1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

‘টিআইবি বিএনপির দালাল'

১৮ জানুয়ারি ২০২৪

টিআইবি-কে ‘বিএনপির দালাল' বলেছেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ প্রেস কনফারেন্সে যে কথাগুলো বলেন, সেগুলোই একটু পরিশীলিতভাবে উপস্থাপন করেছে টিআইবি৷

https://p.dw.com/p/4bQ0w
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (ফাইল ফটো)
সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (ফাইল ফটো)ছবি: bdnews24.com

বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি)  ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘টিআইবি হচ্ছে বিএনপির দালাল। তাদের প্রত্যেকটা কথা, তাদের বক্তব্য একপেশে।  একটা পক্ষে ওকালতি করে তারা। আর সরকারের বিরুদ্ধে যখন যা খুশি তাই বলে। তারা সরকারবিরোধী।''

বিএনপি ও টিআইবির সমালোচনা করে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘যে ভাষায় বিএনপি কথা বলে, একই ভাষায় টিআইবি কথা বলে। ইতিহাস থেকে আমরা এটাই উপলব্ধি করি, টিআইবি সব সময় আওয়ামী লীগ-বিরোধী। সব সময় দেখা গেছে, বিএনপির পক্ষপাতিত্ব তারা করে।''

পদ্মা সেতু নির্মাণের আগে বিশ্ব ব্যাংকের দুর্ণীতির অভিযোগ তোলার সময় টিআইবির ভূমিকার প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন,   "এই টিআইবি বলেছিল, পদ্মা সেতু অসম্ভব এবং সিপিডিও  (সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ) একই মন্তব্য করেছিল। কিছু কিছু বিষয় আছে, আমরা জবাব দেই রাজনৈতিকভাবে। দেশের মানুষের পারসেপশন যাতে ভিন্ন খাতে না যেতে পারে,  সে জন্য আমাদের কথা বলতে হয়।"

টিআইবির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে  আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘‘তারা একপেশে পক্ষপাতিত্ব করে, সেটা বলছি; সব ব্যাপারে কি মামলা ঠুকে দিতে হবে?''

তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা একটা রাজনৈতিক দল। আমাদের পার্টির এই নির্বাচনকে সামনে রেখে একটা কৌশল ছিল, রাজনীতিতে রণকৌশল থাকবেই, আমরা একটা রণকৌশল অবলম্বন করেছি। ভেতরে দ্বন্দ্ব, অন্তঃকলহ—এগুলো আওয়ামী লীগে নতুন হচ্ছে, এমন নয়। সব রাজনৈতিক দলেরই এসব ব্যাপার সুখকর নয়। এটার সমাধান আবার সেই দলই করে।''

বৃহস্পতিবার দুপুরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ তার দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘‘বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী আহমেদ প্রতিদিন প্রেস কনফারেন্স করে যে কথাগুলো বলেন, সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে গতকাল টিআইবি উপস্থাপন করেছে বলেই মনে হচ্ছে।''

‘‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে টিআইবি গবেষণা না করেই শ্যালো কিছু বিষয় বা পত্রিকার রিপোর্ট এবং তড়িঘড়ি করে কিছু তথ্য–উপাত্ত সংগ্রহ করে সেটার ভিত্তিতেই প্রেস ব্রিফিং করে। গতকালেরটা আমার সেরকম মনে হয়েছে।''

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা বলছেন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সুন্দর আর স্বচ্ছ নির্বাচন হয়েছে, সেটিকে ম্লান করার উদ্দেশ্যে টিআইবি এই রিপোর্ট দিয়েছে।''

‘‘বিভিন্ন দেশ নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার জন্য ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। পৃথিবীর শক্তিধর দেশ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশ। নতুন সরকারকে অনেকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আবার অনেকে এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার ও সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে। আমরা সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি-'' এমন দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘‘ (টিআইবির)এই রিপোর্ট আসলে কারও পক্ষ হয়ে দেওয়া হয়েছে কিনা, সেই প্রশ্ন রেখেছেন অনেকেই। কারণ, বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী আহমেদ প্রতিদিন প্রেস কনফারেন্স করে যে কথাগুলো বলেন, সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে গতকাল টিআইবি উপস্থাপন করেছে বলে মনে হচ্ছে।''

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ (ফাইল ফটো)
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ মনে করেন, ‘‘বিএনপির ভাষা আর টিআইবির ভাষা মিলে গেছে। রিজভী আহমেদ প্রতিদিন প্রেস কনফারেন্স করে যে কথাগুলো বলেন, সেগুলোকে একটু পরিশীলিতভাবে টিআইবি উপস্থাপন করেছে।’’ছবি: DW

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, ‘‘সমালোচকসহ যারা এই নির্বাচন বর্জন করেছে, প্রতিহত করেছে, প্রতিহত করতে চেয়েছে, প্রতিহত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এখনো চেষ্টা চালাচ্ছে—তাদের মুখে অস্ত্র তুলে দেওয়ার জন্য এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে বলে অনেকেই বলছেন।''

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদের মতে, টিআইবির প্রতিবেদনে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশিত হয়েছে, কারণ,‘‘নির্বাচন কমিশন যেভাবে কঠোরভাবে, সুন্দরভাবে নির্বাচন পরিচালনা করেছে; সেটির বিন্দুমাত্র প্রশংসা টিআইবির রিপোর্টে নাই।''

বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘‘নাগরিক সমাজের যে প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের ভুল-ত্রুটি উপস্থাপন করে, সরকারের সমালোচনা করে—আমরা সেগুলোকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করি। কিন্তু যখন রিপোর্ট কারো পক্ষে হয়, যখন রিপোর্ট হয় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তখন সেটি রাষ্ট্র, সমাজ, সরকার কারোরই উপকারে আসে না। সেটি তখন বিশেষ কেনো গোষ্ঠীর মুখপাত্র হয়ে দাঁড়ায়।টিআইবি যেন বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর, নির্বাচনবিরোধী অপশক্তির বা গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির মুখপাত্র না হয়, সেটি আমাদের প্রত্যাশা, আমাদের কামনা৷''

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) টিআইবি আয়োজিত 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং' শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। সংস্থাটি এক প্রতিবেদনে বলেছে, "এবারের নির্বাচন অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়নি। এ নির্বাচন বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক নির্বাচনের ভবিষ্যৎ বিবেচনায় অশনিসংকেত বলে আমরা মনে করি।" সেখানে আরো বলা হয়, ‘‘বিশেষ করে এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরবময় স্বাধীনতার যে চেতনা ও স্বপ্ন তার সাথে সাংঘর্ষিক।"    

ভোট প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক দেখাতে নিজ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী দেওয়া হলেও বেশির ভাগ আসনে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি- সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্যও করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।

এসএইচ/এসিবি (দ্য ডেইলি স্টার, দৈনিক প্রথম আলো)