1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তবে কি আসাদই জয়ী?

২২ আগস্ট ২০১৭

যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে আসাদ-বিরোধী অবস্থান থেকে সরে আসছে৷ সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে এখন আরো আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে৷ সম্প্রতি তিনি বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে যারা সম্পর্ক ‘পুণঃস্থাপন' করতে চায়, তাদের ক্ষেত্রে শর্ত প্রযোজ্য হবে৷

https://p.dw.com/p/2idMK
Syrien Präsident Assad - Rede vor Diplomaten in Damaskus
ছবি: picture-alliance/AP Photo/Syrian Presidency

গেল রোববার দেশটির ডজনসংখ্যক কূটনীতিকের সামনে বক্তব্য রাখেন বাশার আল-আসাদ৷ তিনি মধ্যপ্রাচ্য ও পশ্চিমা কয়েকটি দেশের প্রতি পরিষ্কার বার্তা দেন এই বলে যে, তাঁর সরকার এমন কোনো দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে না, ‘যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেনি'৷

কয়েকটি আরব ও ইউরোপীয় দেশ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এরা জঙ্গিবাদের মদদদাতা৷

আসাদের এতটা দ্ব্যর্থহীন হবার কারণ আছে৷ একজন জিহাদি বার্সেলোনায় সাধারণ মানুষের ওপর গাড়ি তুলে দিয়ে ১৪ জনকে হত্যা ও শ'খানেককে আহত করার ঘটনার তিনদিন পর তিনি বক্তব্যটি দিলেন৷ এ ধরনের হামলার ঘটনা তাঁর জন্য আশীর্বাদ বলেই মনে করা হয়৷

তাতে যারা এতদিন তাঁর আইএসবিরোধী কর্মাকাণ্ডের বিরোধিতা করে আসছিলেন, হামলার শিকার হয়ে তারাই এখন তাঁকে সহযোগী হিসেবে দেখা শুরু করবে৷ আসাদ নিজেই বলছেন, ‘‘এই সত্যটাই পশ্চিমা রাজনীতিকদের ধ্যান-ধারণা পাল্টে দিয়েছে৷''

যুক্তরাষ্ট্রও সিরিয়ার বিষয়ে আপাতত  নতুন কৌশল নিয়েছে৷ কয়েক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, আসাদবিরোধীদের সহযোগিতায় সিআইএ-র একটি বিশেষ উদ্যোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে৷

অবশ্য সিআইএ-র এই বিশেষ প্রোগ্রাম তেমন কোনো সাফল্য না পাওয়ায় মূলত এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ তবে এ-ও ঠিক যে, রাশিয়ার সঙ্গেও সিরিয়া বিষয়ে আগের চেয়ে সহনশীল হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র৷

ফক্স নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির স্টেট সেক্রেটারি রেক্স টিলারসন বলেছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র এখনো চায় আসাদ সরকারের পতন হোক,  তবে সিরিয়ায় একটি স্থিতিশীল অবস্থা তৈরির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া উভয়েই একমত৷

 

অনেকের চোখে, জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় মধ্যপ্রাচ্য ঘিরে ওবামা প্রশাসনের রাজনৈতিক কৌশল বিতর্কিত৷ ট্রাম্প প্রশাসনও সেক্ষেত্রে আরো একধাপ এগিয়ে৷

ওয়াশিংটন ভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘ইন্সটিটিউট ফর স্টাডি অফ ওয়ার'-এর একটি গবেষণায় দেখাচ্ছে যে, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন গজিয়ে ওঠা ‘সখ্য' ঝুঁকিপূর্ণ৷ তাদের মতে, রুশ-ইরান কোয়ালিশনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই গভীরতর সখ্য কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছে না সুন্নি আরবীয়রা৷ আর ঝুঁকিটা সেখানেই৷

সব মিলিয়ে আসাদ যে আরো কিছুদিন ক্ষমতায় থাকছেন এটা ধরেই নেয়া যায়৷ জিহাদী মতবাদের বিরোধী হিসেবে তিনি তাঁর দৃঢ় অবস্থান সফলভাবেই পাকাপোক্ত করেছেন৷

তবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নব্য ‘জোট' এ অঞ্চলে সংকট ও জিহাদের শঙ্কা আরো বাড়াবে বলে সুন্নিরা মনে করে থাকতে পারেন৷ যদি তাই হয়, বিশ্লেষকদের ধারণা, এখনকার সংকট কেবল ভোরের আলো৷ প্রকৃত ভয়াবহতা এখনো বাকি৷

বাড়ছে আইএস-এর হত্যাযজ্ঞ

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি গবেষণা বলছে যে, ইরাক ও সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়লেও আইএস-এর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে৷ ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালে ইসলামিক স্টেটের নামে ১,৪০০টি হামলা হয়েছে এবং ৭,০০০ মানুষ মারা গেছেন, যা ২০১৫ সালের তুলনায় ২০ ভাগ বেশি৷ সবশেষ বার্সেলোনায় ভ্যান গাড়ি ও রাশিয়ায় ছুরি দিয়ে হামলার ঘটনাও আইএস ঘটিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে৷ ইরাক ও সিরিয়ার বাইরে আইএসের অনুসারীরা অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে জানাচ্ছে গবেষণাটি৷ ১,৪০০ হামলার মধ্যে বিভিন্ন দেশে তারা কমপক্ষে ৯৫০টি হামলা করেছে এবং ৩,০০০ মানুষ হত্যা করেছে৷ উদাহরণ হিসেবে, বাংলাদেশ, লিবিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ফিলিপিন্সের কথা উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণা প্রতিবেদনটিতে৷

জেডএ (কেরস্টেন ক্নিপ/রয়টার্স)

স্কিপ নেক্সট সেকশন এই বিষয়ে আরো তথ্য

এই বিষয়ে আরো তথ্য