1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার মানেই দারিদ্র্যহার কমে যাওয়া

১৮ ডিসেম্বর ২০১১

বিশ্বজুড়ে ইন্টারনেট যত ছড়াবে, ততই জানা যাবে সর্বত্র পিছিয়ে থাকা, দরিদ্র মানুষদের সমস্যা৷ ইন্টারনেটের এ উপযোগিতাকে ব্যবহার করে সম্ভব হবে গণতন্ত্রের বিকাশ ও মিলেনিয়াম লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দারিদ্র দূরীকরণও৷ কিন্তু কীভাবে?

https://p.dw.com/p/13V0f
দারিদ্র দূরীকরণে তথ্য প্রযুক্তি সেবা সাধারণের কাছে পৌঁছে দিতে তৈরি হয়েছে সস্তা ল্যাপটপছবি: AP

মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা ২০০০ শতক আসার পরে যে নতুন ধাঁচের চিন্তাভাবনায় দীক্ষিত হয়েছিল বিশ্ব, তার লক্ষ্য ছিল ২০১৫ সালের মধ্যে এই বিশ্বকে দারিদ্র্য মুক্ত করা৷ কাজটা কঠিন৷ লক্ষ্যমাত্রার ১১ বছর শেষ৷ বাকি রয়েছে হাতে আর মাত্র তিনটি বছর৷ এই তিন বছরে এ কাজ কী সম্পূর্ণতা পাবে? এতো গেল মাত্র একটা প্রশ্ন৷ এর বাইরে গণতন্ত্রের বিকাশ থেকে শুরু করে রয়ে গেছে এমন অনেককিছু, যার পূর্ণতা আনতে গেলে এই মুহূর্তে সবচেয়ে উপযোগী মাধ্যম ইন্টারনেটের কোনরকম বিকল্প নেই৷ দারিদ্র্য দূরীকরণে ইন্টারনেটের ভূমিকা অসম্ভব কাজে দিতে পারে৷

তথ্য সহকারে এই বিষয়টিকেই তুলে ধরতে শোনা গেল সম্প্রতি প্যারিসে৷ লা ওয়েব টোকনোলজি কনফারেন্স, যাকিনা ওয়েবদুনিয়ার প্রথমসারির সম্মানজনক কনফারেন্সগুলির একটি, সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই কনফারেন্সের জনক, অঁতরপ্রেনর লইক লা মুর বললেন কথাগুলি তাঁর ভাষণে৷ লা ওয়েব টোকনোলজি কনফারেন্সে এ বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ষাটটি দেশ থেকে যোগ দিয়েছিলেন সাড়ে তিন হাজার প্রথম সারির ডিজিটাল বিশেষজ্ঞ৷ আলোচ্য বিষয় ছিল, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে কীভাবে অর্থনৈতিক প্রগতির কাজে লাগানো যেতে পারে৷

এই কনফারেন্সের আয়োজকদলের মধ্যে অবশ্যই উল্লেখ করা দরকার সংবাদসংস্থা রয়টার্সের মানব উন্নয়ন দপ্তরের কথা৷ যাদের রয়েছে নিজস্ব একটি সংবাদসংস্থা, নাম অলটারনেট৷ টমসন রয়টার্স সংস্থার অধীনেই এই অলটারনেট কাজ করে থাকে৷ অলটারনেট আয়োজিত বক্তৃতাসভাতেই লইক লা মুর তাঁর গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্বগুলি উত্থাপন করেছেন৷

Manieren in der deutschen Arbeitswelt Flash-Galerie Viele Kollegen sind Ausländer
ছবি: Fotolia

