1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের অভিযোগ বাইডেনের

২৩ অক্টোবর ২০২০

ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে জো বাইডেনের শেষ বিতর্কসভায় উঠে এল বিবিধ প্রসঙ্গ। কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বললেন না।

https://p.dw.com/p/3kJYe
ছবি: Morry Gash/Reuters

কাজ হলো মিউট সুইচে। নির্বাচনের আগে শেষ বিতর্কে সংযত আচরণ করলেন ট্রাম্প-বাইডেন। তবে কেউ কাউকে ছেড়ে কথা বললেন না। চীন থেকে উত্তর কোরিয়া, করোনা ভাইরাস থেকে বর্ণবাদ-- বিতর্কে উঠে এল সমস্ত প্রসঙ্গই। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন ট্রাম্পকে তীব্র আক্রমণ করে বললেন, আর চার বছর ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকলে অ্যামেরিকা সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। অন্য দিকে ট্রাম্পের বক্তব্য, জো বাইডেনের ছেলে ইউক্রেন এবং চীনের সঙ্গে অবৈধ ভাবে ব্যবসা চালাচ্ছে।

বাইডেন চীন এবং ইউক্রেনের অবৈধ অর্থ রোজগার করেন। বৃহস্পতিবারের ফাইনাল বিতর্কে এ ভাবেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনকে আক্রমণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের বক্তব্য, জো বাইডেনের ছেলে হান্টারের ল্যাপটপের রেকর্ড তাঁর কাছে আছে। হান্টার ইউক্রেন এবং চীনের সঙ্গে এখনো অবৈধ ভাবে ব্যবসা করছে। বাইডেনও সেই অর্থের ভাগ পাচ্ছেন।

বাইডেন অবশ্য ট্রাম্পের অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। বরং তাঁর পাল্টা অভিযোগ, মুখে বড় বড় কথা বললেও চীনের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি ট্রাম্প। বাইডেনের অভিযোগ, বিশ্ব রাজনীতিতে চীন যে ভাবে চলছে, তা অনৈতিক। এর বিরুদ্ধে অ্যামেরিকার জোট তৈরি করে চীনের উপর চাপ তৈরি করা দরকার। কিন্তু বাস্তবে ট্রাম্প তা করছেন না। কেবল মুখেই বড় বড় কথা বলছেন। এখানেই শেষ নয়, বাইডেনের বক্তব্য, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করেও ট্রাম্প দুর্বল পররাষ্ট্রনীতির পরিচয় দিয়েছেন। কারণ, উত্তর কোরিয়া গণতন্ত্র মানে না। অ্যামেরিকা কখনোই তার সঙ্গে সদ্ভাব রাখতে পারে না।

ট্রাম্পের জবাব, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি না করলে পৃথিবী পরমাণু যুদ্ধ দেখতো। উত্তর কোরিয়া লাগাতার অ্যামেরিকার বিরুদ্ধে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রসঙ্গ তুলছিল। সেখান থেকে উত্তর কোরিয়াকে সম্পূর্ণ পরাস্ত করতে পেরেছেন ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট হিসেবে এই বিষয়টিকে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন। এ ছাড়াও যে ভাবে মধ্য প্রাচ্যের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করেছেন তিনি তাও প্রশংসাযোগ্য বলে মনে করেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প-বাইডেনের শেষ বিতর্কে স্বাভাবিক ভাবেই উঠে এসেছিল বর্ণবাদের প্রসঙ্গ। গত বিতর্কে এই বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্য শুনে অতি দক্ষিণপন্থী সংগঠনগুলি প্রেসিডেন্টকে সাধুবাদ জানিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবারের বিতর্কে ট্রাম্প কোনও বিতর্কের রাস্তাতেই যাননি। দাবি করেছেন, দীর্ঘ মার্কিন ইতিহাসে তিনি সব চেয়ে নিরপেক্ষা মানুষ। বর্ণবাদ যাতে প্রশ্রয় না পায়, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা তিনি করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁর বক্তব্য, লিঙ্কনকে বাদ দিলে তাঁর মতো বর্ণবাদের বিরুদ্ধে আর কেউ লড়াই করেননি। ট্রাম্পের বক্তব্য, 'ব্ল্যাক লাইফ ম্যাটার্স' বলে যাঁরা আন্দোলন করছেন, তাঁরা কেন আন্দোলন করছেন, তা বুঝতে পারছেন না তিনি। যদিও গণতন্ত্রে সকলেরই মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি।

ট্রাম্প এড়িয়ে যেতে চাইলেও বর্ণবাদ প্রসঙ্গে ট্রাম্পকে তীব্র আক্রমণ করেছেন বাইডেন। তাঁর বক্তব্য, ট্রাম্পের আমলে বর্ণবাদ ফের অ্যামেরিকায় মাথা তুলেছে। লিঙ্কনের সঙ্গে তুলনা করে ট্রাম্প মার্কিন ইতিহাসকে অপমান করেছেন। বাইডেনের বক্তব্য, ট্রাম্পের আমলে অ্যামেরিকায় প্রাতিষ্ঠানিক বর্ণবাদ তৈরি হয়েছে। বাইডেন এ দিন বলেছেন, আরো চার বছর ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা থাকলে অ্যামেরিকা এতটাই ডুবে যাবে যে তাকে আবার পুনর্পতিষ্ঠা করা প্রায় অসম্ভব কাজ হয়ে দাঁড়াবে। বর্ণবাদ প্রসঙ্গে অবশ্য ট্রাম্পও এ দিন বাইডেনকে আক্রমণ করেছেন। মেয়র থাকালীন বাইডেনের একটি আইনের প্রসঙ্গ তুলে ট্রাম্প বলেছেন, কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল বাইডেনের ওই আইন।

বর্ণবাদ, পররাষ্ট্রনীতির পাশাপাশি এ দিনের বিতর্কে জরুরি বিষয় ছিল স্বাস্থ্যব্যবস্থা। বাইডেন জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে তিনি সকলের জন্য সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থা করবেন। ট্রাম্পের বক্তব্য, তিনিও স্বাস্থ্যনীতি নিয়ে কাজ করবেন। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, করোনাকালে স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে মার্কিন স্বাস্থ্য অবস্থার বেহাল অবস্থা। ট্রাম্প করোনা মোকাবিলায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ। বস্তুত, করোনা নিয়ে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন ট্রাম্প। এ দিনের বিতর্কে ট্রাম্প কেবল বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন চলে আসবে। এ কথা অবশ্য বেশ কয়েক মাস ধরেই তিনি বলে চলেছেন। বাইডেন করোনাকে হাতিয়ার করে আক্রমণ করেছেন ট্রাম্পকে। বলেছেন, করোনা নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন ট্রাম্প।

এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)