1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জেরুসালেম বিক্রির জন্য নয়

২৯ জানুয়ারি ২০২০

মধ্যপ্রাচ্যে সংকটের সমাধানের লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মঙ্গলবার এক পরিকল্পনা পেশ করেন৷ ইসরায়েল সেই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও ফিলিস্তিনিরা কড়া সমালোচনা করে এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করেছে৷

https://p.dw.com/p/3Wx6U
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প
ছবি: picture-alliance/Consolidated News Photos/CNP/J. Lott

বহু জল্পনাকল্পনার পর অবশেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে তাঁর পরিকল্পনা পেশ করলেন৷ এর আওতায় এক স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ সেই রাষ্ট্রের জন্য চিহ্নিত এলাকায় ইসরায়েল আগামী চার বছরের জন্য কোনো কার্যকলাপ চালাবে না৷ জেরুসালেম শহর ইসরায়েলের অবিভক্ত রাজধানী থাকবে৷ তবে অধিকৃত পূর্ব জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদেরও রাজধানী দেওয়া হবে৷ ট্রাম্প বলেন, তিনি ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে এই পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানাতে চিঠি লিখেছেন৷ তাঁর মতে, ফিলিস্তিনিরা সম্ভবত এমন সুযোগ আর কখনো পাবে না৷ ফিলিস্তিনিদের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য তিনি ৫,০০০ কোটি ডলারের এক পরিকল্পনারও উল্লেখ করেন৷ গত বছরের গ্রীষ্মে ট্রাম্প প্রশাসন এই পরিকল্পনার রূপরেখা পেশ করেছিল৷

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর পাশে দাঁড়িয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আজ ইসরায়েল শান্তির দিশায় বড় এক পদক্ষেপ নিয়েছে৷ আমার এই স্বপ্ন দুই পক্ষের জন্যই সম্ভাবনা সৃষ্টি করছে৷ বাস্তবসম্মত এই দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানসূত্র একদিকে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র অন্যদিকে ইসরায়েলের নিরাপত্তার ঝুঁকি দূর করবে৷

বলা বাহুল্য, নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই পরিকল্পনার প্রতি গভীর সমর্থন জানিয়ে বলেন, ইহুদি রাষ্ট্রের জন্য এটি এক ঐতিহাসিক দিন৷ ট্রাম্পের পরিকল্পনার আওতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অধিকৃত এলাকায় ইহুদি বসতিগুলিকে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় নেতানিয়াহু গভীর সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন৷ ফিলিস্তিনি পক্ষ ট্রাম্পের সব শর্ত মেনে নিলে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন নিয়ে আলোচনা করতেও তিনি প্রস্তুত৷

কার্যত ইসরায়েলের যাবতীয় দাবি মেনে নিয়ে ট্রাম্প ফিলিস্তিনিদের জন্য শুধু এক ‘প্রতীকী রাষ্ট্র' স্থির করেছেন বলে বিভিন্ন পক্ষ সমালোচনা করছে৷ ১৯৬৭ সালের সীমানা ও ইহুদি বসতিগুলির এলাকার উপর সব দাবি ছেড়ে কোনো সামরিক বাহিনী ছাড়াই এই রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছে৷ তবে তার আগে ফিলিস্তিনিদের দৃঢ়ভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে৷ ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের ইসারয়েলের ভূখণ্ডে নিজেদের ভিটেমাটিতে ফেরার কোনো অধিকারও থাকবে না৷ হোয়াইট হাউস ও ট্রাম্প প্রস্তাবিত সেই রাষ্ট্রের সীমানাসহ একটি মানচিত্র টুইট করেন৷ তাতে গাজা ও মিশর সীমান্তের কাছে ইসরায়েলের মরুভূমি এলাকাও প্রস্তাবিত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের মধ্যে অন্তর্গত রাখা হয়েছে৷ 

ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাস ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য শান্তি পরিকল্পনাকে ‘ষড়যন্ত্র' হিসেবে বর্ণনা করে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর উদ্দেশ্যে বলেছেন, ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার বিক্রি করা হবে না৷ তিনি বলেন, ‘‘জেরুসালেম ইজ নট ফর সেল৷'' তাঁর মতে, ফিলিস্তিনিদের সব অধিকারও বিক্রি বা দরকষাকষির জন্য নয়৷ ট্রাম্পের উদ্দেশ্যে আব্বাস বলেন, আপনার চুক্তি, অর্থাৎ ষড়যন্ত্রও অনুমোদন করা হবে না৷

ইউরোপীয় ইউনিয়ন স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যে একমাত্র ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে যে সমাধানসূত্র উঠে আসবে, এই রাষ্ট্রজোট ঐক্যবদ্ধভাবে তার প্রতি সমর্থন জানাতে প্রস্তুত৷ ইইউ-র পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল জানিয়েছেন, ব্রাসেলস ট্রাম্প প্রশাসনের পরিকল্পনা বিশ্লেষণ করে তার মূল্যায়ন করবে৷ তবে অ্যামেরিকার প্রস্তাবের ফলে আলোচনার ভিত্তিতে এই সংকট সমাধানের সুযোগকে স্বাগত জানান তিনি৷ সেই আলোচনায় কোনো পক্ষকে বাইরে রাখলে চলবে না, বলেন বরেল৷

এসবি/কেএম (এএফপি, রয়টার্স, ডিপিএ)