1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সহায়তা করছে ক্লোনিং পদ্ধতি

১৫ মার্চ ২০২১

কোনো প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলে আফসোস ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না৷ একদল বিজ্ঞানী ক্লোনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এমন প্রাণির সংখ্যা ও জিনগত বৈচিত্র্য বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করছেন৷

https://p.dw.com/p/3qdWL
ছবি: DW

কুয়র্ট নামের এক জংলি ঘোড়াই প্রথমবার সফলভাবে ক্লোন করা সম্ভব হয়েছিল৷ সেটা ছিল এক বিশাল সাফল্য৷ কুয়র্ট মোটেই শুধু একটা এক্সপেরিমেন্ট ছিল না৷ গবেষকেরা এখন লুপ্তপ্রায় প্রাণী ক্লোন করে কোনো প্রজাতি লোপ পাওয়ার গতি কমিয়ে আনতে পারেন৷ এভাবে গোটা ইকোসিস্টেমের উন্নতিও ঘটাতে পারেন৷

কিন্তু ঠিক কীভাবে সেটা সম্ভব হবে? এমন প্রত্যাশা কতটাই বা বাস্তবসম্মত?

গোটা বিশ্বেই ক্লোনিং অত্যন্ত বিতর্কিত বিষয়৷ তার পেছনে কারণও রয়েছে৷ মানুষ ঈশ্বরের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলে অথবা বিভিন্ন প্রজাতির অনন্ত নকল করে গেলে জীববৈচিত্র্য লোপ পেতে পারে বলে আশঙ্কা একেবারে অমূলক নয়৷ কিন্তু কুয়র্টের লক্ষ্য এর ঠিক বিপরীত৷ এই প্রাণীটি নাকি প্রজেভালস্কি প্রজাতির জংলি ঘোড়ার মধ্যে বৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনবে৷

কিন্তু একটি প্রাণীর হুবহু নকল এক ক্লোন কীভাবে জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে পারে?

বর্তমানে প্রজেভালস্কি প্রজাতির প্রায় ২,০০০ ঘোড়া বেঁচে আছে৷ মাত্র ১২টি জংলি ঘোড়া সেগুলির পূর্বপুরুষ! কুয়র্টকে ক্লোন করতে গবেষকরা এমন একটি মাত্র জিন বেছে নিয়েছেন, অনেক বছর আগে যেটিকে জমাট করে রাখা হয়েছিল৷ এমনটা না করলে ‘জিন পুল’ থেকে সেটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত৷ একটি মাদি ঘোড়াকে সারোগেট বা ভাড়াটে মা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছিল৷

ক্লোনিং পদ্ধতি দিয়ে প্রাণী রক্ষা

কুয়র্টই প্রথম কোনো লুপ্তপ্রায় প্রাণী নয়, যেটির ক্লোন করা হয়েছে৷ এর আগেও একটি বিলুপ্ত প্রাণী ক্লোন করা হয়েছিল, যদিও এ ক্ষেত্রে সাফল্যের মাত্রা ছিল সীমিত৷ বিলুপ্ত হবার তিন বছর পর পিরেনিস অঞ্চলের ছাগল ক্লোন করা হয়৷ ফ্রিজ করা ত্বকের নমুনার দৌলতে সেটা সম্ভব হয়েছিল৷ দুশোরও বেশি এমন ছাগলের ভ্রূণ সৃষ্টি করার পর সাতটির বিকাশ সফল হয়৷ জন্মগ্রহণের সময় পর্যন্ত একটি অক্ষত ছিল৷ কিন্তু ভূমিষ্ঠ হবার কয়েক মিনিট পর শাবকটির মৃত্যু হয়৷

জংলি ক্লোনগুলির এক শতাংশও শেষ পর্যন্ত বাঁচতে পারে না৷ জংলি জানোয়ার সম্পর্কে যথেষ্ট গবেষণা ও সেগুলির নাগাল না পাওয়ার কারণে গোটা প্রক্রিয়া আরও কঠিন হয়ে ওঠে৷

চোখে দেখলে কুয়র্টের স্বাস্থ্য ভালই মনে হয়৷ প্রথম ক্লোন হিসেবে এই প্রাণীটি প্রকৃতির মধ্যে জিনগত বৈচিত্র বাড়াতে পারবে, এমন প্রত্যাশার মাত্রা কম নয়৷ রিভাইভ অ্যান্ড রিস্টোর উদ্যোগের বিজ্ঞানী বেন নোভাক বলেন, ‘‘প্রকৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে এটা একটা যুগান্তকারী পরিবর্তন বটে৷ আমরা আর শুধু বিপর্যয় ঘটলে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছি না, এমন অবস্থা প্রতিরোধ করতে আগেই সক্রিয় হচ্ছি৷’’

বিজ্ঞানীদের যে দল কুয়র্টকে ক্লোন করেছে এবং প্রকৃতি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ক্লোনিংয়ের আইডিয়ার পক্ষে সওয়াল করছে, বেন নোভাক তাদেরই একজন৷ তিনি মনে করেন, ‘‘লুপ্তপ্রায় প্রজাতির প্রাণীগুলিকে সাহায্য করতে ক্লোনিং প্রক্রিয়াকে নানাভাবে কাজে লাগানোই এই আইডিয়ার মূলমন্ত্র৷ এমন প্রাণীর সংখ্যা বাড়াতে অথবা জিনগত বৈচিত্র্য বজায় রাখতে এই প্রযুক্তি প্রয়োগ করা সম্ভব৷’’

লুপ্তপ্রায় প্রাণীর সংখ্যা বাড়ালে সেই প্রজাতি নিজেদের অস্তিত্ব কিছুটা সামলে নিতে পারে বটে, কিন্তু এমন প্রাণীর জিনগত বৈশিষ্ট্য সীমিত থেকে যাবে৷

অদিতি রাজাগোপাল/এসবি

২০১৮ সালের ছবিঘরটি দেখুন...