1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

তামিলনাড়ুতে বাংলাদেশি নাগরিকদের খোঁজে পুলিশ

১৪ জুলাই ২০২১

তিনজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ভুয়া নথি নিয়ে বাংলাদেশিরা বসবাস করছেন বলে অভিযোগ।

https://p.dw.com/p/3wRwe
প্রতীকী চিত্র
প্রতীকী চিত্রছবি: DW/Prabhakar Mani

হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধ ভাবে কাজ করছেন এবং থাকছেন তামিলনাড়ুতে। সম্প্রতি এমনই দাবি করেছে তামিলনাড়ুর পুলিশ। পুলিশ সূত্র দ্য হিন্দু সংবাদপত্রকে জানিয়েছে, অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের খুঁজে বার করার জন্য বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকেই অভিযোগ উঠেছে বার বার। ভুয়া আধারকার্ড নিয়ে সেখানে বাস করছেন বাংলাদেশি নাগরিকেরা। তবে তামিলনাড়ু পুলিশ জানিয়েছে, তাদের হাতে নির্দিষ্ট প্রমাণ আছে।

দ্য হিন্দু সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, তামিলনাড়ুর তিরুপুর, চেঙ্গালপাত্তু, এরোদে, কুড্ডালুর এবং কাঞ্চিপুরম অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন। বিভিন্ন জায়গায় মূলত শ্রমিকের কাজ করছেন তারা।

কী ভাবে জানা গেল

পুলিশ সূত্রের দাবি, গত এক বছরে দেশে দুইবার লকডাউন হয়েছে। সে সময় বিভিন্ন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকেরা যে যার নিজের রাজ্যে ফিরে গেছেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছেন বলে দাবি করা বহু বাঙালি শ্রমিক নিজেদের রাজ্যে ফেরেননি। বিষয়টি নজরে আসায় তদন্ত শুরু করে পুলিশ। দেখা যায়, অনেকেই যে নথি নিয়ে বাস করছেন, তা ভুয়া। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা হিসেবে সেই পরিচয়পত্রে তাদের পরিচয় থাকলেও আসলে তারা অবৈধ পথে বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। পুলিশের দাবি, স্থল সীমান্ত পার করে পশ্চিমবঙ্গ অথবা আসাম হয়ে তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছেন। কিছু অসৎ এজেন্টের মাধ্যমে তারা নিজেদের ভুয়া আধার কার্ড তৈরি করে নেন। ওই নথি দেখিয়েই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তারা কাজে যোগ দেন।

দ্য হিন্দুকে তামিলনাড়ু পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, লকডাউনের সময় কাজ না থাকায় এদের অনেকেই মাদক পাচার, নারী পাচারের মতো অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সম্প্রতি এমন কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, জুনের শেষ সপ্তাহে তিরুপুর থেকে তিনজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে মাদকপাচারে যুক্ত থাকার অভিযোগে। তিনজনেই বাংলাদেশের নাগরিক। পুলিশ সূত্রের দাবি, কাগজ দেখতে চাইলে ওই ব্যক্তিরা আধার কার্ড দেখিয়ে দেন। ফলে প্রাথমিক ভাবে বোঝা যায় না, তারা কোথাকার নাগরিক। তবে আধার কার্ড খতিয়ে দেখলে বোঝা যায়, অবৈধভাবে সেই কার্ড তৈরি করা হয়েছে। ঠিকানা অনেকসময়ই ভুয়া হয়। এখনো পর্যন্ত যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে।

ভারতে টানা ১৮২ দিন বসবাস করলে আধার কার্ড তৈরি করা যায়। বিদেশি নাগরিকও তা তৈরি করতে পারেন। আইনে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। ফলে বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও বৈধ ভাবে তারা ভারতের আধারকার্ড ব্যবহার করছেন কি না, এই বিষয়টিও পুলিশকে মাথায় রাখতে হয়।

শ্রীলঙ্কার তামিল নাগরিকদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক হয়েছে তামিলনাড়ুতে। এক সময়ের এলটিটিই গোষ্ঠীও তৈরি হয়েছিল সেই বিতর্ককে কেন্দ্র করে। শ্রীলঙ্কা থেকে অবৈধ ভাবে তারা ভারতে এসে তামিলনাড়ুতে বসবাস করেন বলে অভিযোগ। সংস্কৃতি এবং ভাষা এক হওয়ায় তাদের সব সময় চিহ্নিত করা যায় না। সেই বিতর্কের মধ্যেই বাংলাদেশি নাগরিকদের বিষয়টি সামনে এনে বিতর্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছে তামিলনাড়ুর পুলিশ। এর আগে অন্ধ্রপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং উত্তরপ্রদেশেও অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ভোটে বিজেপি বরাবর অবৈধ অনুপ্রবেশের বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে। সিএএ আইন নিয়েও দেশ জুড়ে বিতর্ক চলছে। যএখানে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানের মতো দেশ থেকে হিন্দুরা এলে তাদের শরণার্থীর সম্মান দেওয়া হবে। কিন্তু মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তামিলনাড়ু পুলিশের সাম্প্রতিক বক্তব্য গোটা বিতর্কেই নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

এসজি/জিএইচ (দ্য হিন্দু)