1. কন্টেন্টে যান
  2. মূল মেন্যুতে যান
  3. আরো ডয়চে ভেলে সাইটে যান

দিল্লি দাঙ্গায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন অ্যামনেস্টির

২৮ আগস্ট ২০২০

দিল্লি দাঙ্গায় পুলিশের ভূমিকা নিরপেক্ষ ছিল না বলে জানিয়ে দিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। তারা দাঙ্গায় প্ররোচনা দিয়েছে বলে অভিযোগ।

https://p.dw.com/p/3hcTR
ছবি: DW/S. Ghosh

দিল্লি দাঙ্গায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এ বার প্রশ্ন তুলে দিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সম্প্রতি প্রকাশিত একটি রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, দিল্লি দাঙ্গায় পুলিশ মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল। দাঙ্গায় ইন্ধন জোগানোর অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে দিল্লি পুলিশের জবাবদিহি চেয়েছে সংস্থাটি। তবে পুলিশের তরফে এখনো কোনো উত্তর দেয়া হয়নি।

এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে উত্তর পূর্ব দিল্লির বিস্তীর্ণ এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা জারি থাকে। পাড়ার পর পাড়া আগুনে পুড়ে যায়। ৪০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। আহত হন শতাধিক মানুষ। দাঙ্গা বিধ্বস্তদের জন্য তৈরি করতে হয় বেশ কয়েকটি আশ্রয় শিবির। এখনও বেশ কিছু মানুষ গৃহহীন, আশ্রয়হীন।

অভিযোগ, এই দাঙ্গায় মদত দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় শাসক দলের কোনো কোনো নেতা। তাঁদের সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বক্তব্য স্ফূলিঙ্গ ছড়িয়েছিল। দিল্লির শাসক দলের এক নেতার ভূমিকাও পরবর্তী সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তবে বার বার প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে। এক আপ বিধায়কের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।

বস্তুত দাঙ্গার কয়েকদিন আগে থেকেই দিল্লি পুলিশের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ভাবে রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাসে ঢুকে পুলিশ নির্যাতন চালিয়েছিল, তা নিয়ে এখনও আলোচনা হয়। জেএনইউ ক্যাম্পাসের গন্ডগোলে পুলিশের ভূমিকাও প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নয়। তবে দিল্লি দাঙ্গায় বেশ কিছু ফুটেজে পুলিশকে সরাসরি দাঙ্গাকারীদের সাহায্য করতে দেখা গিয়েছে বলে অভিযোগ। খাজুরি খাস অঞ্চলে দেখা গিয়েছে পুলিশ দাঙ্গাকারীদের হাতে ইট তুলে দিচ্ছে। নিজেরাও দাঙ্গাকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়ে অন্যপক্ষকে আক্রমণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এখানেই শেষ নয়, পুলিশের বিরুদ্ধে রাজপথে এবং লকআপে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের। বস্তুত, রিপোর্টটিতে বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী এবং আক্রান্তের জবানবন্দি আছে। হিন্দু-মুসলিম নির্বিশেষে সকলের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সেখানে বার বার পুলিশি অত্যাচার এবং দাঙ্গায় ইন্ধন দেওয়ার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। এমনকী, শেল্টার ক্যাম্পে গিয়েও পুলিশ আক্রান্তদের বিরুদ্ধে নকল মামলা রুজু করেছে, এই অভিযোগ উঠেছে।

ডয়চে ভেলে এ প্রসঙ্গে দিল্লি পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু পুলিশ এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্টের আদৌ কোনও জবাব দেওয়া হবে কি না, তাও স্পষ্ট করে বলা হয়নি।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এ ধরনের রিপোর্ট দেশের প্রশাসনকে আয়নার সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। বিশ্বের সামনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে। তবে পুলিশ এর জবাব না দিলেও কিছু এসে যাবে না। ইদানীং এ ধরনের মানবাধিকার সংগঠনের রিপোর্টকে পুলিশ এবং প্রশাসন বিশেষ গুরুত্ব দেয় না বলেই তাঁদের অভিমত। তবে পুলিশ জবাব না দিলে মানবাধিকার সংগঠনগুলি যে আইনের সাহায্য নিতে পারে, সে কথাও জানিয়েছেন কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ।

এসজি/জিএইচ (বিবিসি)