1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ব্রেক্সিট নিয়ে চলমান অচলাবস্থা

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সংসদে আবার পরাজয়ের মুখ দেখলেন প্রধানমন্ত্রী মে৷ ফলে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কা আরো বেড়ে গেল৷ ইইউ ব্রেক্সিট চুক্তিতে নতুন করে কোনো ছাড় দেবে না বলে ধারণা বদ্ধমূল হচ্ছে৷

https://p.dw.com/p/3DQvP
কোণঠাসা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে
ছবি: picture-alliance/empics/D. Lipinski

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে যতই ব্রেক্সিটের জট ছাড়ানোর চেষ্টা করছেন, ব্রিটেনের সংসদ তাঁর পথে ততই বাধার সৃষ্টি করছে৷ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদের মাত্র ৪৩ দিন আগে সংসদে আবার তাঁকে পরাজয়ের মুখ দেখতে হলো৷ শেষ মুহূর্তে ইইউ-র কাছ থেকে ছাড় আদায় করতে প্রধানমন্ত্রী যে চেষ্টা চালাচ্ছেন, সেই উদ্যোগের প্রতি প্রতীকী সমর্থন হিসেবে সংসদে একটি প্রস্তাব পেশ করেছিল সরকার৷ বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যরা৷ ক্ষমতাসীন টোরি দলের বেশ কয়েকজন সদস্য ভোটদানে বিরত থাকায় প্রধানমন্ত্রীকে এই পরাজয় মেনে নিতে হলো৷ টেরেসা মে নিজে ভোটাভুটির সময় সংসদে উপস্থিত ছিলেন না৷ প্রধানমন্ত্রীর এক মুখপাত্র বলেন, সংসদে পরাজয় সত্ত্বেও সরকার ২৯শে মে-র আগেই ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদলের মাধ্যমে সুষ্ঠু পরিবর্তনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে৷

সরকারের এই পরাজয়ের পর বিরোধী লেবার দলের নেতা জেরেমি কর্বিন বলেন, এই পরাজয়ের ফলে স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে, ব্রেক্সিটের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কার্যকলাপের প্রতি সংসদে কোনো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই৷ লেবার নেতার মতে, প্রধানমন্ত্রী অযথা সময় নষ্ট করে চলেছেন এবং আশা করছেন যে, কিছু একটা ঘটবে, যার ফলে তাঁর মুখরক্ষা হবে৷

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর এই পরাজয়ের ফলে ইইউ-র সঙ্গে দরকষাকষির ক্ষেত্রে তাঁর অবস্থান যে আরো দুর্বল হয়ে পড়লো, এ বিষয়ে রাজনৈতিক মহলে কোনো সন্দেহ নেই৷ সরকার পক্ষের কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি নেতা লিয়াম ফক্স এই দুর্বলতার কথা স্বীকার করেন৷ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাবি করেন যে, সংলাপ গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে৷ তিনি ব্রেক্সিট চুক্তিতে রদবদল করে ঠিক সময়ে বিচ্ছেদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন৷

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দুর্বল অবস্থানের প্রেক্ষাপটে চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কা আরো বেড়ে যাচ্ছে৷ ইইউ শেষ পর্যন্ত তাঁকে কোনো ছাড় দিলেও ব্রিটেনের সংসদ আদৌ সেই বোঝাপড়া মেনে নেবে কিনা, সেই অনিশ্চয়তা থেকে যাচ্ছে৷ ফলে তাঁর সঙ্গে সংলাপ চালিয়ে আদৌ কোনো ফল পাওয়ার আশা কমছে৷ প্রধানমন্ত্রীর দফতরও হাল ছেড়ে দিতে চলেছে বলে কিছু মহলে শোনা যাচ্ছে৷

পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২৭শে ফেব্রুয়ারি আবার সংসদের দ্বারস্থ হবেন৷ ব্রেক্সিট চুক্তিতে আয়ারল্যান্ডের সীমান্তে ব্যাকস্টপ ব্যবস্থার বিকল্প আনা সম্ভব হলে তা নিয়ে ভোটাভুটি হবার কথা৷ অন্যথায় সংসদ সদস্যরা চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিটের আশঙ্কায় গোটা প্রক্রিয়ার নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে তুলে নেবার চেষ্টা চালাবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷ সে ক্ষেত্রে ব্রেক্সিটের সময়সীমা পেছানো থেকে শুরু করে নতুন গণভোট বা আগাম নির্বাচনের মতো বিকল্প গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠতে পারে৷ কিন্তু ব্রিটেনের সংসদের পক্ষেও ইইউ-র সমর্থন আদায় করা সহজ হবে না বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে৷

চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট ঘটলে ব্রিটেনের অর্থনীতির ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা নিয়ে আরো অনেক মহল সোচ্চার হয়ে উঠছে৷ তাছাড়া বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির পথেও অনেক বাধাবিপত্তি উঠে আসছে৷

এসবি/এসিবি (এএফপি, রয়টার্স)