1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জার্মানিতে বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের ঈদ

রাহাত রাফি২২ আগস্ট ২০১৮

ঈদ মানে খুশি, আনন্দ৷ এ আনন্দ ভাগাভাগি করতে তাই সবাই ছুটে যান প্রিয়জনদের কাছে৷ দীর্ঘ ভ্রমণের অসহনীয় ক্লান্তিও কাউকে ক্লান্ত করে না যখন ঈদের আনন্দটুকু ভাগ করে নেয়ার সুযোগ মেলে৷ কিন্তু প্রবাসেও কি তাই?

https://p.dw.com/p/33ZSu
Eid al Adha in Heidelberg
ছবি: Md Abdul Qaium

আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার সুযোগটি প্রবাসীদের বেলায় অনেক সীমিত৷ প্রবাসী ছাত্রছাত্রীদের বেলায় সেটি আরো সীমিত৷ আত্মীয়-স্বজনের সাথে আনন্দ ভাগ করে নেয়ার সুযোগ একদিকে যেমন কম, অন্যদিকে ক্লাস, পড়াশোনা, পরীক্ষা আর কাজ এসব মিলিয়ে কাটাতে হয় একটা ব্যস্ততাময় দিন৷ অনেকের কাছেই ঈদ তখন হয়ে ওঠে শুধুই একটি ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা৷ তবে কেউ কেউ আবার সব সীমাবদ্ধতার মাঝেও উপভোগ করতে চান ঈদের আনন্দটুকু৷

বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর অনেকেই জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসেন৷ দেশটির শিক্ষার গুণগতমান ও বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা খরচে পড়ার সুযোগ থাকার কারণে উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মধ্যে জার্মানিকেই বেছে নেন বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রী৷ দেশের মতো ঈদের পরিবেশ এখানে না থাকলেও ঈদের আনন্দ উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হতে চান না এখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা৷ ঈদের নামাজে যাওয়া থেকে শুরু করে এ দিনটির জন্য বিশেষ কোনো খাবারের আয়োজন, সবাই মিলে একসাথে করে থাকেন৷ কেউ কেউ আবার তাঁদের বিদেশি বন্ধুদের সাথে ঈদ উদযাপন করেন, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেন একটি বৈচিত্র্যময় পরিবেশে৷

Eid al Fitr in Frankfurt
ছবি: Jabed Ahamed Mazumder

ফ্রাইবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি পিএইচডি গবেষক মো. সাইফুল ইসলাম৷ তিন বছর ধরে আছেন জার্মানিতে৷ কেমন কাটে জার্মানিতে ঈদ– জানতে চাইলে সাইফুল ডয়চে ভেলেকে বলেন, এখানকার ঈদ আসলে বাংলাদেশের মতো নয়৷ আত্মীয়-স্বজনের সাথে ঈদ উপভোগ করার সুযোগ এখানে নেই৷ তবে এখানে থাকা বাংলাদেশিদের সবাই ঈদের দিনটিতে একত্রিত হন বলে জানান তিনি৷ ‘‘ফ্রাইবুর্গ শহরে থাকা বাংলাদেশিরা এ বছর একসাথে ঈদের নামাজে গিয়েছিলাম৷ দেশের মতো পুরোপুরি না হলেও আমরা

চেষ্টা করেছি সবাই মিলে দিনটিকে উপভোগ করতে,'' জানান সাইফুল৷ বাংলাদেশে ঈদ উদযাপনের সাথে জার্মানিতে ঈদ উদযাপনের কোনো পার্থক্য অনুভব করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন ‘‘বাংলাদেশে আমরা সবাই পরিচিতরা একসাথে নামাজ পড়ি৷ কিন্তু এখানে আমরা নামাজ পড়ছি বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে, যাদের কাউকে আমি চিনি না৷ নামাজ শেষে যখন আমরা হাত মিলাই বা কোলাকুলি করি, তখন মনে হয় না যে আমি তাঁদেরকে চিনি না৷'' ভিন্ন পরিবেশে ভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মানুষের সাথে ঈদের নামাজ পড়ার এ বিষয়টিকে তিনি উপভোগ করেন বলেই জানালেন সাইফুল৷

জার্মানির বিভিন্ন শহরে পড়তে আসা বাংলাদেশি ছাত্র-ছাত্রীদের রয়েছে সামাজিক সংগঠন, যার মাধ্যমে তাঁরা মূলত একত্রিত হন৷ বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় এ সংগঠনগুলো নানা ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকে৷

Eid al Adha in Heidelberg
ছবি: Tanjila Tabassom

জার্মানির হোখশুলে কার্লসরুয়ে'তে বিজনেস ইনফরমেটিক্স বিভাগে পড়ছেন মো. আবদুল কাইয়ুম৷ প্রায় ছয় বছর ধরে জার্মানিতে থাকা আবদুল কাইয়ুম ডয়চে ভেলেকে জানান, জার্মানিতে তিনি একটু ভিন্নভাবে ঈদ উদযাপন করেন৷ প্রথমে তাঁর শহরে থাকা বাংলাদেশিদের সাথে এ বছর ঈদের নামাজ শেষে দুপুরের খাবার খেয়েছেন৷ বাংলাদেশিদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা তাঁর মুসলিম বন্ধুদের আয়োজন করা আরেকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন তিনি৷ আবদুল কাইয়ুম জানান, বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করাটাকেই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে তাঁর কাছে৷ ঈদের দিনে দেশে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের কথা মনে পড়ে কিনা জানতে চাইলে আবদুল কাইয়ুম বলেন, আসলে ঈদের আনন্দ পরিপূর্ণ হয় যদি তা প্রিয়জনদের সাথে উদযাপন করা যায়৷ তবে ঈদের দিনটিতে তিনি দেশে থাকা পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে এ অভাবটুকু কাটানোর চেষ্টা করেন৷

ক্লাস, পড়াশোনা ও চাকরি– এসব মিলিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে হয় ছাত্র-ছাত্রীদের৷ গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার শেষে এখন জার্মানিতে ছুটি চলছে৷ যে কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় দেশটিতে পড়তে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা এ বছর ঈদ উদযাপনের সময়টুকু তাঁদের ব্যস্ততার মাঝেও বের করে নিতে পেরেছেন৷ হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ বিভাগে অধ্যয়নরত নামিয়া আক্তার৷ পড়াশোনার পাশাপাশি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকরি করেন তিনি৷ ডয়চে ভেলেকে নামিয়া জানান, এ বছর বিশ্ববিদ্যালেয় গ্রীষ্মকালীন সেমিস্টার শেষে ছুটি থাকার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় ঈদ উদযাপনে তাঁর একটু সুবিধা হয়েছে৷ ‘‘চাকরি, পড়াশোনা মিলিয়ে এখানে আমাদের একটি ব্যস্ত জীবন কাটে৷ ঈদ উদযাপন করার জন্য এর মাঝেই আমরা সময় বের করে নেই,'' জানালেন নামিয়া৷ ঈদে বাংলাদেশের কোন জিনিষটি সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে জানতে চাইলে নামিয়া বলেন, পরিবার পরিজনদের কথা খুব মনে পড়ে৷ তবে এখানে বসবাসরত বাংলাদেশিদের সাথেও এক ধরনের আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাঁর৷ তাঁদের সাথে ঈদ উদযাপন করে দেশে থাকা প্রিয়জনদের অভাব কাটানোর চেষ্টা করেন বলে জানান তিনি৷ 

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য

আরো সংবাদ দেখান