1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

টিকা পৌঁছে গেছে ৬৪ জেলায়

হারুন উর রশীদ স্বপন ঢাকা
৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১

দেশের ৬৪ জেলায় করোনার টিকা পৌঁছে গেছে৷ ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পুরোদমে টিকা দেয়া শুরু হচ্ছে৷ তবে প্রথম পর্যায়ে সব টিকা দেয়া হবে, না অর্ধেক রেখে দেয়া হবে তা নিয়ে আছে সিদ্ধান্তহীনতা৷

https://p.dw.com/p/3osOb
Bangladesch Covid-19 Impfung
ছবি: Mortuza Rashed/DW

সরকারের হাতে এখন অক্সফোর্ডের ৭০ লাখ টিকা আছে৷ এরমধ্যে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের ৫০ লাখ এবং ভারত সরকারের উপহারের ২০ লাখ৷ অক্সফোর্ডের এই মোট ৭০ লাখ টিকা দিয়ে ব্যাপকভিত্তিক টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে৷ আরো দুই কোটি টিকা আসবে সেরাম থেকে পর্যায়ক্রমে৷

এদিকে কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে জুন মাস নাগাদ বাংলাদেশ আরো এক কোটি ২৭ লাখ ৯২ হাজার ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ৷ এই টিকাও অক্সফোর্ডের বলে জানা গেছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা টিকা বন্টনের যে তালিকা প্রকাশ করেছে তাতে বাংলাদেশের জন্য ওই পরিমান ভ্যাকসিনের কথা বলা হয়েছে৷ সেখানে বাংলাদেশকে অক্সফোর্ডের টিকা দেয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ প্রতি ডোজ টিকা তিন ডলার দামে দেবে তারা৷

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ও স্পোকসম্যান ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, ‘‘কোভ্যাক্স-এর ভ্যাকসিন আসবে এটা নিশ্চিত৷ তবে আমরা ওই ভ্যাকসিন হাতে না পাওয়া পর্যন্ত ওটা ধরে কোনো প্ল্যান করছি না৷ হাতে পাওয়ার পর আমরা নিশ্চিত হব৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে আমাদের ভ্যাকসিন দিচ্ছে তা আমারও তাদের ওয়েবসাইটে দেখেছি৷''

ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে ভ্যাকসিন:

দেশের ৬৪ জেলাতে করোনার টিকা পৌঁছে গেছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর৷ এই কাজে ১৪ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী এবং ২৮ হাজার ভলান্টিয়ারকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে৷ ঢাকা শহরে ৪৩টি হাসপাতালে ৩৫৪টি সেন্টারে ভ্যাকসিন দেয়া হবে৷ আর সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে৷

প্রথম পর্যায়ে ঠিক কত জনকে টিকা দেয়া হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি৷ তবে ৫০ লাখের বেশি মানুষের একটি প্রাথমিক তালিকা করা হয়েছে যার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা পাবেন৷ ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, ‘‘তাদের মধ্য থেকে কতজন শেষ পর্যন্ত রেজিষ্ট্রেশন করেন তার ওপর চূড়ান্ত তালিকা হবে৷ আর টিকা সেন্টারও প্রয়োজনে বাড়ানো হবে৷''

৭ ফেব্রুয়ারি টিকা দেয়া শুরু হলে প্রথম পর্যায়ে তারা মাসে ১৪ দিন এই টিকা দেবেন বলে  জেলা সিভিল সার্জনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে৷ যিনি যে তারিখে টিকা নেবেন তার সাথে মিলিয়ে ২৮ দিন পর দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হবে৷ কুড়িগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, তার জেলায় ৬০ হাজার ভ্যাকসিন পৌঁছেছে৷ এরমধ্যে ৩০ হাজার ভ্যাকসিন প্রথম পর্যায়ে দিতে বলা হয়েছে৷ বাকি ৩০ হাজার দ্বিতীয় ডোজের জন্য রাখতে বলা হয়েছে৷ তিনি জানান, ‘‘প্রথমে সব ভ্যাকসিন দেয়ার কথা বলা হলেও এখন আমাদের অর্ধেক বা ৫০ ভাগ ভ্যাকসিন রেখে দিতে বলা হয়েছে৷''

‘‘কোভ্যাক্স-এর ভ্যাকসিন আসবে এটা নিশ্চিত’’: নাজমুল ইসলাম

কুড়িগ্রাম জেলার সদর হাসপাতাল ছাড়াও আটটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এ টিকা দেয়া হবে৷ উপজেলায় চার জন এবং জেলায় ২০ জন স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করবেন৷

জানা গেছে জনসংখ্যা অনুপাতে দেশের জেলাগুলোতে এই ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে৷ বেক্সিমকো জেলা সিভিল সার্জনের অফিস পর্যন্ত এই টিকা পৌঁছে দিয়েছে৷ এখন সেগুলো রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা হচ্ছে৷ উপজেলা পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেয়ার  সময় আইসব্যাগে করে ভ্যাকসিন ক্যারিয়ারে পাঠানো হবে৷

ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রথম কিস্তিতে এক লাখ ৫৬ হাজার ডোজ টিকা পেয়েছে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইমতিয়াজ৷ তিনি জানান, এখানো তালিকা চূড়ান্ত হয়নি৷ জেলা থেকে একটি অগ্রাধিকার তালিকা আগেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে৷ যারা রেজিষ্ট্রেশন করবেন তারা পাবেন৷ তিনিও জানান, ‘‘আগে নির্দেশনা ছিলো সব ভ্যাকসিন দিয়ে দেয়ার৷ তবে এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে৷''

‘‘এখন আমাদের অর্ধেক ভ্যাকসিন রেখে দিতে বলা হয়েছে’’: হাবিবুর রহমান

রংপুরে পাঠানো হয়েছে দুই লাখ চার হাজার ডোজ ভ্যাকসিন৷ জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় জানান, ‘‘আমরা এর অর্ধেক টিকা প্রথম পর্যায়ে দেব৷ গতকাল(বুধবার) নির্দেশনা এসেছে বাকি অর্ধেক রেখে দিতে হবে দ্বিতীয় ডোজের জন্য৷''

সিভিন সার্জনেরা নতুন নির্দেশনায় প্রথম ধাপে অর্ধেক টিকা রেখে দেয়ার কথা বললেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ডা. নাজমুল ইসলামের কাছে এব্যাপারে কোনো তথ্য নাই৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার কাছে সরকারি যে নির্দেশনা আছে তাতে সব টিকা দেয়ার কথাই বলা আছে৷ এর বাইরে নতুন কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমার জানা নাই৷''

এনিয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য মহাপরিচালকে পাওয়া যায়নি৷ প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই টিকা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন৷ ওই দিন বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণির ২৭ জনকে টিকা দেয়া হয়৷ পরের দিন দেয়া হয় ঢাকার পাঁচ শতাধিক স্বাস্থ্যকর্মীকে৷