ে তিনি বলেন, প্রতীকী হলেও আজকের এ আদালত হচ্ছে বিশ্বের প্রথম জলবায়ু আদালত৷ এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক জলবায়ু আদালত গঠনের পথে যাত্রা শুরু হলো৷ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে 'গ্রামীণ জীবনযাত্রার স্থায়ী উন্নয়নের জন্য প্রচারাভিযান' নামে একটি সংস্থা স্থাপন করে এ জলবায়ু আদালত৷

জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের আইনগত অধিকার নেই৷ প্রতীকী জলবায়ু আদালতকে এ কথা জানান সেন্টার ফর বাংলাদেশ জেনোসাইড, বেলজিয়ামের সভাপতি ও আইনবিদ ড. আহমেদ জিয়াউদ্দিন৷ তিনি বাংলাদেশের সংবিধানে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ধারা এবং আন্তর্জাতিক জলবায়ু আদালত গঠনের অনুরোধ জানান৷

সেই আদালতের রায় প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা অক্সফামের কর্মকর্তা জিয়াউল হক মুক্তা বলেন, প্রতীকী আদালতের প্রধান বিচারক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান ১৫ দফা নির্দেশনা সংবলিত রায় ঘোষণা করেন৷ রায়ে প্রথমেই তিনি আন্তর্জাতিক জলবায়ু আদালত গঠনের আহ্বান জানান৷ অন্যান্য উল্লেখযোগ্য পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, উন্নত দেশগুলোকে বাধ্যতামূলক ক্ষতিপূরণ দেওয়া, অধিক গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন বন্ধ, বাংলাদেশের সংবিধানে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত ধারা সংযোজন এবং জরুরি ভিত্তিতে উপকূলে নিঃস্ব হওয়ার মানুষের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা৷

প্রতিবেদন: সাগর সরওয়ার

সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ আল-ফারূক