1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

জোন ভিত্তিক ছুটি নিয়ে দেশজুড়ে বিভ্রান্তি

১৬ জুন ২০২০

সংক্রমণ বাড়ছে৷ অন্যদিকে অর্থনীতিও বাঁচাতে হবে৷ তাই দেশজুড়ে সাধারণ ছুটি না দিয়ে জোন ভিত্তিতে ভাগ করে ছুটির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ যার বাস্তবায়ন নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে সারা দেশে৷

https://p.dw.com/p/3drUG
ছবি: DW/M. Rashed

শুরুতে লাল ও হলুদ জোনে সাধারণ ছুটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত হলেও পরে সরকার শুধু লাল জোন ছুটির আওতায় থাকবে বলে জানায়৷

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর গত ২৬ মার্চ থেকে টানা ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি শেষে গত ৩১ মে থেকে বাংলাদেশে সীমিত পরিসরে অফিস-আদালতসহ সব কিছু খুলে গেছে৷ সেইসঙ্গে সংক্রমণ এবং মৃত্যুও বাড়ছে৷

যা নিয়ন্ত্রণে সরকার জোন ভিত্তিক ছুটির কৌশল গ্রহণ করেছে৷ কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতায় এ কৌশল কতটা কার্যকর হবে বা তা বাস্তবায়ন আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে জনগণ দ্বিধাবিভক্ত৷

সবুজ জোনে বাসা, অফিস পুরাই লাল

যাওয়ার পথে হলুদ৷ বোঝো আমার হাল!

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোমেন রায়হান তার ‘সবুজ-হলুদ-লাল' ছড়ায় এভাবেই ছন্দে ছন্দে জোন নিয়ে নিজের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন৷ ফেসবুকে পোস্ট করা তার এই ছড়া বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ কারণ, তিনি অধিকাংশ সাধারণ মানুষের মনের কথা বলেছেন৷

রফিকুল ইসলাম রফিক নামে একজন ফেসবুকে লেখেন, লাল-হলুদ-সবুজ জোন করে কী হবে, ‘‘যদি এক জোনের মানুষ আরেক জোনে যেতে পারেন!! কে কোন জোনে সেটাই বা নির্ধারণ হবে কীভাবে?? মুখে বা পাছায় রং লাগিয়ে চিহ্নিত করা হবে?? ব্যাপারটা হাস্যকর হয়ে গেলো না??’’

সিরাজুল হোসাইন নামে একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের মৃত্যুর খবর পোস্ট করে লেখেন, ‘‘আসুন প্রতিটি মৃত্যুতে চোখের জল ফেলি আর লাল-হলুদ-সবুজ জোন আর মোবাইল অ্যাপ নিয়ে খেলাধূলা চালিয়ে যাই৷’’

অসংখ্য মানুষ এভাবেই জোন নিয়ে নিজেদের উদ্বেগ, বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন৷

জোন নিয়ে মঙ্গলবারের বিবৃতিতে সরকার এই বিভ্রান্তি কিছুটা দূর করার চেষ্টা করেছে৷ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এদিন এক বার্তায় জানায়, ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে দেশের যেসব অঞ্চলে জনসাধারণের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে, সেসব এলাকায় সরকারের অন্যান্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে টহল দেবে সেনাবাহিনী৷

বর্তমানে রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজার এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া রেড জোনেও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে৷

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় টেকনিক্যাল কমিটির গত শনিবার বৈঠক করে দেশের ‘রেড জোন’ চিহ্নিত করে৷ তাতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ৪৫টি এলাকা সর্বোচ্চ ঝুঁকির ‘রেড জোন' হিসেবে চিহ্নিত হয়৷

লাল, হলুদ, সবুজ- এই তিন ধরনের এলাকায় কীভাবে কাজ চলবে, তা নিয়ে সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ নির্দেশনা দিয়েছে৷ রেড জোনে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সব অফিস-কারখানা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে৷

লাল অঞ্চলে কী কী বন্ধ থাকবে, কী কী খোলা থাকবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তা জানানো হয়েছে৷

কোনো অঞ্চলকে ‘রেড জোন' ঘোষণা করা হলে তা ২১ দিনের জন্য কার্যকর হবে৷ পরিস্থিতির উন্নতির ওপর ভিত্তি করে পরে ওই এলাকাকে ‘ইয়েলো' বা ‘গ্রিন' জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে৷

লালা জোন ঘোষণা নিয়ে ‘বিভ্রান্তি' এড়াতে মঙ্গলবার সরকারের এক তথ্যবিরবণীতে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়৷

সেখানে বলা হয়, ‘‘যেখানে যখন প্রয়োজন তখন সেখানে রেড জোন ঘোষণা করা হবে৷ কাজেই রেড জোন ঘোষণা বা রেড জোন পরিবর্তন একটি চলমান প্রক্রিয়া৷

‘‘স্থানীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই যখন প্রয়োজন তা করা হবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবে৷ এ বিষয়ে সকলের বিভ্রান্তি নিরসন হওয়া প্রয়োজন৷’’

এসএনএল/কেএম