1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দক্ষিণ সুদানের ‘সাইকেল ক্লিনিক’

২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

ছ'বছর আগে স্বাধীনতা; তারপর একটানা যুদ্ধ আর খরা: দক্ষিণ সুদানের পূর্ব ইকোয়েটোরিয়া প্রদেশের মানুষরা তবু কিছুটা চিকিৎসা পাচ্ছেন কয়েকজন মরমী সিস্টারের ‘সাইকেল ক্লিনিকের’ কল্যাণে৷

https://p.dw.com/p/2kKhx
ছবি: Reuters/S. Modola

গৃহযুদ্ধ পীড়িত দক্ষিণ সুদানের বহু মানুষের কাছে এঁরাই একমাত্র ‘ডাক্তার’: দুই নার্স বেটি ওলিয়া আর রোজিনা ইমোলং ও তাঁদের সাইকেলে চড়া ডাক্তারখানা ও ডিস্পেন্সারি৷ পূর্ব ইকোয়েটোরিয়া প্রদেশের গ্রামগুলিতে প্রতিদিন সাইকেলে চড়ে ঘোরেন এই দু'জন ‘সিস্টার’, এই প্রচণ্ড গরমে যা খুব সহজ কাজ নয়৷

ইটালির এভিএসআই ত্রাণ সংস্থার হয়ে কাজ করেন এরা দু'জনে৷ সংস্থাই তাদের সাইকেল আর ওষুধপত্র দেয়৷ দক্ষিণ সুদানের সরকারের পক্ষে এখানকার মানুষজনের জন্যে কিছু করা সম্ভব নয়৷ এখানে না আছে বিদ্যুৎ, না কলের জল, না বাঁধানো রাস্তাঘাট৷ চিকিৎসার একমাত্র সুযোগ হলো বিদেশি ত্রাণসংস্থাগুলি যেটুকু ব্যবস্থা করে৷

দক্ষিণ সুদানের অর্ধেক মানুষের জীবন কাটে দারিদ্র্য সীমার নীচে৷ এ যাবৎ তারা কোনোক্রমে কিছুটা চাষবাস করে জীবনধারণ করে এসেছেন৷ কিন্তু গত চার বছরের একটানা অনাবৃষ্টি সব কিছু বদলে দিয়েছে – বলেন সিস্টার রোজিনা৷

চিকিৎসা দেয় ‘সাইকেল ক্লিনিক’

রোজিনার বাড়ি কাছের একটি গ্রামে, পাহাড়ের অপরপারে৷ পরিস্থিতি কোনোকালে এতো খারাপ ছিল না, বলে তাঁর ধারণা৷ রোজিনা জানালেন, ‘‘পাহাড়ের ওপাশে আমাদের মানুষজন....চার বছর ধরে....তারা যা কষ্ট পাচ্ছে, তা বলা যায় না৷ বৃষ্টি নেই, খাবার নেই, কিছুই নেই৷ মানুষজন  জঙ্গল থেকে ফলমূল কুড়িয়ে দিন কাটাচ্ছে৷’’

দেশে যুদ্ধ, তা থেকেই দুর্ভিক্ষ, অনশন৷ ব্যবসায়ীরা প্রাণের ভয়ে এ এলাকায় আসেন না – এখানে যে খাবারদাবার বা অন্য কোনো ধরনের জিনিস পাওয়া যায় না, সেটা তারও একটা কারণ৷ আর যেটুকু বা আসে, তা কেনার সামর্থ্য এখানকার মানুষদের নেই৷

স্কুলে যাওয়া, পড়াশুনা করা তো একটা বিলাস৷ কনভেন্ট সিস্টার পাসকুইনা ইসোকে গ্রামের একমাত্র স্কুলটিকে বহু বছর ধরে বাঁচিয়ে রেখেছেন৷ শান্তি বলতে তিনি যেটুকু দেখেছেন, সেটা ছিল ২০১১ সালে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা পাওয়ার পরে স্বল্প কিছুদিন – কিন্তু তা বেশিদিন টেঁকেনি৷ দু'বছর পরেই আবার যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, যে যুদ্ধ আজ পর্যন্ত চলেছে৷ তা সত্ত্বেও সিস্টার পাসকুইনা স্কুল চালিয়ে যাবার চেষ্টা করে চলেছেন৷ সিস্টার পাসকুইনার মতে: ‘‘মানুষজন আশা হারিয়ে ফেলছে৷ আজ আর কেউ কাউকে বিশ্বাস করে না৷ লোকে মরিয়া হয়ে উঠেছে৷’’

সিস্টার রোজিনা আর সিস্টার বেটি প্রতিদিন তাদের রোঁদে বেরোন, মানুষজনকে সাহায্য করার জন্য৷ শিগগির দক্ষিণ সুদানের মানুষদের ভাগ্য ফিরবে বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন না৷ কিন্তু তাঁদের সাইকেল ক্লিনিক ছাড়া এই হারানো গ্রামগুলির হতভাগ্য মানুষদের শেষ আশার আলোটুকুও যে মুছে যাবে৷

ব্যার্টেলি/সাউরাস/এসি