লইক লা মুর তাঁর ভাষণে কিছু বিষয় অত্যন্ত প্রাঞ্জল করে বুঝিয়ে দিয়েছেন৷ গণতন্ত্রের বিকাশের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে কত ঘনিষ্ঠভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, তা প্রাঞ্জল করে বলেছেন তিনি৷ সঙ্গে ছিল দরকারি উদাহরণ৷ বিশেষ করে উন্নতিশীল দেশগুলিতে ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার অতি দ্রুত তথ্য সরবরাহ করতে পারবে সমাজ উন্নয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিকে৷ মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজি-র উল্লেখ করে মুর জানিয়েছেন, গোটা বিশ্বে এই মুহূর্তে সাত বিলিয়ন মানুষ রয়েছে৷ তাদের মধ্যে ৫.৪ বিলিয়নের হাতে মোবাইল ফোন পৌঁছে গেছে৷ এই ৫.৪ বিলিয়ন মানুষের মধ্যে ৪৮৩ মিলিয়ন মানুষ বসবাস করে অল্প উপার্জনের দেশগুলিতে৷ অর্থাৎ দরিদ্র দেশগুলিতে৷ ২.৬ বিলিয়ন মানুষের বসবাস মাঝারি উপার্জনের দেশগুলিতে৷ বাকিরা রয়েছে উন্নত বিশ্বে৷ মোবাইল ব্যবহারের বিশ্বজুড়ে পাওয়া সমীক্ষা থেকেই এই তথ্য সরবরাহ করছে অলটারনেট৷

মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট এখন আর কোন নতুন তথ্য নয়৷ যে কারণে মুর তাঁর ভাষণে জোর দিয়ে বলছেন, উন্নত প্রযুক্তির, মানে যে মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে, এমন প্রযুক্তির মোবাইলের ব্যবহার আরও সহজতর করা আশু প্রয়োজন৷ তাতে ইন্টারনেটের দিগ্বিজয় আরও সহজতর হবে৷

আরও কাজ রয়েছে এই মোবাইল আর ইন্টারনেটের৷ সম্মেলনের আরেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তা, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক পরামর্শদাতা রাউল জামবার্নো যেমন বুঝিয়ে বলেছেন মোবাইলের মাধ্যমে টেক্সট মেসেজ ব্যবহার করার উপযোগিতার কথা৷ তাঁর অভিজ্ঞতা বলছে, মোবাইল হাতে আসার পর আফ্রিকার সেইসব চাষীরা সহজেই তাঁদের পণ্য দূরদূরান্তে এমনতি ইউরোপের বাজারেও পৌঁছে দিতে পারছেন, আগে নিজেদের এলাকার বাইরে বেরোনোটাও যাদের কাছে প্রায় অসম্ভব ছিল৷ তথ্যপ্রযুক্তির চমৎকারী শক্তির এখানেই শেষ নয়৷ আরও আছে৷

আর এইসব কারণেই, উন্নয়নশীল দেশগুলির প্রয়োজন এই তথ্যপ্রযুক্তির আধুনিক যা কিছু সুবিধা, সেগুলিকে ব্যবহার করে গণতন্ত্রের বিন্যাসকে দৃঢ় করে তোলা সেইসঙ্গে দারিদ্র্য দূরীকরণে যতটা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নিজ নিজ দেশকে, সেই চেষ্টায় থাকা৷

জাতিসংঘের মিলেনিয়াম লক্ষ্যমাত্রা বা এমডিজি-র সাফল্যের দিকে তাকিয়ে সম্মেলনে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মানুষ নিজের অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে পারছে তথ্য প্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে৷ আন্তর্জাতিক মোবাইল সংস্থা ভোডাফোন যেমন ২০০৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে নিজেদের বাণিজ্যের প্রসার ঘটানোর পর লক্ষ্য করেছে, সেই দেশগুলিতে মানুষের জিডিপি বা গড় উৎপাদন হার ০.৫৯ শতাংশ বেড়ে গেছে৷ এই প্রবৃদ্ধিহার কিন্তু মোবাইল ফোনেরই অবদান৷

সুতরাং তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের আরও প্রসার মানেই দারিদ্র্যহার কমে যাওয়া৷

প্রতিবেদন: সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়

সম্পাদনা: জাহিদুল হক

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য